আশিক রহমান : তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে বলে মনে করেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি বিশ্বাস করি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে বাংলাদেশে। নব্বইয়ের তিন জোটের রূপরেখায় বলা হয়েছিল, পরপর তিন মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে। তিন মেয়াদ পার হয়ে গেছে। আর চিরদিন তো তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখা যায় না। আমাদের তো শুরু করতে হবে কোথাও না, কোথাও থেকে। তিনি আরও বলেন, কোনো দলই কিন্তু আজ পর্যন্ত বলেনি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান পূর্বশর্ত একটি স্বাধীন, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন। তবে বিকল্প নির্বাচনকালীন নানা পদ্ধতির কথা তারা বলেছে, এতে করে আমি কিছুটা হতাশ। এক প্রশ্নের জবাবে এই ইতিহাসবিদ বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনি সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের উচ্চকন্ঠ হওয়ার কোনো ভিত্তি নেই। একটা নির্বাচনি সংস্কৃতি তৈরি হতে শুরু হোক। প্রথমে ব্যত্যয়, ভুল-বিচ্যুত ঘটবে, তবে ক্রমাগতভাবে চেষ্টা করে তা অর্জন করতে পারি। সে কারণেই তত্ত্বাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি অযৌক্তিক।
তিনি বলেন, বর্তমানে সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন হওয়া উচিত। তবে সরকারের উপরে অনেক বড় দায়িত্ব রয়ে গেছে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনকেও স্বাধীনভাবে কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। পৃথিবীর যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে পরিস্থিতি বোঝে সেনাবাহিনী কোথাও কোথাও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পুলিশ বা বিজিবি, যাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তারাই যথেষ্ট।
তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে, সে সম্পর্কে আমার কোনো সন্দেহ নেই। নির্বাচনে ব্যত্যয়-বিচ্যুতি হবেই, সেটা খুব স্বাভাবিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা সাধারণ মানুষ চাইব যেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়। এটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকার, নির্বাচন কমিশন ও বিরোধী দলগুলোর উপরেও বর্তায়। তারা দায়িত্ব কতটুকু পালন করবেন তার উপর নির্ভর করবে নির্বাচন কেমন হবে, না হবে। তবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ সব সময় নির্বাচনমুখী।
আপনার মতামত লিখুন :