ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী পারভীন তালুকদার মায়া’র কর্মীসভায় বিরিয়ানি খেয়ে শতাধিক লোক অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে ৭০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে কর্মী সমাবেশে পচা ও বাসি খাবার দেওয়ায় প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে সমাবেশ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
মঙ্গলবার ঝিনাইদহ-৩ আসনের (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর উপজেলা) আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী পারভীন তালুকদার মায়া মহেশপুরের হাইস্কুল মাঠে এ কর্মীসভা ও র্যালীর আয়োজন করেন।
কর্মীসভায় মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কয়েক শতাধিক কর্মী যোগদান করেন। সভা শেষে তাদের বিরিয়ানির প্যাকেট দেওয়া হয়। বিরিয়ানি খাওয়ার পর রাতে বাড়িতে যেতে বিষক্রিয়া শুরু হয়।
তাদের মধ্যে প্রায় শ’খানেক লোক বমি ও পায়খানা করতে শুরু করেন। পরে অসুস্থদের মধ্যে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪৫ জন, কোটচাঁদপুরে ১৩ জন ও জীবননগরে ১০ জনকে ভর্তি করা হয়।
মহেশপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রামচন্দ্রপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, সভা শেষে এক প্যাকেট বিরিয়ানি পান তিনি। বাড়ি ফিরে স্ত্রী ও ছেলেসহ খান। রাত ১১ টার দিকে ৩ জনেরই বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। পরে তাদেরকে মহেশপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফতেপুর গ্রামের একরামুল খান জানান, বিরিয়ানি খাওয়ার পর ভোররাতে পেটে ব্যাথা, বমি ও পায়খানা শুরু হয়। তাকে সকালে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আফসার আলী বলেন, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৪৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসায় তাদেরকে সারিয়ে তোলা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পারভীন তালুকদার মায়া’র সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে কর্মী সমাবেশে পচা ও বাসি খাবার দেওয়ায় প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
বুধবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা যুব লীগের আহ্বায়ক কাজী আতিয়ার রহমান, স্বরূপপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হক মাস্টার, যুবলীগ নেতা আজিজুল হক আজা, জিয়াউর রহমান, ইয়াকুব আলী, কৃষক লীগ নেতা মনিরুল ইসলাম, আমিনুর রহমান।
এ সময় বক্তারা বলেন, ২০০০ সালে পারভীন তালুকদার মায়া মহেশপুর-কোটচাঁদপুর এলাকায় এসে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। জামায়াত বিএনপির সাথে আতাত করে তৎকালীন বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম মাস্টারকে নির্বাচিত হওয়ার জন্য সহযোগিতা করে। এরপর আর তার কোন খবর পাওয়া যায় নি। সম্প্রতি তিনি আবার বসন্তের কোকিলের ন্যায় এসে এলাকার মানুষের মাঝে নিজের প্রার্থীতা জাহির করে বেড়াচ্ছেন।
বর্তমান সংসদ সদস্যে নবী নেওয়াজ যখন তৃণমুল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে দলকে সুসংগঠিত করছেন তখন পারভীন তালুকদার মায়া এমপির উন্নয়নমুলক কর্মকাণ্ডে ঈর্ষান্বিত হয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবাদ সভা শেষে হাসপাতালে অসুস্থ রোগিদের মাঝে খাবার পানি, স্যালাইন, কলা, পাউরুটি ও চিড়া বিতরণ করেন সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ এমপির প্রতিনিধিরা।
আপনার মতামত লিখুন :