শিরোনাম
◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ১৫ এপ্রিল, ২০১৮, ০৪:১২ সকাল
আপডেট : ১৫ এপ্রিল, ২০১৮, ০৪:১২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমাদের নববর্ষের প্রাপ্তি শূণ্যের কোটায়

ড. সৌমিত্র শেখর : দিনপঞ্জিকার পৃষ্ঠা ঘুরে পহেলা বৈশাখ সমাগত। কিন্তু বাঙালীর জাতীয় জীবনে এই বৈশাখ শুধুই একটি দিন মাত্র। নববর্ষ একটি দিনেই শুধু আমরা উদযাপন করে থাকি। বাঙালী হারিয়ে ফেলেছে তার ঐতিহ্য ধীরে ধীরে। অবক্ষয়ের অতল গহ্বরে চলে যাচ্ছে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, আমাদের নিজস্ব পরিচয়। যেদিন থেকে পঞ্জিকা সংস্কার করে ১৪ এপ্রিল কে পহেলা বৈশাখ ঘোষণা কর হলো, এবং বছরের পর বছর খৃষ্টিয় ১৪ এপ্রিল মাত্রই পহেলা বৈশাখ হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, সেই দিনই গলা টিপে ধরা হলো আমাদের একটি জীবন্ত দিনপঞ্জিকাকে। দিনপঞ্জিকা সারা বিশ্বেরই দিনপঞ্জিকা, জীবন্ত দিনপঞ্জিকা। তার ক্ষয় ও বৃদ্ধি থাকে।

সব ক্যালেন্ডারেই ক্ষয় বৃদ্ধি থাকে, ২৮ দিনেও মাস আছে, ২৯ দিনেও মাস আছে। হিজরি ক্যালেন্ডারের কথা যদি বলি, সেখানেও দেখি চাঁদ উঠলে রোজা হয়, চাঁদ উঠলে ঈদ হয়। ঠিক তেমনি আমাদের বঙ্গিয় দিনপঞ্জিকা বা বাংলা ক্যালেন্ডার, সেখানেও দিনের ক্ষয় বা বৃদ্ধি ছিল। আমাদের ২৯ দিনেও মাস ছিল, ৩২ দিনেও মাস ছিল। কারণ, স¤্রাট আকবরের সময় যে নবরতœরা এই ক্যালেন্ডার তৈরি করেছিলেন, তারা নক্ষত্রের গমনাগমন কে কেন্দ্র করে এই মাস গুলো নির্বাচন করেছিলেন। সব মাসের নামকরণ করেছিলেন। রাজনৈতিক কারণে যখন আমাদের এই দিনপঞ্জিকা সংস্কারের নামে ১৪ এপ্রিল কে শুধুই আমাদের নববর্ষ ঘোষণা করা হলো, সেখান থেকেই আমাদের অবক্ষয়ের চুড়ান্ত সূচনা। আজকে বাঙালী জীবনে নববর্ষের পরে, বাংলা সনের আর প্রয়োজন পড়ে না। বাঙালীরা তাদের জাতীয় জীবনে বঙ্গিয় এই দিনপঞ্জিকা ব্যবহার করে না।

ব্যক্তগত আচার অনুষ্ঠানে, তাদের বিয়ে, আকিকা কিংবা অন্য অনুষ্ঠানে নব্বই শতাংশ বাঙালী বাংলা সন কে তাদের ব্যক্তিগত ব্যবহারে রাখে না। রাষ্ট্রীয় ব্যবহারেও থাকে না। শুধুই সম্প্রতি দু’একটি অফিস আদালতে বা কার্যালয়ে এই দিনপঞ্জিকা চালুর চেষ্টা হচ্ছে, তবে সেটি খুবই সীমিত। আজকে পহেলা বৈশাখের নামে যে ১৪ এপ্রিল পালন হয়, ওই দিনে কর্পোরেট দুনিয়া আমাদের সাংস্কৃতিটাকে কিনে নেয়। তারা তাদের পণ্য নিয়ে আসে, কিন্তু সেখানে উপেক্ষিত থাকে আমাদের কৃষক, কৃষাণী। এই যে পহেলা বৈশাখ, একসময় আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক উল্লাস দেখা দিত।

আমাদের কৃষাণীরা তাদের হাতের কাজ নিয়ে সেখানে উপস্থিত হতেন, আজকে সেটি তাদের হাতের বাইরে চলে গেছে। আজকে কামার কুমোর দের হাতে গড়া জিনিস বাজারে উঠোয় না। আজকে কর্পোরেট দুনিয়ার কোমল পানিয় প্যাকেট করে বিনামুল্যে বিতরণ করা হয়, যাতে বছর ব্যাপি তারা এই পণ্য বিক্রি করতে পারে। পোশাকের নামে আজকে রঙ বেরঙের পোশাক বিক্রি হয় বটে, কিন্তু সেখানে আধুনিকতার নামে উম্মাদনা ছাড়া কিছুই দেখা যায় না। ফলে, আমাদের নববর্ষের প্রাপ্তি শুণ্যের কোটায়। আমরা পাশ্চাত্য সংস্কৃতির গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাচ্ছি এখন।

পরিচিতি : কলামিষ্ট, প্রাবন্ধিক, অধ্যাপক (বাংলা বিভাগ), ঢাবি/মতামত গ্রহণ : মাহবুবুল ইসলাম/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়