আশরাফ চৌধুরী রাজু,সিলেট: সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার এলাকার করনসী রোডের একটি বাসা থেকে আটক ১১ নারী পুরুষকে পতিতাবৃত্তিতে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাসার তত্ত্বাবধায়ক একই এলাকার বাসিন্দা নুরপুর গ্রামের মৃত আরিফ উল্লাহর ছেলে হাজি মো. কাওছার আলী। প্রবাসীর জায়গা আত্মসাত করতে প্রতিপক্ষের ইন্ধনে পুলিশ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদেরকে ফাঁসিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বুধবার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কাওছার আলী।লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৫ মে দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে করনসী রোডের তার ব্যবস্থাপনাধীন লন্ডন প্রবাসী আত্মীয় হাজি আব্দুর রশিদের ভাড়া বাসা থেকে পুলিশ ৭ জন মহিলা ও ৪ জন পুরষকে আটক করে। যারা পরস্পরের আত্মীয়। আফিয়া নামের এক মহিলাকে মারধরও করা হয়। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাও নেন।
পরে তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার ও পতিতাবৃত্তির অভিযোগ এনে ওসমানীনগর থানায় মামলা করেন থানার আলোচিত এসআই চাঁন মিয়া। মামলায় তাকেও (কাওছার) আসামী করা হয়।মামলা নং-৩(৫)১৮)। বাদি এসআই চান মিয়া এজাহারে মিথ্যা, বানোয়াট ও যা ইচ্ছা তাই উল্লেখ করে মানসম্মান ক্ষুন্ন করেছেন। কাওছার দাবি করেন, উক্ত ভাড়াটিয়ারা নিম্ম আয়ের মানুষ। দিনমজুরি ও ছোটখাটো চাকরি করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে।
২০১২ সাল থেকে তারা বসবাস করে আসছে।কাওছার বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, করনসী রোডে তার মামা হাজি আব্দুর রশিদের প্রায় ৮৫ শতক জায়গা তিনি দেখাশুনা করে আসছেন। ওই জায়গার একটি অংশে পুরাতন ভবন রয়েছে। তাতে তিনটি পরিবারকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়েছে। অথচ পুলিশ বলছে ৩০ হাজার টাকা তারা ভাড়া দেয়।ভাড়াটিয়া ও নিজেকে অসামাজিক কাজে জড়িত নয় দাবি করে কাওছার জানান, ওই ভবনসহ মামার সম্পতি এক সময় তার আত্মীয় করনসী রোড গোয়ালাবাজারের মৃত রফিক আহমদের ছেলে স্থানীয় এশিয়া টেইলারিং এর মালিক হাবিবুর রহমানের দখলে ছিল।
২০০৩ সালে তাদের দখল থেকে তা উদ্ধার করেন তিনি। এরপর থেকে তিনি ও মামাতো ভাই লন্ডন প্রবাসী নজমুল করিমের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন হাবিব। সায়েস্তা করতে হাবিব তিনটি মামলা করেন। ওই মামলাগুলো থেকে তিনি খালাস পান। এছাড়া হাবিবের ভাই এরশাদুর রহমান তার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়ে আর ফেরত দেয়নি।
এ ব্যপারে জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলা করলে ওই মামলায় (নং-১৯৪৮/১৭) গত ১০ এপ্রিল আদালত তাকে টাকা ফেরত প্রদান করেত রায় দেন এবং ৯ মাসের সাজা প্রদান করেন। মামলায় ওয়ারেন্ট হলেও পুলিশ সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে গ্রেফতার করছে না। এসব কারণে হাবিব ও তার লোকজন ক্ষুব্দ হয়ে থানার এসআই চান মিয়াকে হাত করে ৫ মে রাতে ভাড়া দেওয়া বাসায় অভিযান করে তাদের আটক ও পতিতবিৃত্তির নাটক সাজায় বলে দাবি করেন কাওছার।
এসআই চান মিয়া এর আগেও এমন কাজ করেছেন দাবি করে কাওছার বলেন, দয়ামীরের সাতহালিয়াপাড়ার লন্ডন প্রবাসী বৃদ্ধা গুল নাহার বিবির বাড়িতে ২৯ মার্চ কথিত আসামীর সন্ধ্যানের নামে পরিবারের সদস্যদের হয়রানী করেন চান মিয়া। ওসি শহিদ উল্লাহর কাছে প্রতিকার চাইলে পুলিশ ওই মহিলার কাছে ৫ লাখ টাকা চাদা দাবি করে। হয়রানী ও চাদাবাজির অভিযোগে গুলনাহার বিবি ৭ মে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওসি শহিদ উল্লাহ, এসআই চান মিয়াসহ ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
প্রবাসীর সম্পত্তি দখল করতে পুলিশের সহায়তায় হাবিবুর রহমান যে নির্লজ্জ ঘটনার জন্ম দিয়েছেন তার উচ্চতর তদন্ত দাবি করে মিথ্যা মামলা ও অপবাদ থেকে মুক্তি এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন কাওছার। সংবাদ সম্মেলনে আত্মীয় আনসার আলী ও খসরু ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :