শিরোনাম
◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী 

প্রকাশিত : ১৬ এপ্রিল, ২০১৮, ০৯:৫৫ সকাল
আপডেট : ১৬ এপ্রিল, ২০১৮, ০৯:৫৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সরকারি হাসপাতালগুলোতে বেশিরভাগ লিফট অকেজো

ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোর অধিকাংশ লিফটই হয় বন্ধ কিংবা রোগীরা সেটা ব্যবহার করতে পারছেন না। অসুস্থ ব্যক্তিদের বহুতল ভবনে ওঠা-নামা করানো হচ্ছে টলির মাধ্যমে। প্রায় ৯০ শতাংশ লিফটের কোনো অপারেটর নেই। এক তৃতীয়াংশ লিফট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কোথাও কোথাও অপারেটর থাকলেও তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছেন না।

সরকারি হাসপাতালের আরেকটি বিড়ম্বনার নাম হলো অকেজো লিফট। তাছাড়া রোগীর উঠা-নামার কাজে ব্যবহৃত সচল লিফটগুলো ব্যবহার করছে ডাক্তাররা। অপারেটরের অভাবে বেশ কিছু লিফট বন্ধ রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণে ত্রুটি ও নিম্নমানের যন্ত্র সংযোজনের ফলে কিছুদিন ব্যবহারের পরেই অধিকাংশ লিফট অকেজো হয়ে যায়। গত দুই-তিন সপ্তাহ সরকারি হাসপাতালগুলো ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৫ টি লিফট আছে। এগুলোর বেশির ভাগই ডাক্তাররা ব্যবহার করছেন। কোনো অপারেটর নেই। একাধিক রোগী, রোগীর স্বজন ও হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন সার্জারি বিভাগে তিনটি লিফটের একটি ও কেবিন ব্লকে দুটির মধ্যে একটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট। এছাড়া বার্ন ইউনিটে দুটি বিল্ডিংয়ে সাতটি, নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগে একটি খুবই দুর্বল গতিতে চলে। এটির দুর্ঘটনায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেন, ঢামেকের কেবিন ব্লকের লিফটের দরজা খুলতে দীর্ঘ সময় লাগে। বাটনগুলো ঠিকমতো কাজ করে না। জরুরি বিভাগ থেকে সার্জারি বিভাগে যাওয়ার লিফটের একই চিত্র। অধিকাংশ লিফট চলার সময় সজোরে ঝাঁকুনি দেয়। লিফটে ইমার্জেন্সি কলের ব্যবস্থা নেই। এদিকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১টি লিফট আছে। রোগীর চাপ বেশি থাকায় নির্ধারিত ধারণ ক্ষমতার চেয়েও বেশি মানুষ ওঠা-নামা করে। ফলে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি থেকে যায়।

৮৫০ শয্যার সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যালের হাসপাতালের মূল ভবনে দুইটি লিফট আছে। একটি সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এবং অন্যটি বেলা ২টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত চলে। এ কাজের জন্য চারজন লিফটম্যান থাকলেও সেখানে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায়নি। অপারেটর না থাকায় লিফটি সচল কি না তাও জানে না রোগী ও রোগীর স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, এতবড় হাসপাতালে মাত্র দুটি লিফট, তার একটি বন্ধ রাখা অন্যায়। এ হাসপাতালে বিকল্প ঢালু সিঁড়িও নেই। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের ছয়টি লিফট রয়েছে। ওটির লিফট ১০ বছর যাবৎ বন্ধ। বাকি পাঁচটির মধ্যে দুটি নষ্ট। তিনটি লিফটে রোস্টার সিস্টেমে ১৫ জন অপারেটর থাকলেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় না। এ হাপাপাতালের অপারেটর সোবহান হোসেন বলেন, স্থায়ীভাবে যারা অপারেটরে নিয়োগ পেয়েছিল, তারা অন্য জায়গায় কাজ করছে। আমি নিজেও বহির্বিভাগে ১১১নং কক্ষের ডাক্তারের কম্পাউন্ডার হিসেবে কাজ করছি। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১৫ জন অপারেটর থাকলেও তদারকির অভাবে তারা দায়িত্ব পালন করে না।

কিডনি ইনস্টিটিউটের তিনটি লিফটের মধ্যে একটির সেন্সর বাটন কাজ করে না। মাঝে মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। নতুন ভবনের কাজ করার এক বছর আগে আরেকটি লিফট বন্ধ রাখা হয়েছে। এ লিফটগুলো সরবরাহ কোম্পানি মাধ্যমে তিনজন লোক দিয়ে চালানো হচ্ছে।

একইভাবে মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চারটি লিফট আছে। এর মধ্যে ২০১২ সাল থেকে দুটি নষ্ট। ২৫০ শয্যার শ্যামলী টিবি হাসপাতালে দুইটি লিফটের একটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ। ঢাকা শিশু হাসপাতালের নতুন ভবনে দুই বছর ধরে কার্যক্রম চললেও একটি লিফট বসানো হয়নি। পুরাতন ভবনে দুইটি লিফট থাকলেও অনেক পুরান হওয়ার মাঝে মধ্যে নষ্ট হয়। তবে এগুলোর জন্য সার্বক্ষণিক অপারেটর আছে। পাশেই জাতীয় অর্থোপেডিকস হাসপাতালে চারটি লিফটের মধ্যে একটি নষ্ট থাকায় লিফট অপারেটরকে দিয়ে অন্য কাজ করানো হচ্ছে।

একাধিক লিফট আমদানিকারক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে দুই ধরনের লিফট ব্যবহার করা হয়। সরাসরি কোম্পানি থেকে আমদানি করা লিফটকে ইনটেক এবং বিভিন্ন কোম্পানির যন্ত্রাংশ সংযুক্ত করে তৈরি করা লিফটকে ক্লোন লিফট বলা হয়। দামে কম হওয়ায় সাধারণত বেশিরভাগ ক্লোন লিফট সরবরাহ করা হয়। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইনটেক মেশিন বেশি ব্যবহৃত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ পেতে অনেক তদ্বির লাগে। বিভিন্ন পর্যায়ে অগ্রিম ‘কমিশন’ দিতে হয়। এ হার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। বিভিন্ন পর্যায়ে ঘুষ ও নিজেদের লাভের কথা চিন্তা করে ইনটেক লিফট না লাগিয়ে রিকন্ডিশন লিফট ব্যবহার করতে হয়। এ জন্যই সরকারি প্রতিষ্ঠানের লিফট অল্পদিনেই নষ্ট হয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, ব্যবস্থাপনার জটিলতার কারণেই সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঠিকমতো লিফট সার্ভিসিং করানো হয় না। ঠিক সময়ে সার্ভিসিং করালে অধিকাংশ লিফটে দুর্ঘটনা ঘটত না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়