মো. আল মামুন খান, ধামরাই: ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশ অমান্য করে ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করার অভিযোগ এসেছে।
ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের জালসা গ্রামে স্থাপিত এমবিএম স্টার ব্রিক ফিল্ডের মালিক মোঃ হানিফ এবং নূর হোসাইন জনৈকা সুলতানা রাজিয়াসহ এলাকার অনেকের তিন ফসলি জমি এবং শত বছরের পুরাতন বসত-বাড়ির অতি নিকটে স্থানীয় কৃষকদের বাঁধা এবং সরকারি আইন ও নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অশুভ ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে মা ব্রিকস নামে নতুন আরেকটি ইটভাটা নির্মাণ শুরু করে। পরবর্তীতে সুলতানা রাজিয়ার পুত্র এবং জালসা কৃষি জমি ও বসত বাড়ি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক জনাব হাবিবুল্লাহ মিজানের এক আবেদনের ভিত্তিতে পরিবেশ অধিদপ্তর মা ব্রিক্স এর অনুকূলে দেয়া তাদের পূর্বের অবস্থানগত ছাড়পত্র বাতিল করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।
কিন্তু নির্মাণাধীন এই ইটভাটার প্রভাবশালী মালিক সরকারি নির্দেশের তোয়াক্কা না করে প্রতিবন্ধীসহ অনেক গরীব মানুষের জমি জোর করে দখল করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখে। এই অবৈধ দখলদারির প্রতিবাদ করে গত ২৯ মে, ২০১৮ তারিখে মো. আব্দুল জব্বার নামের এক কৃষক অবৈধ দখলদার মোঃ হানিফ আলী গং দের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন যার নাম্বার ১২১৪ তারিখ ২০-০৪-২০১৮ এবং তদন্তকারি কর্মকর্তা এএসআই মাসুদ।
পরবর্তীতে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে ১৭ মে (বৃহস্পতিবার) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার উপমা ফারিসা স্বাক্ষরিত উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেয়া হয়। পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর কে সদস্য সচিব , অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ঢাকা কে সভাপতি করে বানানো ছয় (০৬) সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটিকে মা ব্রিকস এন্ড কোম্পানির ইটভাটার লাইসেন্সের আবেদন এবং জালসা কৃষি জমি ও বসত বাড়ি রক্ষা কমিটি কর্তৃক দাখিলকৃত অভিযোগ সরেজমিনে তদন্তপূর্বক মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়।
এ বিষয়ে মা ব্রিকস এন্ড কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মোঃ হানিফ আলীর মুঠোফোনে লাগাতার কল করেও তিনি কল সিরিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া যায় নাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জালসা কৃষি জমি ও বসত বাড়ি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক হাবিবুল্লাহ মিজান বলেন, 'জেলা প্রশাসক মহোদয় এবং পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে সাধুবাদ জানাই অনেক দেরি হলেও ওনারা মা ব্রিক্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য। কিন্তু একই সাথে বিনীতভাবে প্রশ্ন রাখতে চাই, পরিবেশ অধিদফতর মা ব্রিক্সের অবস্থানগত ছাড়পত্র বাতিলের পরেও কিভাবে প্রশাসনের নাকের ডগায় এবং অসহায় প্রতিবন্ধীর জমি দখল করে ইটভাটার নির্মান কাজ চলছে। তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে; কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার সুনির্দিষ্ট তারিখ দেয়া হয়নি। আশাকরি দ্রুততম সময়ে কমিটি সরজমিন গিয়ে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করবেন। তা না হলে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে'।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ হবার বিষয়টি স্বীকার করে ব্যাপারটি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান।
আপনার মতামত লিখুন :