খোকন আহম্মেদ হীরা,বরিশাল: স্বীকৃত কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ ছাড়াই দেদারসে দাঁতের সব ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন বরিশাল সদর হাসপাতালের সামনে মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি।
সেইসাথে সদর হাসপাতালে দাঁতের চিকিৎসা নিতে আগত রোগীদেরকে দালালের মাধ্যমে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে ভাগিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেছে কয়েকজন সেবিকা।
মিজানের চেম্বারে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। সেখানে তার (মিজান)’র চেম্বারের সাইন বোর্ডে কোন ডিগ্রি বা সনদের নাম উল্লেখ নেই। উপরন্ত তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বার বার চা পানের আপ্যায়ন জানান।
সূত্রমতে, সদর হাসপাতালের সামনে ‘মিনার ডেন্টাল কেয়ার’ নামে দাতের চিকিৎসার এই চেম্বারটি দিয়েছে কয়েক বছর পুর্বে। সেখানে তার নিজের কোন ডিগ্রি বা পদবীর কথা উল্লেখ নেই একইসাথে দাতের চিকিৎসা দেবার মত কোন আধুনিক মেশিন নেই, ফলে রোগীর আগমন শুন্যের কোঠায় পৌছে যায়। এতে তার অর্থ লাভে ভাটা পড়ে তাই দালালদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে প্রতিদিন রোগী আগমনের উপর কমিশন দেয়া হয়।
দালালচক্র পারশ্বর্তী সরকারি জেনারেল হাসপাতাল(সদর)এ দাতের চিকিৎসা নিতে আগত রোগীদের ভাগিয়ে নিয়ে আসে মিজানের চেম্বারে। ভুক্তভোগী এক রোগী জানায়,৭ ফেব্রুয়ারী জাহানারা নামের এক মহিলা দাতের চিকিৎসা নিতে সদর হাসপাতালে গেলে, পথেই তার সাথে দেখা হয় মিনার ডেন্টাল কেয়ারের এক দালালের সাথে।
ওই দালাল তাকে জানায় সদর হাসপাতালে দাতের ভাল চিকিৎসা হয়না। তারচেয়ে মিনার ডেন্টাল কেয়ারে ডিগ্রিধারি চিকিৎসক রয়েছে, সেখানে গেলে ভাল সেবা পাবেন,তাছাড়া টাকাও লাগবে কম। এভাবে ফুসলিয়ে মিনার ডেন্টালে নিয়ে যায়। তবে,দাতের যে সমস্যা নিয়ে সেখানে গিয়েছিল তা ভাল হয়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে সদর হাসপাতালের একাধিক সেবিকা জানায়, ওই চেম্বারের দালালদের জন্য কোন রোগী হাসপাতালে ঢুকতে পারেনা। দুর দুরান্ত থেকে আগত রোগীদের দেখলেই যে কোন প্রকারে হোক কৌশল খাঁটিয়ে হাসপাতালের সামনের চেম্বারে নিয়ে যায়। এদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছি।
সুত্র মতে,দাতের চিকিৎসা দেয়া চিকিৎসকের বিডিএস(৫)বছরের ডিগ্রি অথবা(৪)বছরের ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারি হতে হবে। পাশাপাশি,বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) কর্তৃক রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্তি সাপেক্ষে দেশের যে কোন স্থানে দাতের সব ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদানের অনুমতিপ্রাপ্ত হবে। অন্যথায় কোন ক্রমেই এ ধরনের চিকিৎসা বিশেষ করে প্রাইভেট প্রাকটিস করতে পারবেনা বলে নির্দেশনা রয়েছে।
এদিকে মিজানুর রহমানের এ ধরনের কোন ডিগ্রি বা রেজিষ্ট্রেশন নেই বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। বিষয়টি নিয়ে মিজানুর রহমানের সাথে সেল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। গতকাল সকালে তার চেম্বারে গিয়ে রোগীর ব্যবস্থাপত্র লিখতে দেখা গেছে, তবে সংবাদকর্মীর উপস্থিতি টের পেয়ে চেম্বার বন্ধ করে সটকে পড়ে। এমনকি রাতে তার চেম্বারটি আর খোলা হয়নি।
বিষয়টি সম্পর্কে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডা.মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন দালালদের বিষয়ে তিনি শুনেছেন, খুব শীঘ্রই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। এ বিষয়ে বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন জানান, খুব শীঘ্রই খোজ খবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :