ফয়সাল মেহেদী : সরকার বীমাশিল্পের উন্নয়নে কাজ করছে। কিন্তু বেশিরভাগ সরকারি চাকরিজীবীরা বীমা বা বীমার সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানেন না। টিএনও, ডিসি, সচিব এমনকি বিসিএস ক্যাডারদের মধ্যেও বীমা জ্ঞানের যথেষ্ট অভাব আছে। বীমাখাতের সম্প্রসারণে সব শ্রেনীর সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বীমা বাধ্যতামূলক করা উচিৎ বলে মনে করেন জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম নুরুজ্জামান (চলতি দায়িত্ব)। সম্প্রতি এই প্রতিবেদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
এস এম নুরুজ্জামান বলেন, সুন্দর ভবিষ্যতের জন্যই বীমা করা প্রয়োজন। কারণ বীমা মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। কিন্তু এবারের উন্নয়ন মেলায় অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি এমন অনেক সরকারি চাকরিজীবীকে পেয়েছি, যারা বীমা সম্পর্কে একেবারেই কিছু জানেন না। অথচ বিভিন্ন দেশে বীমা সবার জন্য বাধ্যতামূলক।
তিনি বলেন, বীমাখাতকে এগিয়ে নিতে সরকারি চাকরিজীবীদের পাশাপাশি সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্যতামূলক বীমার আওতায় আনা উচিৎ। এ বিষয়ে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
এছাড়া ফান্ড বা তহবিলের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এনজিওরা বীমা করান, এটা বন্ধ করতে হবে। আমরা চাই বাংলাদেশের জিডিপিতে বীমাখাতের অবদান ভারতের সমান হোক।
এই সিইও আরও বলেন, বীমাশিল্পের প্রতি মানুষের এখনও ভুল ধারণা আছে। আছে শিক্ষিত লোকেরও অভাব। তবে বর্তমানে বীমাখাতের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো। আগে অনেক সমস্যা ছিল সেগুলো সমাধান হচ্ছে। এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে (আইডিআরএ) লোকবল বাড়ছে। আইডিআরএতে এখন যারা আছেন ইতিমধ্যে তারা বীমাখাতের উন্নয়নে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন। নতুন নতুন প্রবিধান প্রণয়ন ও সংস্কারের জন্য কাজ করছেন। এগুলো চূড়ান্ত হলে অনেক ধারণা পরিস্কার হবে, শৃঙ্খলাও আসবে। তখন বীমারপ্রতি মানুষের ধারণা বদলাবে।
বীমা দাবি পরিশোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টাকা থাকার সত্ত্বেও দাবি বকেয়া রাখা বা পরিশোধে দেরি করা ঠিক না। বেশকিছু বীমা কোম্পানি ফান্ড নষ্ট করে বসে আছে। তারা গ্রাহকের দাবি পরিশোধ করতে পারছে না। ফান্ড ব্যবহারের আগে দাবি পরিশোধের বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। অন্যদিকে অনেক বীমা কোম্পানি গ্রাহকের ম্যাচিউরড পলিসি থেকে পুনরায় বীমা করার জন্য জোর করে টাকা কেটে রাখে। এতে গ্রাহকের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে। একইসঙ্গে বাজার নষ্ট হচ্ছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, সবার আগে সেবার মানটা নিশ্চিত করতে হবে। কোম্পানি দ্বারা ভোগান্তির শিকার না হলে এবং উত্তম সেবা পেলে জোর করার প্রয়োজন নেই, নিজ থেকেই পুনরায় বীমা করবেন গ্রাহক।
নিজ কোম্পানি সম্পর্কে এই মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স বেকারত্ব, দারিদ্র বিমোচনে কাজ করছে। দ্রুত সেবা দিতে ডিজিটাল তথ্যপ্রযুক্তিকে গুরুত্ব দিয়েছে। ইংরেজির পাশাপাশি ওয়েবসাইটে বাংলা ভার্শন চালু করেছে। যাতে দেশের যেকোনো প্রান্তে বসে সব শ্রেনীর গ্রাহক বা মানুষ সহজেই বীমা সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য পেতে পারেন। লেভেল প্রিমিয়ামের পণ্য আনতেও কাজ করছে জেনিথ লাইফ। মার্কেটিংয়ের লোকেরা কমিশন ভিত্তিক কাজ করতে চান না। তাই এ বছর থেকেই তাদের স্থায়ী করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :