শিরোনাম
◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা (ভিডিও) ◈ দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতে  ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী ◈ দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েল ফসফসরাস বোমা হামলা ◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মুজিবনগর দিবস বাঙালির শৃঙ্খলমুক্তির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৭ মে, ২০১৮, ০৪:৫৭ সকাল
আপডেট : ১৭ মে, ২০১৮, ০৪:৫৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আনিসুল হক বিভ্রান্তি

ঢাকা শহরে নিশ্চয়ই অনেক আনিসুল হক আছেন। কিন্তু আমি এবং আমরা চিনি মাত্র দুজনকে। দুজনই ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই প্রিয়। ধারণা করি তারাও আমাকে একটু আধটু পছন্দই করেন। একই শহরে, একই সময়ে, একই নামে দুজন মহাতারকার উপস্থিতি একটু ব্যতিক্রমই বটে। একজন আনিসুল হক কবি, লেখক, সাংবাদিক, নাট্যকার, চিত্রনাট্যকার- সৃষ্টিশীলতার সব দিকেই তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ। যেদিকেই কলম চালিয়েছেন, সোনা ফলেছে। আনিসুল হক যে কত জনপ্রিয়, সেটা টের পাওয়া যায় বইমেলায় গেলে। অটোগ্রাফশিকারীদের ভীড়ে তাকে দেখাই যায় না। আনিস ভাই যদি এতকিছু নাও হতেন, যদি এত জনপ্রিয় না হতেন, তাও তিনি আমার কাছে সমান প্রিয় থাকতেন।

কারণ আমি তাকে ভালোবাসি তারকা-মহাতারকা হওয়ার আগে থেকেই। ২৫ বছরের ভালোবাসার সম্পর্কটা ব্যক্তি আনিসুল হকের সাথেই। এই আনিসুল হক তারকা হওয়ার আগেই আরেক আনিসুল হক তারকা হয়ে বসে ছিলেন দূর আকাশে। যখন একমাত্র টেলিভিশন বিটিভি, যখন বিটিভিতে নাটক বা কোনো অনুষ্ঠান প্রচারিত হলে পরের একমাস বাজারে যাওয়া যেতো না; তখনই আনিসুল হক তারকাদের তারকা। তিনি সফল ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ীদের নেতা। বিজিএমইএর সভাপতি হয়েছেন, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি হয়েছেন, সার্ক চেম্বারের নেতৃত্ব দিয়েছেন। নেতৃত্বটা তার সহজাত। ব্যবসায়ীদের নেতা থেকে আনিসুল হক এখন জননেতা। ঢাকা উত্তরের নির্বাচিত মেয়র। আমি নিশ্চিত আগামীতে আনিসুল হক নামের সংখ্যা অনেক বাড়বে। সামনে এমন দুই তারকা থাকলে বাবা-মা সন্তানের নাম হিসেবে আনিসুল হকই বেশি পছন্দ করবেন।

আনিসুল হককে মনোনয়ন দিয়েই বড় এক চমক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুশীল সমাজ যেমন প্রার্থী চান, আনিসুল হক তেমনই প্রার্থী। তিনি যতটা ব্যবসায়ী, ততটাই সুশীল। এই আনিসুল হকের সাথেও আমার পরিচয় ২০ বছরের, সাংবাদিকতার সূত্রে। তবে তার আগে থেকেই তিনি তারকা। ব্যবসায়ী না হয়ে তিনি নায়কও হতে পারতেন। তসলিমা নাসরিনের ভাষায় আনিসুল হকের সৌন্দর্য্য ‘শরীর অবশ করা’।

এখন একই সময়ে দুই মহাতারকা আনিসুল হক নিয়ে প্রায়ই বিভ্রান্তি হয়। লেখক আনিসুল হক ভালো কলাম লিখলে ধন্যবাদ পান ব্যবসায়ী আনিসুল হক। আবার ব্যবসায়ী আনিসুল হকের কোনো সাফল্যে অভিনন্দন জুটে লেখক আনিসুল হকের। এছাড়া লেখক আনিসুল হককে ফোন করতে চেয়ে ব্যবসায়ী আনিসুল হককে ফোন করে ফেলার ঘটনাও ঘটে অহরহ। আমি তাই লেখক আনিসুল হকের নাম্বার সেভ করেছি মিটুন ভাই নামে (আনিসুল হকের ডাক নাম)। এই আনিসুল বিভ্রান্তি সর্বশেষ শিকার

আমার ছেলে প্রসূন। সে এক আনিসুল হককেই চেনে, তিনি লেখক আনিসুল হক। প্রসূন মিটুন ভাইয়ে লেখার ভক্ত, আনিসুল হক সম্পাদিত কিআ’র নিয়মিত পাঠক। তার ধারণা লেখক আনিসুল হকই নির্বাচন করছেন। নির্বাচনের আগে পোস্টার দেখে প্রসূন বললো, বাবা আনিস আঙ্কেলের চেহারা চেঞ্জ হয়ে গেছে নাকি? আমি বললাম, না তো। কেন? প্রসুন বললো, আনিস আঙ্কেল মেয়র ইলেকশন করছেন। কিন্তু পোস্টারে তো আরেকজনের ছবি। তখন তাকে বোঝাতে হলো আনিসুল হক বৃত্তান্ত।

এখন আনিসুল হক ঢাকা উত্তরের মেয়র। তার কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। নির্বাচনের আগে তিনি সম্ভব-অসম্ভব অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ঢাকাকে সিঙ্গাপুরে বদলে দেয়া সম্ভব বলে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আমরা জানি একজন মেয়রের ক্ষমতার অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। আন্তরিকতা থাকলেও অনেক প্রতিশ্রুতি হয়তো তার পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। আমি অত বেশি চাই না। আরেকটু সবুজ, আরেকটু পরিচ্ছন্ন, আরেকটু গোছানো ঢাকা পেলেই আমি খুশি। তবে আমার কেন জানি মনে হয়, আনিসুল হক হয়তো আউট অব দ্যা বক্স চিন্তা করে নিজের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে চমকে দেবেন নগরবাসীকে, যেমন আনিসুল হককে মনোনয়ন দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

কাল রাতে মেয়র আনিসুল হকের বাসায় দাওয়াত ছিল সাংবাদিকদের। অন্য অনেকের সাথে লেখক আনিসুল হকও মেয়র আনিসুল হককে অভিনন্দন জানাতে এসেছিলেন। আপনাদের জন্য একটা কুইজ। বলুন তো কোন আনিসুল হকের বয়স কত? একটা ক্লু দেই, ছবি দেখে আন্দাজ করলে বিভ্রান্ত হবেন। এই দুই আনিসুল হক দেখি বিভ্রান্তি থেকে কিছুতেই আমাদের মুক্তি দেবেন না। বয়স নিয়েও বিভ্রান্তি!

*অনেকে আরো একজন আনিসুল হকের কথা বলছেন, এডভোকেট আনিসুল হক। তিনিও আমার খুব প্রিয়। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পুরস্কার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আইনমন্ত্রীর। সত্যি কথা বলতে কি, লেখাটি লেখার সময় এডভোকেট আনিসুল হকের কথা আমার মাথায় ছিল না। তিনিও খুব কৃতি মানুষ। বরং আলোচিত দুই আনিসুল হকের চেয়ে পদ-পদবী, অর্জনে এগিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে বাকি দুজনের মত তিনি মহাতারকা নন। আমি গল্প করেছি তারকাদের নিয়ে। তারকামূল্য বিবেচনায় আইনমন্ত্রী বাদ পড়েছেন।

পরিচিতি: হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ/ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়