শিরোনাম
◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক

প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ০১:৫২ রাত
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ০১:৫২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কিউবায় কাস্ত্রো পরিবারের বাইরে নতুন নেতৃত্ব কেমন হবে?

ডেস্ক রিপোর্ট : কিউবার পার্লামেন্ট রাউল কাস্ত্রোর ঘনিষ্ট বা ডান হাত হিসেবে পরিচিত মিগুয়েল দিয়াজ কানেলকে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করেছে। কয়েক যুগ পর এখন কমিউনিস্ট শাসিত কিউবায় কাস্ত্রো পরিবারের বাইরে নতুন নেতৃত্ব আসছে।

কাস্ত্রো পরিবারের বাইরের নেতৃত্বের কিউবা কিভাবে এগুবে, তা নিয়ে এখন অনেক আলোচনা রয়েছে। ৮৬ বছর বয়সী রাউল কাস্ত্রো অবসরে যাচ্ছেন। তিনি ২০০৮ সালে তার ভাই ফিদেল কাস্ত্রোর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।

রাউল কাস্ত্রো প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কিউবার সম্পর্ক গড়ে তা এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

তিনি দেশের ভিতরেও বেশ কিছু সংস্কার কর্যক্রম শুরু করেছিলেন।

এখন রাউল কাস্ত্রোর জায়গায় কিউবার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ কানেল মনোনীত হলেন দেশটির পার্লমেন্ট থেকে।

কিউবায় বিপ্লবের সময়ের প্রজন্ম এখন তাঁর হাতে নেতৃত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চাইছেন।

বৃহস্পতিবার কিউবার পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের ফল বা নতুন প্র্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করবে।

রাউল কাস্ত্রো প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়লেও কিউবার ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিতে তাদের প্রভাব আগের মতই বহাল থাকবে।

কে এই দিয়াজ কানেল?
মিগুয়েল দিয়াজ কানেল কিউবার ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ২০১৩ সালে।

তার আগে পর্যন্ত তিনি ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতিতে থাকলেও নিজেকে সেভাবে প্রকাশ করতেন না।

তবে তিনি প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোর খুবই কাছের মানুষ। ৫৭ বছর বয়স্ক মিগুয়েল দিয়াজ কানেল উদারপন্থী হিসেবেও পরিচিত।

তাঁর জন্ম ১৯৬০ সালে। এর এক বছর আগে কিউবায় ফিদেল কাস্ত্রো প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করেন।

কিউবার নতুন নেতা মিগুয়েল দিয়াজ কাস্ত্রো ইলেকট্রিক্যাল ইনজিনিয়ারিং এ লেখাপড়া করেছেন। বিশ বছর আগে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির যুব সংগঠনের মাধ্যমে রাজনীতিতে এসেছিলেন।

কিউবার অতীত কেমন ছিল?
১৯৫২ সা ফুলগেন্সিও বাতিস্তা একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট কার্লোস প্রিয়র সরকারকে উচ্ছেদ করেন।

বাতিস্তার সরকারের নীতি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মতই, যা ছিল কাস্ত্রোর বিশ্বাসের পরিপন্থী।

ফলে বাতিস্তা সরকারকে উৎখাতের জন্য তিনি একটি গোপন সংগঠন গড়ে তোলেন যার নাম 'দ্য মুভমেন্ট'। এসময় কিউবা পরিণত হয়েছিল উচ্ছৃঙ্খল ধনীদের স্বর্গরাজ্যে। যৌন ব্যবসা, জুয়া এবং মাদক চোরাচালান চরম আকার ধারণ করেছিল।

সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য অস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ১৯৫৩-র জুলাই মাসে সান্টিয়াগোর কাছে মোনাকাডা সেনা ছাউনিতে একটি আক্রমণের পরিকল্পনা করেন কাস্ত্রো।

আক্রমণটি ব্যর্থ হয় এবং বহু বিপ্লবী হয় নিহত হয় নয়তো ধরা পড়ে। বন্দীদের মধ্যে কাস্ত্রোও ছিলেন। ১৯৫৩ সালে তার বিচার শুরু হয়।

বিচারের শুনানিগুলো কাস্ত্রো ব্যবহার করতেন সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের ঘটনাবলী ফাঁস করে দেয়ার মঞ্চ হিসেবে।

এসময় শুনানিগুলোতে বিদেশী সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ছিল, ফলে কাস্ত্রোর জনপ্রিয়তা এসময় বেড়ে যায়।

কাস্ত্রোকে অবশ্য ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।

গেরিলা যুদ্ধ:
সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে ১৯৫৫ সালের মে মাসে জেল থেকে ছাড়া পান ফিদেল কাস্ত্রো।

জেলে থাকার সময়েই স্ত্রীকে তালাক দেন তিনি এবং মার্ক্সবাদে আরো ভালোভাবে জড়িয়ে পড়েন। ছাড়া পাওয়ার পর ফের গ্রেপ্তার এড়াতে মেক্সিকো পালিয়ে যান তিনি। সেখানে তার পরিচয় হয় আরেক তরুণ বিপ্লবী আরনেস্তো চে গুয়েভারার সঙ্গে।

১৯৫৬ সালের নভেম্বরে ১২ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ইঞ্জিন নৌকায় ৮১ জন সশস্ত্র সঙ্গীকে নিয়ে কিউবায় ফিরে আসেন ফিদেল কাস্ত্রো।

তারা সিয়েরা মায়েস্ত্রা পাহাড়ে আশ্রয় নেন এবং এখান থেকে হাভানার সরকারের বিরুদ্ধে দু বছর ধরে গেরিলা আক্রমণ চালান।

১৯৫৯ সালের দোসরা জানুয়ারি বিদ্রোহীরা হাভানায় প্রবেশ করে। বাতিস্তা পালিয়ে যান।

এসময় বাতিস্তার বহু সমর্থককে বিচারের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

এসব বিচার কার্যক্রমকে অনেক বিদেশী পর্যবেক্ষকই 'অনিরেপক্ষ' বলে মনে করেন। স্প্যানিশ ভাষাষী কিউবার এক কোটি দশ লাখের মতো মানুষ মূলত খৃষ্টান। ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে কিউবায় যে বিপ্লব হয় ১৯৫৯ সালে। তখন পশ্চিমা দুনিয়ায় কিউবাই প্রথম কম্যুনিস্ট দেশ হিসেেবে আত্নপ্রকাশ করেছিল।

এরপর ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে কিউবায় একদলীয় শাসন থাকে। তিনি শারিরীক অসুস্থতার কারণে এক দশক আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলেন ছোট ভাই রাউল কাস্ত্রোর হাতে। এখন রাউল কাস্ত্রোও অবসরে গেলেন।

কাস্ত্রো পরিবারের পরে নতুন নেতৃত্বে কিউবা কেমন হতে পারে?

ক্যারিবীয় দেশটি নতুন নেতৃত্বে একদলীয় শাসন থেকে বেরিয়ে আসবে, এমনটা ভাবতে চাননা বিশ্লেষকরা।

তবে তারা মনে করেন, একদলীয় গণতন্ত্রের পথে হাটতে পারে। ফলে বড় ধরণের কোন পরিবর্তন আসবে না বলে বিশ্লেষকরা বলছেন। ফিদেল কাস্ত্রো এখন অতীত। আর রাউল কাস্ত্রো অবসরে গেলেন। এই পরিবারের বাইরে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে অনেকের শংকা আছে।

তবে নতুন নেতৃত্বের উপর রাউল কাস্ত্রোর প্রভাব যে থাকবে, সেই আলোচনাও রয়েছে। আর নতুন নেতৃত্বকে প্রথমে দেশটির অর্থনীতির দিকে নজর দিতে হবে। সূত্র : বিবিসি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়