রাজু আনোয়ার: নাটকপাড়াখ্যাত বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে পক্ষকালব্যাপী বৈশাখি নাট্যোৎসব চলছে গত ১৬ এপ্রিল থেকে। সোমবার সন্ধ্যা সাতটায় এ মঞ্চে প্রদর্শিত হয়েছে ঢাকার মঞ্চের জনপ্রিয় নাটকের দল বটতলার দর্শকনন্দিত নাটক ‘ক্রাচের কর্ণেল’। শাহাদুজ্জামানের উপন্যাস থেকে নাটকটির নাট্যরূপ দিয়েছেন সৌম্য সরকার ও সামিনা লুৎফা নিত্রা। নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার।
নাটকের গল্পে উঠে এসেছে কর্ণেল তাহেরের মধুময় পারিবারিক জীবন, পাকিস্থান থেকে পালিয়ে দেশে ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, যুদ্ধক্ষেত্রে পা হারানো, যুদ্ধ শেষে পিপলস আর্মি গঠনের ভাবনা, মেজর জিয়াউর রহমানের প্রতি তার অকৃত্রিম বিশ্বাস ও ভালোবাসার কথা। কথকের বয়ানে উপস্থাপিত এ নাটকে ইতিহাসের নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও চরিত্রের বর্ণনা করা হয়েছে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পালাবদল ও অস্থিতিশীল সময়। সিরাজ শিকদারের নেতৃত্বে জাসদ গঠন ও কর্ণেল তাহেরের সেনাবাহিনী ছেড়ে রাজনীতিতে যোগদান।
খন্দকার আব্দুর রশিদ ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ গংদের চক্রান্তে বঙ্গবন্ধুৃ শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা। খন্দকার মোশতাক আহমেদ সরকারের ক্ষমতা গ্রহণ মোশতাক সরকারের বিরুদ্ধে খালেদ মোশাররফের অভুন্থান, মোশতাক সরকারের শেষ কামড় হিসেবে জেলখানায় বন্দি চার জাতীয় নেতাকে হত্যা। কর্ণেল তাহেরের নেতৃত্বে গৃহবন্দি দশা থেকে মেজর জিয়াউর রহমানকে উদ্ধার। পরবর্তীকালে ক্ষমতালোভী জিয়াউর রহমানের অকৃতজ্ঞতা ও প্রহসনের বিচারে ইতিহাসের এক মহানায়ক কর্ণেল তাহেরের ফাঁসির ঘটনা বেশ ভালোভাবে উঠে এসেছে মঞ্চে।
বাংলাদেশের অনেক অজানা রাজনৈতিক ইতিহাস নানা যুক্তি তর্কের মাধ্যমে দর্শকের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছে বটতলা তাদের ‘ক্রাচের কর্ণেল’ নাটকটির মধ্যে দিয়ে । না জানা অনেক বিষয়ের বিশ্লেষনাতœক উপস্থাপনা এবং ইতিহাসের অলিগলিতে বিচরন করার মাধ্যমে এখানে উন্মোচন করা হয়েছে ইতিহাসের এক অস্থির সময়কে।
আপনার মতামত লিখুন :