শিরোনাম
◈ আবদুল্লাহ জাহাজে খাবার থাকলেও সংকট বিশুদ্ধ পানির ◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র

প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১০:০৫ দুপুর
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১০:০৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

উন্নয়ন ভোগান্তিতে খিলক্ষেতবাসী

আবু হোসাইন শুভ : ভোগান্তি কাটছেই না খিলক্ষেতবাসীর, জলাবদ্ধতা নিরসন কাজ শুরুর পর নতুন দুর্ভোগে তারা। বছরখানেক ধরে বন্ধ রয়েছে খিলক্ষেত রেলগেট থেকে নামাপাড়া হয়ে বরুয়া সেতু পর্যন্ত ব্যস্ততম এ সড়কটি। ফলে, হেঁটে পার হতে হচ্ছে এই দীর্ঘ পথ। শুধু খিলক্ষেত নয় এ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন বরুয়া ডুমনীসহ আশপাশের এলাকার লক্ষাধিক মানুষ।

সংস্কার কাজের ধীরগতি নিয়ে তাই প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তবে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, চলতি মাসেই এ সড়কটি সচলের চেষ্টা চলছে।খিলক্ষেতবাসীর ঢাকা অভ্যন্তরে অথবা বরুয়া ও পূর্বাচলের দিকে আসা-যাওয়ার জন্য এই একটাই সড়ক। যেখানে বাহন চলছে না, প্রায় বছর হতে চলল। দুই পা ভরসা।

রেল ক্রসিং থেকে বাজার রোড হয়ে নামাপাড়া দিয়ে বরুয়া সেতু পর্যন্ত ব্যস্ততম এ রোড। সংস্কার কাজের জন্য যেটি বন্ধ হয়ে আছে দীর্ঘদিন। মূলত জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্যই চলছে সংস্কার কাজ। কিন্তু ধীরগতির কারণে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ হয়ে উঠেছে অবর্ণনীয়। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন না তুললেও কাজের গতি নিয়ে খিলক্ষেতের জনসাধারণের আপত্তি ঢের। পাশাপাশি এ কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে।

বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে তাদের বেচাকেনা। তাছাড়া খিলক্ষেতের বাসিন্দারা অসুস্থ হলে পার্শ্ববর্তী আশিয়ান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অথবা ঢাকার অভ্যন্তরের চিকিৎসালয় কোনো স্থানেই চিকিৎসার জন্য যাওয়া-আসার সুযোগ নেই। খিলক্ষেত বাজারের ব্যবসায়ী মো. সফিক আহম্মেদ বলেন, কাজের ধীরগতির কারণে আমাদের ব্যবসা লাটে উঠতে শুরু করেছে।

রাস্তার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা এতই খারাপ যে আমাদের কেনাবেচা প্রায় বন্ধ। আর তাই এখন দোকানের ভাড়া জোগাড় করতেও অনেক কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, খিলক্ষেত বটতলা থেকে উত্তর নামাপাড়া সড়কের সদ্য সমাপ্ত নির্মাণ কাজের তুলনায় রেলগেট থেকে বরুয়া সেতু পর্যন্ত চলা কাজের মান খুব একটা খারাপ না। তবে এসব কাজে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ঢাউসিক) প্রকৌশলীরা যথাযথ মনিটর করছে না। এভাবে কাজ শেষ হলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হলেও এলাকার সমস্যার টেকসই সমাধান হবে না।

জানা যায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের দক্ষতার অভাবে যেভাবে কাজের গতি থাকার কথা সেভাবে হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রেখে উন্নয়ন কাজ চলায় স্থানীয়দের দুর্ভোগের যেন সীমা নেই। অলিগলির এবড়ো-থেবড়ো সরু পথ ধরে চলাচল করার কারণে স্থানীয়দের বাড়তি সময় এবং অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, ভাই এক অংশে কাজ চললে আরেক অংশের কাজ বন্ধ থাকছে। একদিনের কাজ শেষ করতে সময় নেয়া হচ্ছে একাধিক দিন। উন্নয়নের এই দুর্ভোগের ফলে স্থানীয়রা ঢাউসিক এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আসিফ ট্রেডার্সের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

ঢাউসিক ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ডা. জিন্নাত আলী বলেন, আর দু’টো সপ্তাহের মধ্যেই সড়কটির মান্নান প্লাজা পর্যন্ত পিট এবং বালু ফেলে সমান সচল করতে পারব। এরপর এলাকার জনগণ নিয়ে বসব কারল বনরুপা পর্যন্ত যে রাস্তাটা সেটিকে কত দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা শুরু এবং শেষ করতে পারি সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারি।

লেকসিটি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মো. শাহীন খন্দকার বলেন, বরুয়া সেতু থেকে সড়কের পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে অনেক কিছু আমার দেখার সুযোগ হয়েছে। কেবল আমিই নই এলাকার অনেকেই প্রতিদিনের কাজ দেখার সুযোগ পাচ্ছি এবং দেখছিও। সবাই দেখেছে, পাইপ স্থাপনের পর অল্প কিছু মাটি দেয়ার পর বাকি অংশ বালু দিয়ে ভরাট করার কথা হলেও সিংহভাগই মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে।

এসব প্রসঙ্গে ঢাউসিকের অঞ্চল-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন খিলক্ষেতের বাসিন্দারা জলাবদ্ধতার কষ্টের পর এখন আবার উন্নয়ন কাজে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই তারা ক্ষোভে বিতর্কিত কিছু কথা বলতে পারেন। তবে ওই কাজ যথাযথভাবে মনিটর করা হচ্ছে। মানহীন কোনো কাজ হচ্ছে বলে কেউ যদি সুনির্দিষ্টভাবে কোনো তথ্য দিয়ে প্রমাণ করতে পারে তাহলে তাৎক্ষণিক সেসব বন্ধ করে দেয়া হবে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে মেসার্স আসিফ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আবদুল হাই বলেন, কাজের মানের ক্ষেত্রে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। যতটুকু বালু দেয়ার কথা ততটুকুই দেয়া হচ্ছে। ঢাউসিকের প্রকৌশলীরা কাজের প্রতিটা স্তরই তদারকি করছেন। সাধারণ মানুষ অনুমাননির্ভর হয়ে অহেতুক কাজের ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য করছে। কাজের কোথাও সন্দেহ হলে খুঁড়ে দেখারও সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, কাজের ক্ষেত্রে ১৯-২০ হতে পারে। তবে ১৫-২০ হয়নি এটা জোর গলায় বলতে পারি।

এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে সড়ক ও পাইপ উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্প করার নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক প্রায় ২৭ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ডিএনসিসির নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্পের কার্যাদেশ ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা চলতি বছরের জুনে। কাজে গতি দেখে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। আর কাজ শেষ না হলে আগামী বর্ষায়ও চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে খিলক্ষেত ও বরুয়া এলাকার বাসিন্দাদের। সূত্র : মানবকন্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়