রফিক আহমেদ : বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জাসান রতন বলেছেন, কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র বলেছে সরকার। কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন এবং এ আন্দোলনে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীর অংশগ্রহণ ক্ষমতাসীন দলকে ভাবিয়ে তুলেছিল। মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎতারে রতন এসব কথা বলেন।
রাজেকুজ্জাসান রতন বলেন, প্রথমে পুলিশ এবং দলীয় কর্মী দিয়ে দমন করার চেষ্টা, আলোচনা ও আশ্বাস দেওয়া, এরপর এই আন্দোলনকে স্বাধীনতা বিরোধীদের কাজ বলে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা, সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করা, আবার এ আন্দোলন বামপন্থীদের কাজ বলে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করা হয়েছে সরকারের সমর্থকদের পক্ষ থেকে। কিন্তু আন্দোলনে দিন দিন ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। সর্বশেষে প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটা বাতিল করার ঘোষণা দিলে আন্দোলন স্থগিত হয় কিন্তু নতুন বিতর্ক শুরু হয়ে যায়।
বাসদ কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আন্দোলনকারীরা চেয়েছিল কোটা সংস্কার, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন কোটা পদ্ধতি বাতিল করার। সঙ্গে সঙ্গে অদ্ভুত পরিবর্তন হলো ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের। সাংগঠনিকভাবেই তারা আন্দোলনের বিজয় হয়েছে বলে আনন্দে মিষ্টি বিতরণ করে ফেলে। ইতোমধ্যে এক নতুন নাটক মঞ্চস্থ হয়। যার গলায় জুতার মালা দিয়েছিল, যাকে হল, সংগঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা এবং তার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হোল।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলন দমনের প্রথম পর্ব শেষ করার পর এবার শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পর্ব। আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দেরকে গাড়ীতে তুলে নিয়ে যাওয়া, তাদের বাবাদেরকে পুলিশী হয়রানি করা, হল থেকে বের করে দেওয়া, হলের মেয়েদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া, গভীর রাতে মেয়েদেরকে হল থেকে বের করে দিয়ে লোকাল গার্ডিয়ানের কাছে তুলে দেওয়া এবং একাজকে প্রভোস্ট, ভাইস চ্যান্সেলর সমর্থন করার ফলে নিপীড়নের নতুন মাত্রা তৈরি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, একদিকে আন্দোলনকারীদের উপর নতুনভাবে নির্যাতন অন্যদিকে কোটা পদ্ধতির সংস্কার হওয়া নিয়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দিয়েছ। কিন্তু অতীতের ইতিহাস বলে শাসকশ্রেণী নিপীড়ন করলে এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে সংকট আরো তীব্র হয়। সমস্যাকে জটিল করা নয়, কোটা সমস্যার যুক্তিসঙ্গত সমাধান সবার কাম্য।
আপনার মতামত লিখুন :