বেগম জিয়ার মামলার রায়ে সরকারের বেশিকিছু করার ছিল না, খুব কমই করণীয় ছিল। কারণ মামলাটা রাজনৈতিক এতে কোনো সন্দেহ নেই। রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে যে মামলা-মোকদ্দমা হয় সেটা রাজনীতি ও রাজনৈতিক কারণে হয়। ওয়ান ইলেভেন সরকার মামলাটা দিয়েছিল রাজনৈতিক কারণে। সরকার ইচ্ছে করলে মামলাটা প্রত্যাহার করতে পারত। প্রত্যাহারও করেনি রাজনৈতিক কারণে। কিন্তু মামলার যে ফলাফল হয়েছে বা রায়টা হয়েছে তা রাজনৈতিক নয়, আইনগত। এই বাস্তবতটা যদি বিএনপি মেনে নেয় তাহলে দলটির জন্য মঙ্গল হবে।
যখন একটা রায় হয় তখন সাজার বিষয়ে সরকারের কখনো কখনো করণীয় থাকে, কখনো কখনো কিছু করার থাকে না। সরকারের যেখানে করণীয় থাকে সেটাও রাজনৈতিক। রাজনৈতিক সমঝোতার জায়গাটাতে এগিয়ে আসতে হবে কার? বিএনপির, সরকারের নয়। কারণ সরকার তো এখন উইনিং পজিশনে আছে। উইনিং পজিশন থেকে যদি তাকে এই মামলার বেনিফিট দিতে হয় তাহলে বিএনপিকে সর্বোচ্চ প্রজ্ঞা নিয়ে সরকারের সঙ্গে নেগোশিয়েশনে আসতে হবে। তা না করে যদি বিএনপি গোয়াতুর্মি করে আইন তার নিজস্ব গতিতে যেখানে আছে সেখানে সরকারের কিছু করার থাকবে না।
আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে না বা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মামলা প্রত্যাহার করার কথা বলার কারণেই বেগম খালেদা জিয়ার জেল হয়েছে। এ কথাটি যদি তারা না বলত তাহলে বুঝতে পারত বাতাস কোনদিকে যাচ্ছে। বিএনপিও তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। তারা জানেন এ বিষয়গুলো। আপনার হাতে যখন ক্ষমতা থাকবে তখন আপনার সঙ্গে জেদাজেদি করে, আপনাকে বিব্রত করে কেউ কোনোদিন বেনিফিটেড হবে না।
মামলার রায় নিয়ে যেসব কথা বলছে বিএনপি তা বালকসুলভ কথাবার্তা। এসব কথাবার্তা বলে নিজেদের সংকট আরও ঘনিভূত করছে দলটি। আগামীতেও যদি বিএনপি এ বিষয়গুলোতে প্রজ্ঞাবান না হয়, সরকারের কাছে যদি রাজনৈতিক বেনিফিট চায় তাহলে ব্যাপারটা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। তা না করে যদি গীবত করে, উত্তেজিত করে তাহলে ক্ষতি ছাড়া তাদের কোনো লাভ হবে না।
পরিচিতি : সাবেক সাংসদ ও রাজনীতিক/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :