আশিক রহমান : আগে অমানবিক, নিষ্ঠুর আচরণ হলে সামাজিকভাবে তার জোরাল প্রতিবাদ লক্ষ্য করা যেত, এখন সেই সামাজিক শক্তিটা অনেক দুর্বল হয়ে গেছে। সামাজিক শক্তির সেই প্রাণচাঞ্চল্যতা আমরা এখন লক্ষ্য করি না। কেননা, দেশে আইনের শাসন সাংঘাতিক নাজুক অবস্থায় রয়েছে। আইনের শাসন এতটা নিচে নেমে গেছে যে, প্রত্যেকটি মানুষ নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে দম্ভ, মানবাধিকারের লঙ্ঘনের ঘটনা ক্রমেই ঘটে চলেছে, কিন্তু যেহেতু তারা জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে উঠে গেছে, প্রতিটি মানুষ এখন শঙ্কিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। যার জন্য নাগরিক সংগঠনগুলো দুর্বল হয়ে গেছে। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে, অগ্রসর হয়েছি আমরা। কিন্তু নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের ক্ষেত্রে অর্জন থাকলেও সেই অর্জন এখন অনেকটা স্থিমিত হয়ে গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও অধপতন আমরা লক্ষ্য করছি, যা আমাদেরকে উদ্বেগের মধ্যে ফেলে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ নয়। বঙ্গবন্ধুর যে আদর্শ, চিন্তা-চেতনা ছিল তার চর্চা কি এখন হয়? বঙ্গবন্ধু যদি পঁচাত্তরে নিহত না হতেন তাহলে আজকে বাংলাদেশ অন্য বাংলাদেশ হতো। তার সেই বাংলাদেশকে তো আমরা ফিরিয়ে দিতে পারছি না।
বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর দীর্ঘ সময় স্বাধীনতার বোধকে নষ্ট করা হয়েছে, বিকৃত করা ফেলা হয়েছে সেই জায়গাটা তো আমরা ফিরিয়ে দিতে পারছি না। চেষ্টা হয়তো চলছে। কিন্তু সবাই যদি নিজের চেষ্টা দেখেন, শুধু একজন মানুষ সবার চিন্তা করবেন, তার দিকে সবাই তাকিয়ে থাকবে, একজন মানুষই যদি দেশ পরিচালনা করবেন, তার পক্ষেই যদি সব করা সম্ভব হতো তাহলে মন্ত্রিপরিষদও দরকার ছিল না। একজন মানুষের তো সীমিত সাধ্য, চাইলেও সবকিছু করতে পারেন না। এখন সবকিছু হয়ে গেছে এক মানুষ কেন্দ্রিক। তার চারপাশে যারা তারা হয় অদক্ষ, না হয় দুর্নীতিবাজ অথবা তারা কিছু করতে চান না।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. মিজানুর রহমান বলেন, আপনি যদি জনগণের শক্তির উপর বিশ্বাস রাখতে চান তাহলে অর্থনীতি পরিচালিত করতে হবে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থে। তখন কিন্তু আপনি ব্যক্তি মালিকানাকে প্রাধান্য দিতে পারবেন না। আমাদের ক্ষমতাটা চলে গেছে গুটিকয়েক মানুষের হাতে। যারা অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আমার মনে হয় এই জায়গাটায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও অসহায় হয়ে গেছেন। সূত্র: আমাদের অর্থনীতি
আপনার মতামত লিখুন :