তপু সরকার হারুন, শেরপুর: সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠনের দাবিতে ১৩ মে রবিবার দুপুরে শেরপুরে অবস্থান কর্মসূচি ও উন্মুক্ত সাংবাদিক সম্মেলন হয়েছে।
শহরের চকবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ শেরপুরজেলা কমিটি ও হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স ফোরাম (এইচআরডি) যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
এ কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, শেরপুর ডিস্ট্রিক্ট ডিবেট ফেডারেশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বর্মন ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশিন, পিলাচ, নারী রক্তদান সমাজ কল্যাণ সংস্থা, কমিউনিস্ট পার্টি সহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এতে অংশগ্রহণ করেন।
এসময় জনউদ্যোগ আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন সমাজকর্মী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, কবি-সাংবাদিক সভাপতি তালাত মাহমুদ, জেলা আ. লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামীম হোসেন, জেলা মহিলা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদিকা আঞ্জুমান আরা যুথী, সাংগঠনিক সম্পাদিকা আইরীন পারভীন, সদর কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি সোলায়মান আহমেদ, আদিবাসী নেতা প্রধান শিক্ষক হিরণ চন্দ্র বর্মন, সুমন্ত বর্মন, পঞ্চমী দেব রুমা, মিঠুন কোচ, লক্ষ্মণ চন্দ্র বর্মন প্রমুখ।
এসময় সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি সমাজকর্মী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, জাতিবৈচিত্রে বহুত্ববাদী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে।
এজন্য দেশের সকল নাগরিকের মাঝে আদিবাসী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে।
দেশের উন্নয়ন ধারায় সামগ্রিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশেষ নজর দিতে হবে। আদিবাসী মানুষদের অস্তিত্ব টিকে থাকলে মানব সভ্যতা আরো সমৃদ্ধ হবে।
আদিবাসী নেতা সুমন্ত বর্মন বলেন, আদিবাসীদেরকে আজ নানাভাবে ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। জায়গা-জমি, ঘরবাড়ি দখল করে নি:স্ব করা হচ্ছে। প্রতিনিয়িত ভয়ভীতি, হুমকি, উচ্ছেদ, হত্যা, ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনা বেড়ে চলেছে। বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি আদিবাসীদের লড়াই-সংগ্রামে টিকে থাকার মনোবল ভেঙে দিচ্ছে।
এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশিন গঠন আজ সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জন উদ্যোগ শেরপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে নিম্ন থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে মধ্যম আয়ের দেশে প্রবেশ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
ইতোমধ্যে মহাকাশে স্যাটেলাইট উড়িয়ে আমরা এলিট দেশের তালিকায় যুক্ত হয়েছি। এখন আমাদের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠির প্রতি আরো নজর দিতে হবে। তাই আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের বিষয়ে সরকারকে নজর দিতে হবে।
আদিবাসীদের বাদ রেখে কখনও একটি দেশের সুষম উন্নয়ন সম্ভব নয়। পরে উপস্থিত বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে অবহিত করে এক উন্মুক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জনউদ্যোগ জেলা কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও এইচআরডি নেতৃবৃন্দ এতে বক্তব্য রাখেন।
আপনার মতামত লিখুন :