শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ১৩ মে, ২০১৮, ১২:৩৭ দুপুর
আপডেট : ১৩ মে, ২০১৮, ১২:৩৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মায়ের ছুটি কবে?

নিউজ ডেস্ক: সন্তানের জীবনে মায়ের স্থান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মা এমন একজন মানুষ যিনি নিজের সব স্বার্থ ত্যাগ করে সন্তানের জীবনকে সুন্দর করার সাধনায় আমৃত্যু ব্যাপৃত থাকেন। যদিও বছরের সব কটি দিনই মায়ের প্রতি ভালোবাসায় পরিপূর্ণ থাকার দাবি রাখে, তবু বিশেষ একটি দিনে মায়ের কথা বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য মা দিবসের প্রচলন। মা দিবসে আমাদের বিশেষ আয়োজনে বিশ্বের সকল মায়ের প্রতি নিবেদন করি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। সকল মা ও সন্তানের জীবনে সার্থক হোক মা দিবস।

দৃশ্যপট-১

কর্মজীবী মা; দুই সন্তানের জননী। স্বামী ব্যবসায়ী। তার সকালটা শুরু হয় কাকডাকা ভোরে। প্রথমে সবার জন্য নাশতা তৈরি করেন। টেবিলে নাশতা সাজাতে সাজাতেই সন্তানদের, স্বামীর এবং নিজের টিফিন বাক্সটাও ভরে নেন। তার পর দ্রুত হাতে শিশুদের স্কুলের ড্রেস পরিয়ে দেন। এটা-সেটা এগিয়ে দেন স্বামীকেও। পাশাপাশি নিজেকেও তৈরি হতে হয় অফিসের জন্য। আজ যে একটা মিটিংয়েও থাকতে হবে। তাই বলে তো বেরিয়ে গেলেই চলবে না। শিশুরা তো দুপুরেই স্কুল থেকে ফিরে এসে খাবে। কে কী খাবে, কখন গৃহশিক্ষক আসবে, তাকে কী নাশতা দিতে হবে, বেরিয়ে যেতে যেতেও গৃহপরিচারিকাকে বুঝিয়ে দেন সারাদিনের কাজ। দিনশেষে অফিস থেকে ফিরেও একই ভূমিকায় দাঁড়াতে হয় তাকে।

দৃশ্যপট-২

যৌথ পরিবারের বড় বউ। স্বামী, সন্তান, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-ননদ নিয়ে সংসার। সংসারের সব দায়িত্বই যেন তার কাঁধে। বাড়ির কে কী খাবে, কার কী দরকার সবটাই মেটানোর দায় যেন তারই। ঘুম ভাঙার পর থেকে শুরু করে গভীর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তার যেন ফুরসত নেই। রান্না করা, সন্তানদের স্কুলে আনা-নেওয়া করা, তাদের পড়াশোনা দেখভাল করা, লেখাপড়ার পাশাপাশি তাদের সৃজনশীল করে তোলার জন্য ছুটির দিনে নিয়ে ছুটতে হয় নাচ, গান অথবা আঁকার স্কুলে। অসুস্থ হলে রাত জেগে সেবা করা, ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বও তার কাঁধেই বর্তায়। কারণ গৃহকর্তার বক্তব্য, তুমি তো আর চাকরি করো না। সারাদিন বাসায়ই বসে থাকো। তুমিই একটু ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও!

দৃশ্যপট-৩

তিন সন্তানের জননী। স্বামী সরকারি চাকুরে ছিলেন। অবসর নেওয়ার বছর দুয়েকের মধ্যেই চলে যান পরপারে। বড় ছেলে আর বড় মেয়ের ততদিনে বিয়ে হয়ে গেছে। বিপদে পড়ে গেলেন ছোট মেয়েটাকে নিয়ে। সবাই নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। ছোট বোনের বিয়ের কথা ভাবার সময় নেই তাদের। মাকেই সব দায়িত্ব নিতে হয়। বড় ছেলে মেয়েকে বারবার বলে, ছেলে দেখে ছোট মেয়ের বিয়ে দিলেন। মেয়ের বিয়ের পর ভাবলেন এবার বুঝি সব দায়িত্ব শেষ। এবার একটু হাত-পা ছড়িয়ে বসা যাক! তখনই বড় মেয়ের সন্তানের জন্ম হলো। মায়ের ডাক পড়ল নাতির দেখাশোনা করার। মা আনন্দচিত্তেই নাতির যতœ করছেন। যেন প্রথম সন্তান হওয়ার পর আনাড়ি মা হিসেবে যেসব ভুল করেছিলেন এখন যেন অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হয়ে ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ পেলেন। এদিকে ছেলে ডাকছে, মা তাড়াতাড়ি চলে এসো! এ মাসেই বাবুকে স্কুলে ভর্তি করতে হবে। আমি আর তোমার বউমা তো অফিসে যাব ওকে স্কুলে দিয়েই। নিয়ে আসার দায়িত্ব তোমাকেই নিতে হবে!

তা হলে মায়ের ছুটি কবে! উল্টে দেখো, পাল্টে দেখো, মায়ের কোনো ছুটি নেই। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ফাহমিদা আক্তার। বললেন, আমার ছেলের বয়স এখন দশ বছর। গত দশ বছরে একটি রাতেও আমি একটানা ঘুমাইনি। বলা যায় এক কান চাপা দিয়ে আরেক কান খুলে রেখে ঘুমিয়েছি। কেবলি ঘুম ভেঙে যায়, এই বুঝি ছেলে পড়ে গেল! ওর কি ক্ষুধা পেয়েছে? ও কি বাথরুমে যাবে! আর অসুস্থ হলে তো কথাই নেই। রাতের পর রাত কাটে নির্ঘুমে। আর ছুটির দিন বলে সত্যিই আমাদের কিছু নেই। প্রত্যেক ছুটির দিনেই ছেলেমেয়ে, স্বামীর জন্য তাদের পছন্দের খাবার তৈরি করতে হয়, তাদের নিয়ে বেড়াতে যেতে হয়। তার ওপর অতিথিও আপ্যায়ন করতে হয়। আবার সামাজিকতা রক্ষার জন্য নিজেদেরও আত্মীয়- স্বজনদের বাড়িতে যেতে হয়। আসলে আমাদের কোনো ছুটি নেই!

একজন নারী যখন মা হয় তখন তার দায়িত্ব কাউকে বুঝিয়ে দেওয়ার দরকার হয় না। সন্তানের সব দায়িত্বই তিনি কাঁধে তুলে নেন নিজ দায়িত্বে। সন্তান লালন-পালন করে বড় করা, তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ রচনা করার আপ্রাণ চেষ্টা তিনি করে যান জীবনের শেষদিন পর্যন্ত। আর এসব কিছুই তিনি করেন কোনো প্রতিদানের কথা না ভেবেই। পৃথিবীতে একমাত্র মাই বুঝি নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসেন সন্তানদের! সূত্র: আমাদের সময়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়