শিরোনাম
◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ০৫:৫৯ সকাল
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ০৫:৫৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিএনপির মনোযোগ কোন দিকে?

তারেক : বিএনপিবিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তি আন্দোলন তরান্বিত করার দৃশ্যমান কোনও উদ্যোগ নেই দলটিতে। নতুন কোনও কর্মসূচি না দিয়ে খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনই মুখ্য হয়ে উঠেছে দলটিতে। এ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে খোদ বিএনপিতে। কোনও কোনও নেতা মনে করছেন, বিএনপির মনোযোগ খালেদা জিয়ার মুক্তির চেয়ে নির্বাচনের দিকেই বেশি। এমনকী একটি অংশ খালেদা জিয়াকে ছাড়াই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে ভেতরে-ভেতরে প্রস্তুতিও নিচ্ছে।

বিএনপির নেতারা বলছেন, দলীয়ভাবে মনোযোগের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার বিষয়টিই শীর্ষে রয়েছে। যদিও কৌশলগত কারণে সিটি নির্বাচনকে সামনে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনও তরান্বিত হবে, তবে এর জন্য সময় প্রয়োজন। অন্তত আরও ৩ মাস অপেক্ষা করে জুনের পর কর্মসূচি কঠোর করবে বিএনপি।

নেতাদের ভাষ্য, সরকারের নির্বাচনকেন্দ্রিক মেরুকরণই আন্দোলনের নতুন মাত্রা তৈরি করবে। আর তারা ওই পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করছেন।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে স্থায়ী কমিটির দুই সদস্যের নেতৃত্বে দু’টি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করা হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রশ্ন তুলেছেন কৌশল নিয়ে। রাজধানীতে একটি সভায় তিনি বলেছেন, ‘কৌশলের কথা বলেন। এখানে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কৌশল একটাই, রাস্তায় নামা, জনগণ রাস্তায় নামবে। এটাই কৌশল।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শাইরুল কবির খান বলেন, ‘ইতোমধ্যে দুই কমিটির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এরমধ্যে গাজীপুরে আজ প্রস্তুতি সভা হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও অন্য সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।’

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জেলে যাওয়ার পর থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে। এরমধ্যে গণস্বাক্ষর, প্রতীকী অনশন, অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন ও লিফলেট বিতরণ ছিল। এছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও বরিশালে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে। ঢাকায় চারবার অনুমতি চাইলে ডিএমপি সমাবেশের কোনও অনুমতি দেয়নি। এর বাইরে পোস্টার ছাপানো হলেও কর্মসূচিতে নতুন কোনও সংযুক্তি আসেনি।

গত ২ এপ্রিল দলের স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা কাউন্সিল, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের বৈঠকে আন্দোলন বেগবান করার পরামর্শ আসে। শান্তিপূর্ণ ধারায়ই আরও গতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। যদিও পরবর্তী দুই সপ্তাহে কোনও অগ্রগতি প্রতিফলিত হয়নি।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) এক সভায় জোর দিয়েই বলেছেন, ‘যেই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই, সে সরকারের চারিত্র্যিক বৈশিষ্ট্যগুলো নতুন করে বুঝতে হবে? এই সরকারের বিরুদ্ধে এই জাতীয় প্রতিবাদ, এই জাতীয় আন্দোলন দিয়ে নেত্রী মুক্তি পাবেন? এটা আশা করেন?’

যদিও বিএনপিনে তাদের ভাষ্য ছিল, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে খালেদা জিয়ার মুক্তিই প্রথম শর্ত। আর তার মুক্তির মধ্য দিয়েই নির্বাচনের বিষয়ে যাত্রা শুরু করবে বিএনপি। এরইমধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে সরকারের অনীহা রয়েছে। আর এই অনীহা নির্বাচন পর্যন্ত প্রলম্বিত হবে। আর এ শঙ্কার বিষয়টি মাথায় রেখেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন প্রবীণ সদস্যের আগাম বার্তা, ‘শেষপর্যন্ত খালেদা জিয়া মুক্তি না পেলে, তাকে ছাড়াই বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে হবে।’

আর এখানেই গয়েশ্বর চন্দ্রের বিরোধিতা। তিনি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক মহলে বিরোধী দল বলতে এখনও বিএনপিকেই বোঝে। আর বিএনপিকে যদি নির্বাচনে নামানো যায়, তাহলে সে নির্বাচন যেভাবেই হোক না কেন, হাসিনার ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বৈধতা আর আগামী নির্বাচনের বৈধতা দু’টি একসঙ্গে পাবে। এখন বিএনপি কি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অবৈধ সরকারের অবৈধ কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়ার জন্য?’ তিনি এও বলেন, ‘তাহলে সরকার এই বাগাড়ম্বরা করে কীভাবে?’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যা বলেছেন, তা একান্ত তার ব্যক্তিগত। বিএনপির কাছে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিই একমাত্র। আর একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে। এটি দিনে-দিনে আরও বাড়বে।’

পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এখনকার পরিস্থিতি নব্বইয়ের গণআন্দোলন বা শেখ মুজিবের সময়কার পরিস্থিতি এক নয়। সচরাচর আন্দোলনের সঙ্গে এখনকার অন্দোলনের পার্থক্য আছে। খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এটা অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক। এই আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একেবারেই নতুন। আর এ কারণেই অনেকের কাছে মনে হতে পারে, বর্তমান আন্দোলন ম্রিয়মান।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভাইস চেয়ারম্যানের ভাষ্য, ‘আরও তিনমাস আছে। নতুন নতুন কিছু ঘটনা আসছে। আমরাও সেগুলো গ্রহণ করছি। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন এভাবেই চলবে। সরকারের নির্বাচনকেন্দ্রিক মেরুকরণের দিক থেকেই আন্দোলন নতুন মাত্রা পাবে। আর মাত্রাটা হচ্ছে আওয়ামী লীগ বনাম বাকি সব দল।’ নির্বাচনটাকে আন্দোলনে রূপ দেওয়ান সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই নেতা।

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া কোনও নির্বাচন নয়।’

বুধবার বিকালে এক সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘কঠোর আন্দোলনে না গিয়ে বিএনপি এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের অস্ত্রকে শানিত করছে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে জোরদার আন্দোলন আসছে।’

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এম হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘চলমান আন্দোলনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ত্বরান্বিত হবে না, মুক্তি একমাত্র হতে পারে আইনি কার্যক্রমের মাধ্যমে। আমরা সেই চেষ্টা করছি। নির্বাচন যখন কাছে আসবে, পরিবেশ যখন উত্তপ্ত হবে, তখন বিএনপি শক্ত কর্মসূচি দেবে। আর ওই সময়ই আমরা অলআউট আন্দোলনে যাবো।’ সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়