ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট রয়েছে। এ ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করায় ‘উন্নয়ন’ দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।
রয়েছে মশা-মাছির উপদ্রব। অনেক স্থানে বসে মাদকের আড্ডা। অলিগলি ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। যেখানে সেখানে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। নেই কোনো সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস)।
শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য নেই বিনোদন পার্ক। স্থানীয় কাউন্সিলরের দাবি, যারা খোঁড়াখুঁড়ি করছেন তাদের দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ দিলেও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
ওয়ার্ড পরিচিতি : প্রায় এক লাখ ২৩ হাজার ভোটার অধ্যুষিত ডিএসসিসি ৮ নম্বর ওয়ার্ড। ওয়ার্ডে হোল্ডিং রয়েছে প্রায় ১৬০০। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মতিঝিল ও কমলাপুরের আশপাশের বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি, সোনালী ব্যাংক কলোনি, আরকে মিশন রোডের আংশিক, গোপীবাগ, কমলাপুর, মতিঝিল রেলওয়ে ব্যারাক, জসীমউদ্দীন রোড নিয়ে এ ওয়ার্ড।
দক্ষিণ কমলাপুর এলাকায় অলিগলির ভেতরে চলছে সিটি কর্পোরেশনের ময়লা পানি নিষ্কাশনের কাজ।
কিন্তু ধীরগতিতে কাজ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ। কিছু স্থানে ড্রেনের কাজ শেষ হলেও এখনও বসানো হয়নি ঢাকনা। এ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা রয়েছে। সড়কের পাশের এক হোটেল মালিক বলেন, এ ড্রেনের কাজ শুরু হয়েছে ডিসেম্বরে। কিন্তু এখনও শেষ হয়নি।
খুব নাজেহাল হতে হচ্ছে। দোকানে খুব কম ক্রেতা আসেন। কমলাপুর কবরস্থান রোডের গলির ভেতরেও এমন দৃশ্য। পাশেই ড্রেনের ময়লা স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
এক মুদি দোকানদার বলেন, এ ময়লা এখানে এক মাস আগে তুলে রাখা হয়েছে। মতিঝিল মধুমিতা সিনেমা হলের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ফুটপাতের ড্রেনের কাজ শেষ করা হলেও এখনও বসানো হয়নি ঢাকনা। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
শুভ নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, এ এলাকায় পানির সমস্যা খুবই প্রকট। যা একমাস ধরে বেশি। খাবার পানি থেকে শুরু করে রান্নাবান্নার পানিও কিনে আনতে হয়। এক ট্রাক পানি ৬০০ টাকায় কিনতে হয়। যা সবার জন্য সম্ভব হয় না। পানির পাশাপাশি গ্যাসের সমস্যাও প্রকট।
সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারের আশপাশের অলিগলির সংস্কারকাজ করা হচ্ছে না। যত্রতত্র পার্কিং করে রাখা হয় বিভিন্ন অফিসের স্টাফবাস। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এক ট্রাকচালক বলেন, শুধু আমরা নই, এ রাস্তা দিয়ে অনেক ভিআইপি মতিঝিলে যান। রাস্তাটি যদি নতুন করে কার্পেটিং করা হয় সবার জন্য উপকার হবে।
গোপীবাগ টিঅ্যান্ডটি পাড়া রেলওয়ে কলোনি এবং গোপীবাগ রেলগেট এলাকায় বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ এলাকায় দিনদুপুরে চলে মাদক বেচাকেনা।
বিশেষ করে রেললাইনের আশপাশেই প্রকাশ্যে মাদক সেবন করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, এখানে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট আছে। যারা মাদক বেচাকেনা নিয়ন্ত্রণ করে।
কাউন্সিলর যা বললেন
ডিএসসিসি ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী মো. সুলতান মিয়া বলেন, আমার ওয়ার্ডের পানি ও গ্যাসের কিছু সমস্যা ছিল। অনেক সমস্যা কমে গেছে। অনেক জায়গায় পানিতে গন্ধ রয়েছে।
এর থেকে পরিত্রাণের জন্য তিনি নতুন পাইপলাইন বসানোর ওপর জোর দেন। তিনি দাবি করেন, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজে নিুমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। মাটির তল থেকে যেসব ইট খোয়া উঠানো হচ্ছে সেগুলো দিয়ে আবার ঢালাই দেয়া হচ্ছে। দেখার এবং বলারও যেন কেউ নেই।
রাস্তার কাজটা শেষ হলে সব রাস্তা নতুন করে কার্পেটিং করা হবে। এলাকায় যে মাদক ছিল তা এখন নেই বললেই চলে। স্টেশন এলাকায় কিছু ভ্রাম্যমাণ মাদকসেবী আছে, তাদের ধরে পুলিশে দিচ্ছি। আমি সবাইকে নিয়ে একটি মডেল ওয়ার্ড গড়তে চাই। সূত্র : যুগান্তর
আপনার মতামত লিখুন :