মাহবুবুল ইসলাম : প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোটা বাতিল হবে, এটাই তো শেষ কথা এবং এটাই বাস্তবায়ন হবে। তবে একটু সময় দিতে হবে এবং অপেক্ষা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের বুঝা উচিত এত বড় কাজে সময় দিতে হয়। কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনের আন্দোলন নিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী আমাদের অর্থনীতিকে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তারা ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে যারা কোটার পক্ষের লোক, তারাও তো ইতিপুর্বে কোটা বাতিলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে মানব বন্ধন করেছে এবং বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। সবাইকে বিবেচনায় রেখে একটা কার্য সম্পাদনা করতে গেলে তো একটু সময় লাগতেই পারে। একটা দেশ পরিচালনায় অনেক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া থাকে। অনেক প্রক্রিয়াকরণের ব্যাপার থাকে। এই সব দিকই তো বিবেচনা করতে হয়। সেই বাহাত্তর থেকে যে কোটা পদ্ধতি চলে এসেছে, শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে সেই চলমান কোটা বাতিল করার মত একটি পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী নিবেন। সুতরাং শিক্ষার্থীদের বুঝা উচিত, এত বড় একটি কাজে একটু সময় দিতে হয়। একেবারে অধৈর্য্য হলে তো চলবে না। সংসদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে প্রজ্ঞাপন জারি তো শুধু সময়ের ব্যপার মাত্র। সংসদে বক্তব্য দেওয়ার পর তো প্রধানমন্ত্রী কখনই অন্যটা করবেন না। তবে তাকে একটু সময় দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা, আল্টিমেটামে মাথা নত করিনা” প্রধানমন্ত্রী মূলত এই কথাটা শিক্ষার্থীদের সাথে অভিমান করে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ভালোবেসেই কথাটি বলেছেন। বিশ্বের সামনে উনি একজন প্রভাবশালি রাজনীতিক এবং উনি বাঙালি জাতির প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। সুতরাং উনি তো উনার জায়গা থেকে অভিমান করে এমন কথা বলতেই পারেন। শিক্ষার্থিরা উনার আশ্বাসের পরেও আবার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে, এতেই তিনি শিক্ষার্থীদের উপর অভিমান করেছেন। একটা সময় শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতিতে গোলাগুলি চলতো। শিক্ষাঙ্গনে গোলাগুলি ছিল নিয়মিত ব্যাপার। প্রতিষ্ঠানে সেশনজট ছিল। সেই ছিয়ানব্বইয়ের সময়েই তিনি এসব বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাম্পাসকে উপযুক্ত করে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। অথচ এত বছর পরে এসে যদি শিক্ষার্থীরা তার আশ্বাসের প্রতি আস্থা না রাখতে পারে, তবে তিনি তো অভিমান করতেই পারেন। শিক্ষার্থীরা শাহবাগ থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে ভালো করেছে। অবরোধের কারণে ঢাকা শহরে প্রচ- যানজটের ভোগান্তি তৈরি হয়, শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে উঠে এসে খুবই ভালো কাজ করেছে। যেহেতু শিক্ষার্থিরা অবরোধ তুলে নিয়ে শাহবাগ ছেড়ে দিয়েছে। প্রধনামন্ত্রীও তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আন্দোলনে সময় দিয়ে লেখাপড়ার ক্ষতি করার দরকার নেই। সুতরাং ছাত্রদের উচিত হবে, প্রধানমন্ত্রীর কথা মাথায় রেখে ধর্মঘটও তুলে নেওয়া এবং কøাশ পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা প্রত্যাহার করে পড়াশুনায় মন দেওয়া। কোটা সংস্কার মানে তো শুধু কোটাই নয়। কোটা সংস্কার মানে হচ্ছে “আমরা চাকরি চাই”। সেই ক্ষেত্রটাই প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করতে চাচ্ছেন। তবে তার জন্য তো একটু সময় দেওয়া দরকার।
আপনার মতামত লিখুন :