শিরোনাম
◈ গাজীপুরে কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে চীনা নাগরিকের মৃত্যু ◈ প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব ও গাম্বিয়া সফর বাতিল ◈ এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫.৭%: আইএমএফ ◈ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ৪ পুলিশ সদস্যসহ আহত ২০ ◈ মার্চ মাসে সারাদেশে ৬২৪ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৫০, আহত ৬৮৪  ◈ ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে: হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ◈ অস্ত্রসহ কেএনএফের আরও ৯ সদস্য আটক ◈ পাকিস্তানের মুশতাক আহমেদ বাংলাদেশের নতুন স্পিন কোচ ◈ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কারিকুলাম যুগোপযোগী করার তাগিদ রাষ্ট্রপতির ◈ সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ১৫ মে, ২০১৮, ০৬:৫১ সকাল
আপডেট : ১৫ মে, ২০১৮, ০৬:৫১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাতের সব তারাই আছে দিনের আলোর গভীরে

কাকন রেজা : স্যাটেলাইট নিয়া নানা কথা হচ্ছে। উল্লাসের সাথে বিরূপতাও আছে। প্রশ্ন উঠছে বিনিয়োগ ও প্রাপ্তি নিয়ে। সম্ভবত অপ্রাপ্তির ফল মেলানোর সঠিক সময় এটা নয়। আবেগটা কাটুক, তারপর না হয় এ নিয়ে কথা বলা যাবে। তবে একটা প্রশ্নের উপর আপত্তির নোট দিয়ে রাখছি প্রাথমিকভাবে। অনেকে বলছেন, ফ্রান্স বানাল, অ্যামেরিকা উড়াল, এখানে অর্থায়ন ছাড়া প্রযুক্তিতে আমাদের অংশগ্রহণ কোথায়। এটা যদি আমাদের সক্ষমতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ হয়, সেখানেই আমার আপত্তি। এ ধরণের কাজের মূলত তিনটি অংশ থাকে। প্রথমত অর্থায়ন, যা রাম-শ্যাম, যদু-মধু সবাই করতে পারে। অনেকে দেশেই, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ব্যবসায়িক কারণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও স্যাটেলাইট রয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠানের নামও আমরা জানি না।

অর্থায়নের পর হলো পরিকল্পনা, এটা রাম-শ্যাম দিয়ে সম্ভব নয়। তৃতীয়টা বাস্তবায়ন, এখানেও যদু-মধুর কোনো কাজ নেই। এ দুটির জন্য প্রয়োজন এক্সপার্টের। এই এক্সপার্টের ব্যাপারেই আমাদের অংশগ্রহণ তথা সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। সে জবাবটাই দিচ্ছি। ২০১৭ সালের ৪ জুন ‘ডেইলি স্টারে’র একটি শিরোনাম দিয়ে শুরু করছি আলাপটা। `BangladdeshÕs first nano-satellite Brac Onnesha launched into space’, এমন একটি শুভ সংবাদ দিয়েই শুরু হয়েছিল সেদিনের ভোরটি। সংবাদের প্রথমটি উদ্ধৃত করার লোভ সামলাতে পারছি না, যারা বলেন আমাদের সক্ষমতা নেই তাদের জন্য। ডেইলি স্টার বলল, `the first nano-satellite made by a Bangladeshi university’, খেয়াল করলে দেখবেন, কত গর্বের সাথে বলা, বাংলাদেশি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি। এখন প্রশ্ন করি সক্ষমতা নেই কীভাবে? জবাব কী আছে?

বাংলাদেশ একটি ন্যানো স্যাটেলাইট গতবছরই উড়িয়েছে এবং সেটি পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। বলতে পারেন, বিষয়টি অনেকের চোখে পড়েনি। না পড়ারই কথা। একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের প্রোপাগান্ডার এত উইং থাকার কথা নয়। আর প্রচারণার খুব একটা দরকার ছিল কী? প্রয়োজনীয় কাজের মূলত খুব বেশি প্রচারণারও প্রয়োজন হয় না। সেসব কথা থাক, আমাদের সক্ষমতার প্রশ্ন যারা করেন তাদের সবিনয়ে জানাতে চাই, আমরাও সক্ষম। সক্ষম প্রযুক্তিগতভাবে সময়ের সাথে তাল মেলাতে। ছয়জন শিক্ষার্থীর একটি দল, তাও আবার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের, ন্যানো হলেও একটি স্যাটেলাইট বানালেন সাথে সেটা উড়ালেন এবং এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করছেন। এটাকে ছোট করে দেখার যুক্তি মূলত কুযুক্তি। বলতে পারেন আমাদের উৎক্ষেপন মঞ্চ নেই বলেই কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ এর মাধ্যমে ‘অন্বেষা’ নামের ন্যানো-স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করা হয়েছে। ‘বঙ্গবন্ধু-১’ স্যাটেলাইট’টাও উড়ানো হয়েছে একই জায়গা থেকে, একই রকেটের মাধ্যমে।

প্রশ্ন করতে পারেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় তাহলে ন্যানো-স্যাটেলাইট বানাল কেন, বড় কেন বানাল না? বালকসুলভ এমন প্রশ্নের জবাবে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কেউ কথা রাখেনি’র বাবা’র কথা বলা যায়। রায় বাড়ির রাস উৎসব দেখে বাবা বলেছিলেন, ‘দেখিস একদিন আমরাও’। তেমনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছয় শিক্ষার্থী হয়তো অর্থায়নের অভাবে ন্যানো’টা বানিয়ে বলেছিলেন, ‘দেখিস একদিন আমরাও’। কিন্তু তারা সেই ‘একদিনে’র সুযোগটা এখনো পায়নি। অনেকে বলতে পারেন, তবে কেন ‘বঙ্গবন্ধু-১’ প্রকল্পে তাদের নেওয়া হলো না। সব প্রশ্নেরই উত্তর রয়েছে সময়ের গর্ভে। যেমন, ‘রাতের সব তারাই আছে দিনের আলোর গভীরে’।
লেখক : কলামিস্ট ও সাংবাদিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়