ইসমাঈল হুসাইন ইমু : স্ত্রীকে বলেছিলেন কাঁচা আম কেটে লবণ দিয়ে মেখে রাখতে। কৃষ্ণচূড়া উৎসব থেকে ফিরে খাবেন সেই লবণ মাখানো কাঁচা আম। এরপর ছেলেকে নিয়ে কোচিং সেন্টারে দিয়ে কৃষ্ণচুড়া উৎসবের জন্য ধানমন্ডি লেকের দিকে রওয়ানা দেন তিনি। কিন্তু বাসায় ফিরে আর কাঁচা আম খাওয়া হলো না প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমানের। ঘাতক কৃষ্ণচুড়ার নিচে চাপা পড়ে তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, মোস্তাফিজ বেশকজন কৃষ্ণচূড়াপ্রেমীকে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন একটি সংগঠন। উদ্যোগ নিয়েছিলেন কৃষ্ণচূড়া উৎসবের। অথচ গতকাল শুক্রবার সেই উৎসবের দিন সকালে সেই কৃষ্ণচূড়া গাছ উপড়ে পড়ার সময় সেটির নিচে চাপা পড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী গোলাম হোসেন জানান, ধানমন্ডির ৩/এ নম্বর সড়কের ১৪ নম্বর বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। প্রতিদিন সকালেই হাঁটতেন তিনি। তা ছাড়া শুক্রবার একটি চায়ের দোকানে একত্র হতেন কৃষ্ণচূড়াভক্তদের সঙ্গে। দেশব্যাপী কৃষ্ণচূড়াকে ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। সকালে কৃষ্ণচূড়া উৎসব উপলক্ষে ধানমন্ডির বিভিন্ন কৃষ্ণচূড়া গাছে ব্যানার ঝুঁলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তেমন একটি গাছে লাগানো ব্যানারের ছবি মোবাইল ফোনে তুলছিলেন তিনি। অকস্মাৎ শিকড় উপড়ে সেই গাছটি হেলে পড়তে থাকে। তা দেখে আশপাশের লোকজন তাকে সতর্ক করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ছবি তোলায় মগ্ন মোস্তাফিজুরের এসব দিকে খেয়াল ছিল না। মুহূর্তে গাছ এসে পড়ে তার মাথার ওপর। সবাই ছুটে গিয়ে গাছের তলা থেকে বের করে আনেন তার প্রাণহীন দেহ।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মোস্তাফিজুর রহমান একজন বস্ত্র প্রকৌশলী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করেন। কর্মজীবনের শুরুতে যোগ দেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে তিনি সরকারি চাকরিতে ঢোকেন। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে।
আপনার মতামত লিখুন :