শিরোনাম
◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট

প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল, ২০১৮, ০৩:৪২ রাত
আপডেট : ২৯ এপ্রিল, ২০১৮, ০৩:৪২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রাণঘাতী নতুন রোগ আসছে, মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বে: বিল গেটসের হুঁশিয়ারি

ডেস্ক রিপোর্ট: গত শুক্রবার ম্যাসাচুসেটস মেডিক্যাল সোসাইটি ও দি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন আয়োজিত মহামারি বিষয়ক আলোচনায় বিল গেটস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, প্রাণঘাতী একটি নতুন রোগ আসছে, যা মহামারি আকারে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে এবং তাতে ৬ মাসের মধ্যে ৩ কোটি লোক মারা যেতে পারে। আগামী দশকের মধ্যে সহজেই এটা ঘটতে পারে এবং আমরা এর জন্য প্রস্তুত নই। গেটস স্বীকার করেন যে তিনি সচরাচর আশাবাদী মানুষ।

তিনি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন, আমরা বিশ্বব্যাপী শিশুদের দারিদ্রমুক্ত করছি এবং পোলিও ও ম্যালেরিয়ার মত রোগ নির্মূলে ভালো করছি। কিন্তু একটি ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে বিশ্ব বেশি এগোতে পারেনি। তা হচ্ছে মহামারি বিষয়ে প্রস্তুতি।

এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা অব্যাহত থাকবে। বিশ্ব জনসংখ্যা বাড়ছে এবং মানব সমাজ বন্য পরিবেশের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রেক্ষিতে সব সময় নতুন জীবাণুর উদ্ভব ঘটছে। একক ব্যক্তি বা একটি ক্ষুদ্র দলের জন্য রোগকে অস্ত্র হিসেবে সৃষ্টি করা সহজ হচ্ছে যা দাবানলের মত বিশব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে পারে।

গেটসের মতে, রাষ্ট্র ছাড়াই ক্ষুদ্র কোনো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান একটি গবেষণাগারে গুটি বসন্তের প্রাণঘাতী রূপ তৈরি করতে পারে। আমাদের আন্তঃসংযোগ সম্পন্ন বিশ্বে মানুষ সব সময় বিমানে উড়ছে, মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে এক মহাদেশের এক নগর থেকে অন্য মহাদেশের আরেক নগরে যাচ্ছে।

বিল গেটস ইনস্টিটিউট ফর ডিজিজ মডেলিং-এর একটি রিপোর্টের অনুলিপি উপস্থাপন করেন। তাতে দেখা যায় যে ১৯১৮ সালে প্রাদুর্ভাব ঘটা এক মহামারি ফ্লু যাতে ৫ কোটি লোক মারা গিয়েছিল সে রকম একটি নতুন ফ্লুতে মাত্র ৬ মাসের মধ্যে ৩ কোটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

যে রোগটি পরবর্তীতে আমাদের আকস্মিক ভাবে আক্রমণ করবে তার প্রাদুর্ভাব ঘটবে প্রথমবারের মত, যেমনটি সম্প্রতি ঘটেছে সারস ও মারস ভাইরাসের ক্ষেত্রে।

গেটস বলেন, আপনার যদি বিশ্বের সরকারগুলোকে বলেন যে এমন অস্ত্র নির্মাণাধীন যা ৩ কোটি মানুষকে হত্যা করতে পারে , তাদের এ হুমকির জরুরি মোকাবেলার দায়িত্ব বোধ সৃষ্টি হতে পারে। তিনি বলেন, জীবাণু অস্ত্রের হুমকির ক্ষেত্রে গুরুত্ব উপলব্ধির অভাব রয়েছে। যুদ্ধের জন্য যেমন প্রস্তুতি নেয়া হয় সেভাবেই মহামারি মোকাবেলার জন্য বিশ^কে প্রস্তুতি নিতে হবে।
পরবর্তী মহামারি রোধ

গেটস বলেন, একবার সামরিক বাহিনী গুটিবসন্ত মহামারির বিরুদ্ধে এক ধরনের সামরিক মহড়ার চেষ্টা করেছিল। চূড়ান্ত ফলাফল ছিল গুটিবসন্ত এক, মানব সমাজ শূন্য।

তবে তিনি পনুরুল্লেখ করেন যে তিনি আশাবাদী, তিনি বলেন - আমি মনে করি পরবর্তী ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া হুমকির ক্ষেত্রে আমরা ভালোভাবে প্রস্তুত হতে পারব।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে আগের মহামারিগুলোর তুলনায় আমরা অনেক ভালোভাবে প্রস্তুত। আমাদের ভাইরাস প্রতিরোধক ওষুধ রয়েছে যা জীবনরক্ষার হার বৃদ্ধি করছে। আমাদের অ্যান্টিবায়োটিকস আছে যা ফ্লু জড়িত নিউমোনিয়ার মত দ্বিতীয় সংক্রমণের চিকিৎসা করতে পারে।

গেটস বলেন, আমরা সার্বজনীন ফ্লু ভ্যাকসিনের কাছাকাছি পৌঁছেছি। তিনি ঘোষণা করেন, বিল ও মেলিন্দা গেটস ফাউন্ডেশন এটার উন্নয়ন উৎসাহিত করতে ১ কোটি ২০ লাখ ডলার মঞ্জুরি দেবে।

দ্রুত রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও আমরা ভালো করছি। একটি নতুন রোগের সাথে লড়াই করার জন্য যা অত্যাবশ্যক তা হচ্ছে রোগীর সঙ্গরোধ। মাত্র এ সপ্তাহেই জার্নাল সায়েন্সে প্রকাশিত এক নয়া গবেষণাপত্রে দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিহ্নিত করতে ঘরোয়া অন্তঃসত্তা পরীক্ষায় ব্যবহৃত একই পেপার স্ট্রিপ ব্যবহার করে জিন এডিটিং প্রযুক্তি ক্রিস্প ব্যবহারের নয়া পন্থা উদ্ভাবনের কথা বলা হয়েছে।

কিন্তু আমরা এখনো একটি রোগের হুমকির মুখে দ্রুত তা চিহ্নিত করা ও সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভালো করিনি যেটা দেখা গেছে সর্বশেষ ইবোলা মহামারির বেলায় বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া থেকে।

গেটস বলেন, সমন্বিত জবাবকে সাহায্যের জন্য সামরিক বাহিনী ও সরকারের মধ্যে সুষ্ঠু যোগাযোগ হওয়া প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, একটি প্রাণঘাতী রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে তা মোকাবেলায় প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম তৈরির প্রয়োজনে সরকারগুলোর বেসরকারি খাতের দ্রুত সাহায্য গ্রহণের জন্য পন্থা বের করা প্রয়োজন।

মেলিন্ডা গেটস সম্প্রতি বলেন, বিশ্বব্যাপী মহামারির হুমকি, সে প্রাকৃতিকই হোক আর মানব সৃষ্টই হোক, তা সম্ভবত মানবতার প্রতি বৃহত্তম হুমকি।

তিনি বলেন, নিউ ইয়র্ক সিটির সে সব লোকদের কথা ভাবুন যারা প্রতিদিন নগরী ত্যাগ করছে এবং বিশ্বের সর্বত্র যাচ্ছে- আমরা এখন আন্তঃসংযুক্ত বিশ্ব।রোগ মহামারির ক্ষেত্রে এ সংযোগ আমাদের সকলকে দুর্বল করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়