জহিরুল ইসলাম শিবলু,লক্ষ্মীপুর : কালবৈশাখীর ঝড়ে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার দক্ষিণ চর মার্টিন চৌধুরী বাজার উচ্চ বিদ্যালয় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে শ্রেণীকক্ষ, বাতাসের তোড়ে উড়ে গেছে টিনের চালা। এমন পরিস্থিতিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
শনিবার (১২ মে) সকালে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এসে শ্রেণি কক্ষে না যেতে পেরে খোলা আকাশের নিচে মাঠে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচণ্ড ঝড়ে বিদ্যালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
স্থানীয় চর মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ইমান আলী বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যালয়ে আধাপাকা ভবন ভেঙে গেছে, টিনের চালা উড়ে গিয়ে অন্য স্থানে পড়েছে। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর দু’টি শ্রেণিকক্ষ লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী নুশরাত জাহান ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শাহিন চৌধুরী জানায়, ঝড়ে তাদের বিদ্যালয়ের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যালয় ভেঙে পড়ায় শ্রেণি কক্ষে যেতে পারছেন না তারা। পাঠদান বন্ধ থাকলে যথাসময়ে সিলেবাস শেষ করতে পারবো না। তাই দ্রুত বিদ্যালয়ের মেরামত চান তারা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, ঝড়ে বিদ্যালয় ভন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এই অবস্থায় পাঠদান অসম্ভব। রোদ-ঝড়-বৃষ্টির এ মৌসুমে খোলা আকাশের নিচেও পাঠদান অনিশ্চিত। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, বিদ্যালয় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। শিক্ষার্থীদের যাতে পাঠদান বন্ধ না হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দক্ষিণ চর মার্টিন চৌধুরী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪‘শ ৫০জন শিক্ষার্থীরা রয়েছে। কালবৈশাখীর কবলে পড়ায় তাদের পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয় মেরামত ও পাঠদান নিশ্চিত করা না গেলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক ও সচেতন মহল।
এদিকে হঠাৎ কালবৈশাখীর ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসল ও ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত কমলনগর ও সদর উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। এ সময় ঝড়ের সঙ্গে তুমুল শিলাবৃষ্টিও হয়।
কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন, চর লরেন্স, তোরাবগঞ্জ, হাজিরহাট ও মেঘনা উপকূলীয় ফলকন, সাহেবেরহাট ও চর কালকিনিসহ উপজেলার প্রায় সব কয়েকটি ইউনিয়নে কম-বেশি ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ঝড়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে, উড়ে গেছে বসতঘরের টিনের চালা। ভেঙে পড়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫ শতাধিক গাছ। শিলাবৃষ্টিতে সয়াবিন, বাদাম, মরিচ, শাক-সবজিসহ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে তার ছিঁড়ে গেছে, এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :