শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১০:২৩ দুপুর
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১০:২৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বৃহত্তর রংপুরের ২২ আসনে ভাগ দিতে চায় না জাপা

আবু হোসাইন শুভ : বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনে এবার আওয়ামী লীগকে ভাগ দিতে চায় না জাতীয় পার্টি। দলটির চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এই মিশন বাস্তবায়ন করতে এবারের এই অঞ্চল সফরে কৌশল হিসেবে কোনো ধরনের রাখঢাক ছাড়াই আওয়ামী লীগ ও সরকারবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন।

এরশাদের এমন বক্তব্যে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে প্রতিটি কর্মসূচিতে বিপুল লোকের সমাগম ঘটিয়েছে। এরশাদ নিজেও এসব জনসভায় সরকারবিরোধী বক্তব্য ছাড়াও নিজে ‘উজ্জীবিত’ হওয়ার ঘোষণা দিয়ে ‘এবারের সরকার এরশাদ সরকার’, ‘দুঃশাসনের প্রাচীর ভাঙবো সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করব’ বলে স্লোগান দিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রকাশ্যে এরশাদের আওয়ামী লীগ ও সরকারবিরোধী বক্তব্য এ অঞ্চলের ২২ আসন নিয়ে দরকষাকষির এই মিশনে এরশাদ কতটুকু স্থির থাকতে পারবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাথে মহাজোট করে বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনের মধ্যে ১৫টি জাতীয় পার্টির হাতছাড়া হয়ে যায়। এর মধ্যে আছে রংপুরে ৬টি আসনের মধ্যে ৪টি, নীলফামারীর ৪টি আসনের মধ্যে ৩টি, লালমনিরহাটের ৩টি আসনের মধ্যে ৩টি, গাইবান্ধার ৫টি আসনের মধ্যে ৪টি এবং কুড়িগ্রামের ৪টি আসনের মধ্যে ১টি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এই অঞ্চলের ২১টি আসনেই বিজয়ী হয়েছিল জাতীয় পার্টি।

রংপুর সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী এবং গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করার পর বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসন নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন জাতীয় পার্টির তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারকরা।

এই ২২ আসনে আগামী নির্বাচনে কোনো ছাড় দিতে চায় না জাতীয় পার্টি এমন কথা পার্টি প্রধানকে জানিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। তাদের এই দাবি কতটা যৌক্তিক তা সরেজমিনে দেখতে সম্প্রতি বৃহত্তর রংপুর অঞ্চল সফর করেন পার্টি প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
গত ১৪ এপ্রিল ৪ দিনের সফরে রংপুর আসেন এরশাদ। ওই দিন তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথার বলার পাশাপাশি ১৫ এপ্রিল রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল, ১৬ এপ্রিল দুপুরে নীলফামারীর জলঢাকা এবং সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের আদিতমারিতে জনসভায় বক্তব্য রাখেন।

প্রতিটি জনসভা এবং পথসভায় ছিল আকাঙ্খার চেয়েও বেশি মানুষের উপস্থিতি। মানুষ দেখে এরশাদ আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন। এসব কর্মসূচিতে তৃণমূল এবং দলীয় নীতিনির্ধারকরা বৃহত্তর ২২টি আসনে কাউকে ভাগ না দেয়ার দাবি তোলেন। এরশাদ তাদের সাথে সহমত প্রকাশ করে প্রতিটি জনসভাতেই ‘২২টি আসন উপহার দিলে-সরকার উপহার দিবো’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ ও সরকারবিরোধী বক্তব্য দেন।

সফরের প্রথম দিন ১৪ এপ্রিল রংপুর সার্কিট হাউজে এসেই এরশাদ সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আওয়ামী লীগের সাথে ভাগাভাগির বিষয়টি খোলাসা করে বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আপনি আমাদের অংশীদার করে নেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে ৭০টি আসন দিন, আর ১০ থেকে ১২টি মন্ত্রণালয় দিন। আমরা আওয়ামী লীগের সাথে শরিক হয়ে থাকতে চাই। আর আমাদের কথা মতো আসন আর মন্ত্রণালয় না দিলে আমরা এককভাবে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবো।

আওয়ামী লীগ ও সরকারবিরোধী এসব বক্তব্য প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির নবনির্বাচিত সভাপতি এস এম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর জানান, বৃহত্তর রংপুরের তিনটি জেলায় জনসভায় লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতির মাধ্যমে স্যারকে আমরা জানিয়ে দিয়েছি বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনে কোনো ছাড় দেয়া যাবে না।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা জানান, আমরা বলেছি দুই দলে একই বিষ, নৌকা আর ধানের শীষ। মানুষ আর এই দুই দলকে চায় না। বিকল্প হিসেবে জাতীয় পার্টিকে চায়। বিশেষ করে বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনে জাতীয় পার্টি আবার আগের অবস্থানে যেতে চায়। এসব আসনে কোনোভাবেই ছাড় না দেয়ার জন্য আমরা বলেছি স্যারকে।
এ ব্যাপারে রাজনীতি বিশ্লেষক রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, জাতীয় পার্টি প্রধান নানা কারণে তার বক্তব্যে সব সময় স্থির থাকতে পারেন না। এবার তিনি যেভাবে সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এই অঞ্চলে জনসভায় বলেছেন, তাতে অনেক মানুষ তার কথায় বিশ্বাস রাখতে চাইছেন। সূত্র : নয়া দিগন্ত

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়