প্রতিনিধি : দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ। পহেলা বৈশাখের দিনেও অন্যান্য দিনের মতোই কাজ করছেন প্রকল্পে কর্মরত প্রকৌশলীরা। তবে নিজ উদ্যোগ কিংবা সংঘবদ্ধ হয়ে পান্তা-ইলিশের আয়োজন করেছেন তাদের অনেকেই।
সারাদেশের মধ্যে ব্যাপক সুনাম ও খ্যাতি রয়েছে পদ্মার ইলিশের। আর সেই ইলিশের সঙ্গে পান্তার স্বাদ পহেলা বৈশাখের আনন্দকে আরো বাড়িয়ে তোলে। তারপরও দেশের সবচেয়ে বড় এ প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রকৌশলীরা দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত এখন। পরিবার-পরিজন নিয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন শতভাগ আনন্দের হলেও পদ্মাসেতুর দিকে তাকিয়ে থাকা এদেশের মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারা নিজেদের আনন্দ ও সুখ ত্যাগ করে কাজে লেগে আছেন।
সকাল এবং রাত, দুই শিফটের মাধ্যমে কাজ চলছে সেতুটির। ২৪ ঘণ্টাই প্রকল্পে কাজ চলমান থাকে। রাতের শিফটে যেসব প্রকৌশলী কাজ করেছেন, তারা সকালে পান্তা-ইলিশ খেয়েছেন। তবে সকালে যারা কাজে বেরিয়েছেন, তারা কোনো আয়োজন করতে পারেননি।
এদিকে, ওই প্রকল্পে ঈদের দিনও কাজ বন্ধ থাকে না বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ছুটি পাওয়া প্রকৌশলী আহাদ-উর-রহমান বলেন, এখানে যেকোনো বিশেষ দিন-অনুষ্ঠানেও প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকে না। তবে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তিন দিনের ছুটি পেয়েছি আমি। পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছি পরিবার নিয়ে।
জানা গেছে, পদ্মাসেতু প্রকল্পে বৈশাখ উপলক্ষে কোনো আয়োজন করা হয়নি। বিশেষ কোনো দিনেও এখানে কোনো অনুষ্ঠান হয় না। তবে রাতের শিফট শেষ করে যারা বাসায় ফিরেছেন, তারা সকালে ঘরোয়াভাবে পান্তা ইলিশের আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু যারা সকালে কাজে চলে গেছেন, তাদের কাছে অন্যান্য দিনের মতোই পহেলা বৈশাখটিও।
এদিকে, এ প্রকল্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনী নিজেদের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখের আয়োজন করেছে। সেখানে নিরাপত্তায় থাকা দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পদ্মাসেতু প্রকল্পের কিছু সংখ্যক প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা পরিবার নিয়ে পহেলা বৈশাখেও থেমে নেই পদ্মাসেতুর কাজ অংশ নেন।
পদ্মাসেতু প্রকল্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিক বলেন, মাওয়া সেনানিবাস এলাকায় পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি নিয়ে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় অনেকগুলো স্টল অংশ নেয়। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও ইতোমধ্যে পদ্মাসেতু প্রকল্পে ২২টি পিলারের নকশা জটিলতার সমাধান হয়েছে। এখন প্রকৌশলীদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার আশা। স্টিল স্ট্রাকচারের দ্বিতল পদ্মাসেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। সেতুর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন আর ওপরে হবে সড়কপথ। নিজস্ব ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকায় ব্যয় হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামোটিতে। সেতুটির নির্মাণ শেষ হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে সরাসরি যুক্ত হবে রাজধানী ঢাকা।
আপনার মতামত লিখুন :