লিহান লিমা: ২০১৮ সালে ইরাক যুদ্ধের ১৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে। ২০০৩ সালে গণবিধ্বংসী রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদের অভিযোগ এনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে একত্রিত হয়ে ইরাক হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাবেক ব্রিটিশ প্রেসিডেন্ট টনি ব্লেয়ার। সেই সিদ্ধান্তের সময় পার্লামেন্টের ভোটেরও তোয়াক্কা করেননি তিনি।
সম্প্রতি সিরিয়ার জনগণের ওপর বাশার আল আসাদ সরকারের রাসায়নিক হামলা ইস্যুতে দেশটিতে সরাসরি ব্রিটেনের সামরিক হামলার পক্ষে সাফাই গাইলেন টনি ব্লেয়ার। তিনি বলেন, সিরিয়ায় হামলা চালাতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে'র পার্লামেন্টের অনুমতির প্রয়োজন নেই, কিন্তু থেরেসা মে বলেন, সুস্পষ্ট প্রমাণ ও হাউস অব কমন্সের অনুমতি ছাড়া সামরিক হামলা চালাবেন না তিনি। বলাই যায়, ইরাক যুদ্ধের ভুল যেন দ্বিতীয়বারের মত না হয় তা নিশ্চিত করতে চাইছেন ম্যাডাম ব্রেক্সিট খ্যাত থেরেসা।
অন্যদিকে নিজের অবস্থান ব্যাখা করতে টনি বলেন, ব্রিটেনের আসাদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালানো উচিত। যদি যুক্তরাষ্ট্র পদক্ষেপ গ্রহণ করে তবে আমাদেরও তাদের সঙ্গে থাকার প্রস্তুতি নেয়া উচিত। আমাদের অনুপস্থিতির সুযোগে ইতোমধ্যে আসাদ সরকার তার সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে সেখানে জিতে যাচ্ছে। ইরাক এবং আফগানিস্তান আমাদের দেখিয়েছে হস্তক্ষেপ কঠিন কিন্তু সিরিয়া ইস্যুতে আমরা দেখছি হস্তক্ষেপ না করার নীতিও চরম কঠিন।
টেরি দলের এমপি অ্যান্ড্রু ব্রিজেন বলেন, ‘ব্লেয়ার ইরাকের ব্যর্থতা ঢাকতে সিরিয়াকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ইরাকে নিজের অবৈধ হস্তক্ষেপে তিনি জনগণের যে ঘৃণা কুঁড়িয়েছেন তা কাটাতে কিংবা নিজের বৈধতা দেখাতে তিনি ব্রিটেনকে আরেকটি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক শান্তিদূত হয়েও তিনি কিছু করতে পারেন নি আর এখন নতুন করে ইতিহাস লিখতে চাইছেন।’
এর একদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে একজোট হয়ে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, ইরাক যুদ্ধের ১৩ বছর পর ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ইরাক যুদ্ধে ব্রিটেনে ভূমিকা বিচারে চিলকট কমিশনের প্রতিবেদনে জানা যায়, ইরাক যুদ্ধ ভুল ছিল। চাইলেই ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই যুদ্ধ এড়াতে পারত। কিন্তু তা করা হয় নি। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর টনি ব্লেয়ার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ ও ঘৃণার মুখে পড়েন। ডেইলি মেইল।
আপনার মতামত লিখুন :