সোহেল রহমান : চুরি যাওয়া রিজার্ভের অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে এ ঘটনায় জড়িত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সঙ্গে বিষয়টি আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া আরও দুটি প্রস্তাবের কথা ভাবা হচ্ছে। সেই দুটি হচ্ছে আদালত প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান কিংবা বাংলাদেশের সঙ্গে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্র্তৃক ‘রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন’ (আরসিবিসি)-কে নির্দেশ প্রদান। বাংলাদেশের এ প্রস্তাব তিনটি ফিলিপাইন সরকার তথা দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিবেচনা করবে বলে প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৫১ তম বোর্ডসভায় যোগ দিতে আগামী ২ মে ফিলিপাইন যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রীর ওই আসন্ন সফরে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে তার একটি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। ওই বৈঠকে প্রস্তাব তিনটি তুলে ধরবেন তিনি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ওই তিন প্রস্তাব সম্বলিত একটি ধারণাপত্র অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রেরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০১৬ সালে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়ে যায়। ফিলিপাইনের ‘রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন’ (আরসিবিসি)-এর চারটি ভুয়া একাউন্টের মাধ্যমে এই অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়। ম্যানিলার আদালতের নিদের্শে চুরি যাওয়া রিজার্ভের দেড় কোটি ডলার ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত দিয়েছে আরসিবিসি। অবশিষ্ট অর্থ উদ্ধারে বর্তমানে ফিলিপাইনের আদালত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ প্রক্রিয়া তরাণি¦ত করতে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইচ্ছে করলে দেশটির ‘এন্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল’-কে নির্দেশ দিতে পারে। রিজার্ভ চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যেই আরসিবিসি-কে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার জরিমানা করেছে। এতেই প্রমাণিত হয় যে, আরসিবিসি রিজার্ভ চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল।
এদিকে রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ফৌজদারি মামলা দায়ের করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি ফিলিপাইন সফর করে এসেছেন। ফিরে এসে তারা যে প্রতিবেদন দিয়েছেন, এর ভিত্তিতেই মামলা দায়ের করা হবে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে এই মামলা দায়ের করা হবে। মামলার সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফট কর্তৃপক্ষও থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :