হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি কাল পুরুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
যে কথা চিরন্তন সত্য, সে কথা স্বীকার করতে হবে এবং ধারণ করতে হবে- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা এবং জনপ্রিয়তায় মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এদেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় র্দীঘ ২১ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। কিন্তু কখনোই লোভ-লালসা বা জুলুম নির্যাতনের কাছে মাথা নত করেনি। তিনি ছিলেন এদেশের মুক্তিকামি ৭ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিক। বঙ্গবন্ধু মানেই এক দেশ এক নেতা।
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ৭ কোটি মানুষ জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার লক্ষে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহিদ আর ৪ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙ্গালি জাতি স্বাধীনতা অর্জন করে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে , সকল শহীদ এবং মুক্তিযোদ্ধার প্রতি আমি আমার মনের গহিনে বিন¤্র শ্রদ্ধা ধারণ করি এবং পালন করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেই দৃঢ় চিত্তে বলছি, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সবাই মুক্তিযুদ্ধের বীর যোদ্ধা কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান গোটা যুদ্ধ জয়ের নায়ক।
স্বাধীনতার পর মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিক বঙ্গবন্ধু দেশ পরিচালনায় শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু যখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব কাধে তুলে নেন। তখন চারিদিকে শুধু হাঁহাঁকার আর ক্ষুধার্থ মানুষের আহাজারী। যুদ্ধ বিবধস্ত একটি দেশকে বঙ্গবন্ধু দু’হাতে আকড়ে ধরে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পথ চলা শুরু করেন। কিন্তু সে পথের শুরুতেই এলো একটি কালো রাত। হ্যাঁ, আমি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের কথা বলছি। বঙ্গবন্ধুর সরকার তখন চার বছরও পূরণ করতে পারেনি। সেই রাতের ভোর বেলা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ তার স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। রাত শেষে যে নতুন সূর্য উদিত হল, সে সূর্য অন্ধকারে ঢেকে দিল গোটা বাংলাদেশ। জাতির জনককে হত্যার পর ষড়যন্ত্রকারীরা এবং ওত পেতে থাকা ক্ষমতা লোভীরা মাথা উঠিয়ে দাঁড়ায়। একের পর এক ক্ষমতার পালা বদল শুরু হয়। ষড়যন্ত্র এবং এক রক্তাক্ত পথে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করে।
সেই রক্তমাখা পথে ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানকে হত্যার পরে একটি বিশেষ সময়ে দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান হুসেইন মোহাম্মাদ এরশাদ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার যে প্রত্যয় ঘাতকের থাবায় শুরুতেই ধমকে যায়, সেখান থেকেই পূনরায় যাত্র শুরু করেণ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করাই ছিল পল্লীবন্ধুর একমাত্র স্বপ্ন এবং কর্ম। বাংলাদেশে যে ধারাবাহিক রক্তের খেলা চলছিল তিনি সেই রক্তের খেলা বন্ধ করে, বাংলাদেশ থেকে ক্ষুধা নিরাময়ের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নকে ধ্যান-জ্ঞান করে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ গ্রহণ করেন। আজকে আমারা বাংলাদেশে যত উন্নয়ন দেখছি এই উন্নয়নের যাত্র শুরু হয়েছিল পল্লীবন্ধুর হাতে। পল্লীবন্ধুর হাতেই বাংলাদেশ সোনার বাংলা রূপ ধারণ করেছিল। বাংলাদেশের রাস্তা-ঘাট, কল-কারখানা, শিক্ষা,শিল্পসহ দেশের সকল উন্নয়নের উৎস স্থান পল্লীবন্ধু এরশাদের হাতে।
তার স্বপ্ন ছিল, নীতি ছিল, প্রজ্ঞা ছিল এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষমতা ছিল। তিনি হচ্ছেন সোনার বাংলার বাতিঘর। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশে পথ চলছি এই পথ তৈরি করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে স্বসম্মানে মাথা উচু করে দাড়িছে, নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশে থেকে পরিণত হয়েছে মধ্যম আয়ের দেশে। পল্লীবন্ধুর হাতে ক্ষমতা থাকলে অনেক আগেই আমাদের দেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়ে যেত।
পল্লীবদ্ধু এরশাদ নীতি এবং প্রজ্ঞার দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে এদেশের গণমানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছেন। আজকের বাংলাদেশের উন্নয়নের বাতিঘর এবং রূপকার এদেশের সাধারণ মানুষের আস্থার প্রাণকেন্দ্র পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গণমানুষের প্রাণে থাকার কারণেই পাহাড়সম ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে পল্লীবন্ধু এখনো রাজনীতিতে উজ্জল নক্ষত্র।
পরিচিতি : মহাসচিব, জাতীয় পর্টি, মতামত গ্রহণ : লিয়ন মীর, সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :