শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৮ মে, ২০১৮, ০২:২০ রাত
আপডেট : ১৮ মে, ২০১৮, ০২:২০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তাহলে আর স্থানীয় সরকার নির্বাচন কী দরকার?

প্রভাষ আমিন : শঙ্কা ছিল, উত্তেজনা ছিল, পাল্টাপাল্টি কথার লড়াই ছিল; কিন্তু শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক, ২০১৩ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে যিনি বিএনপি প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনির কাছে ৬২ হাজার ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। বিএনপির এবারের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু গতবারের প্রার্থীর চেয়ে শক্তিশালী ছিলেন। কিন্তু তাও তিনি হেরে গেছেন প্রায় ৬৬ হাজার ভোটে। গত ৫ বছরে সরকার বা তালুকদার আব্দুল খালেক এমন কী করেছেন, যাতে ৬২ হাজারের পরাজয়ের উজান ঠেলে ৬৬ হাজারের জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করতে পারলেন? আবার উল্টো প্রশ্নও করা যায়, বিএনপিই বা গত ৫ বছরে এমন কী করেছে, যাতে জনগণ তাদের ভোট দেবে?

আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে সরকারি দলের নেতাদের মূল প্রচারণা ছিল, তিনি জিতলে উন্নয়ন হবে। তার মানে বিএনপি প্রার্থী জিতলে উন্নয়ন হবে না। এই প্রচারণায় লুকিয়ে ছিল, সরকারের একটা অন্যায়ের আকাঙ্খা। নির্বাচিত মেয়র তো নিজের পকেটের টাকা দিয়ে উন্নয়ন করবেন না। সরকারের দেওয়া বরাদ্দেই উন্নয়ন কাজ করতে হবে। সরকারি দলের নেতারা নির্বাচনের আগেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিরোধী দলের মেয়র পাস করলে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না। এটা এক ধরনের ব্ল্যাকমেইল। শুধু যে প্রচারণা চালিয়েই ক্ষান্ত ছিলেন, তা নয়। গত ৫ বছর ধরেই দেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশনে সরকার চোখে আঙ্গুল দিয়ে জনগণকে বুৃঝিয়ে দিয়েছে, কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থীকে ভোট দিয়ে লাভ নেই। ২০১৩ সালের ৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা জিতেছিলেন। তারপর তাদের কী হয়েছিল নিশ্চয়ই আপনারা ভুলে যাননি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এক খোঁচায় উল্টে দিয়েছে জনরায়। নির্বাচিত মেয়ররা উন্নয়ন করবেন কখন, তাদের সময় কেটেছে আদালতের বারান্দায়, নইলে কারাগারে। খুলনায় বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু হেরেছেন ভালো হয়েছে। বেচারা এখন একটু আরাম করে বিশ্রাম নিতে পারবেন। অতীত অভিজ্ঞতা বলে, জিতলেই তার বিরুদ্ধে হয় মামলা দেওয়া হতো, নইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশে গদি হারাতে হতো। ২০১৩ সালে নির্বাচিত মেয়রদের পরিণতি দেখার পর আমার বারবার মনে হয়েছে, তাহলে আর স্থানীয় সরকার নির্বাচন কী দরকার?

নির্বাচনের আগে তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছিলেন, ভোট কেটে মেয়র হওয়ার ইচ্ছা তার নেই। এমনিতে তালুকদার খালেক খুলনার খুব জনপ্রিয় নেতা। তৃণমূল থেকে উঠে এসে মন্ত্রিসভা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নির্বাচন করতে অনিচ্ছুক ছিলেন। এমপিপদ ছেড়ে তাকে মেয়র নির্বাচনে লড়তে হয়েছে। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেননি। সব মিলিয়ে যা পরিস্থিতি, তাতে তালুকদার খালেকই হয়তো জিততেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। নির্বাচনটি ভালো হয়েছে, এমনটি বলা যাবে না। নির্বাচনের আগে থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড়, এজেন্টদের হুমকি, কেন্দ্রে যেতে না দেওয়া, ভোটারদের ভয় দেখানো, জাল ভোট দেওয়া- সব অপকর্মই হয়েছে। আমার ধারণা সরকারি দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাসর ঘাটতি ছিল। ২০১৩ সালের তিক্ত অভিজ্ঞতা মনে করে তারা কোনো ঝুঁকি নিতে চাননি। তবুও একটা ভালো নির্বাচন করতে পারলে, গণতন্ত্রহীনতার যে অভিযোগ, তার একটা জবাব দিতে পারত। সে সুযোগটা সরকার হেলায় হারাল।

লেখক : হেড অব নিউজ, এটিএননিউজ

[email protected]

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়