শিরোনাম
◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল, ২০১৮, ০১:৫২ রাত
আপডেট : ৩০ এপ্রিল, ২০১৮, ০১:৫২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একজন মোশাররফ খান চৌধুরীর অসাধারণ সব কর্মকাণ্ড!

নর্থ আমেরিকা কুমিল্লা কমিউনিটির সাবেক সভাপতি, আমেরিকায় ট্যাক্সি চালিয়ে যিনি দেশে গড়ে তুলেছেন ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সেই অসাধারণ গুনের অধিকারী মোশাররফ খান চৌধুরীর মনের কথাগুলো তিনি নিজেই বলেছেন এই প্রতিবেদকের নিকট। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার ক্ষেত্রে আমি অনুপ্রেরণা পেয়েছি আমার বাবার থেকে। আমার পারিবারিক ইতিহাস অনেক লম্বা। কেননা, আমার দাদার বাবা মরহুম সিরাজ খান চৌধুরী ১৯৩৭ ইংরেজিতে ধান্যদৌল প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা হেড মাষ্টার। আমার বাবা ১৯৫৭ সালে রাঙামাটিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ওখানে স্কুল জীবন শুরু করেছেন, ওখানে ওনার চাকরী জীবন শুরু।

আমি যখন ক্লাস ফোর ফাইভে উঠি, তখন আমার আব্বা মারা যান। আমরা চার ভাই দুই বোন। আমরা পরিবার সহ সবাই আমেরিকা বসবাস করি। আমার বাবা যখন মারা যান, তখন আমি ক্লাস ফাইভের ছাত্র। আমি সবার বড়, ভাইবোনদের মধ্যে। ১৯৮৬ সালে যখন আমাদের এলাকায় উপজেলা সদরের স্কুলটি সরকারি হয়, তখন সরকারি স্কুলের সিট ছিলো লিমিটেড। ফলে আমাদের এলাকায় একটা বিকল্প স্কুল করা জরুরী হয়ে পড়ে। কেননা, সরকারি স্কুলে সিট স্বল্পতার কারণে সব ছাত্রছাত্রী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়নি। আমি ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত কাতার থাকি।

কাতার থেকে এসে আমি আমার গ্রামে মসজিদ, ঈদগাহ, আমাদের কবর স্থান উন্নয়নের কাজ করি। এজন্য গ্রামের মানুষের দৃষ্টি আমার উপর পড়ে। তারা মনে করলো, আমি যদি স্কুলটাতে হাত দেই, তাহলে স্কুলটা হয়ে যাবে। কেননা, ওই সময় আমাদের গ্রামে আমার হাত দিয়ে বড় বড় দুটো কাজ হয়। আমার আব্বা মারা যাওয়ার আগে বলে যান, আমি যেন সুযোগ পেলে গ্রামে একটা স্কুল করি। আমি চিন্তা করলাম, এরকম একটা সুযোগ যেহেতু এসেছে, সেহেতু শুরু করে ফেলি। কিছু টাকা পয়সা ছিলো এবং আল্লাহর উপর ভরসা করে কাজ শুরু করে ফেলি, গ্রামবাসীর সহযোগিতা নিয়ে। আর্থিকভাবে নয়, তারা আমাকে বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। যার ফলে ১৯৮৯ সালে আমি আমার আব্বার নামে আব্দুর রাজ্জাক খান চৌধুরী হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি।

এখন আমার স্কুলে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা প্রায় ১০০০ এর উপরে। ১৯৮৯ তে আমি স্কুল প্রতিষ্ঠার পরে চলে যাই আমেরিকা। ১৯৯৪ তে আমি আমার মা এবং দাদীর নামে গ্রামে একটা মাদ্রাসা স্থাপন করি। তৎকালীন এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এটার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত আমাদের উপজেলায় কোন কলেজ ছিলো না। তখন চিন্তা করলাম, ব্রাহ্মণপাড়ায় কলেজ প্রতিষ্ঠা করা জরুরী। আমার নামে মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী কলেজ প্রতিষ্ঠা করি। বর্তমানে কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রূপান্তরিত হয়েছে।

এখন ১১টি বিষয়ে অনার্স ও ২টি বিষয়ে মাষ্টার্স কোর্স চালু আছে এবং এই কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার। তৎকালীন এমপি ও সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু আমাকে বলেন, আমাদের উপজেলায় মহিলা কলেজ দরকার। আমার একটুকরা জায়গা ছিলো, ভাবছিলাম এখানে বাড়ি করবো। পরে আবার ভাবলাম, বাড়ি করার চেয়ে মহৎ কাজ মহিলা কলেজ করা। তখন আবদুল মতিন খসরু মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করলাম। সেই মহিলা কলেজটি এখন ডিগ্রি কলেজে রূপান্তরিত, যার চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খানের খালাতো ভাই শাহ মোহাম্মদ হাসান।

২০০২ সালে আমার ছেলে মেয়েদের নামে গ্রামে মুমু রোহান কিন্ডার গার্টেন প্রতিষ্ঠা করি। যার ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা বর্তমানে ৩৭০ জন। আমি এইভাবেই আল্লাহর রহমতে এগিয়ে আসছি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে, আল্লাহ আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আর আল্লাহ যাকে সহযোগিতা করেন, পরিবেশ পরিস্থিতি সব কিছু তার পক্ষে থাকে। আমার এ সফলতায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন আমার সহধর্মিনী। তার সহযোগিতায় আজ আমি সফল। আমি প্রায় ১০টি টিভি চ্যানেলের সাথে সাক্ষাৎকার দিয়েছি। তারা প্রশ্ন করেছেন যে, আমি কোন ডোনেশন নিয়েছি কি-না? আমি তাদের বলেছি যে, না। আমি কোন ডোনেশন নেইনি। কারো সেক্রিফাইস ছাড়া কেউ কখনো এগুতে পারে না। দেওয়ার মতো, দান করার মতো এত আনন্দ দুনিয়াতে আরেকটা নেই। আমি আল্লাহর কাছে বলি, অবৈধ পয়সা যেনো আমার জীবনে না আসে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়