শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ১১ এপ্রিল, ২০১৮, ০৭:৫৩ সকাল
আপডেট : ১১ এপ্রিল, ২০১৮, ০৭:৫৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘সার্ক এখনও মারা যায়নি, কোমায় আছে’

আবু হোসাইন শুভ:  ‘সার্ক’ বা দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের ভাবনা নিয়ে এখন যে আদৌ এগোনো সম্ভব নয়, ভারত সফররত নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে দিল্লি তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে। পাকিস্তানে দুই বছর আগেই সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও মূলত ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের জেরেই তা হতে পারেনি এবং অদূর ভবিষ্যতে যে তা হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই সেটাও ভারতের এই অবস্থান থেকে পরিষ্কার। সার্কের পরিবর্তে ভারত এখন ‘বিমস্টেক’ বা ‘বিবিআইএনে’র মতো বিকল্প জোটগুলোর ওপর বেশি গুরুত্ব আরোপ করলেও পর্যবেক্ষকরা অবশ্য বলছেন সার্কের মৃত্যু পরোয়ানা লিখে দেওয়ার সময় আসেনি- আর সেটা উচিতও হবে না।

প্রায় চার বছর আগে ২০১৪ সালের নভেম্বরে সার্কের শেষ শীর্ষ সম্মেলন হয়েছিল নেপালের কাঠমান্ডুতে। সেই নেপালের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি যখন এবার দিল্লি সফরে সার্কের প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন তখন ভারত জানিয়ে দিল যে, পাকিস্তান যেভাবে সীমান্ত-পারের সন্ত্রাসবাদে মদত দিয়ে চলেছে তাতে তারা একেবারেই নিরুপায়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলের কথায়, প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন তিনি খুব উত্সাহের সঙ্গেই কাঠমান্ডুর সার্ক সামিটে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু যেভাবে সীমান্তের অন্য পার থেকে সন্ত্রাসবাদে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে এবং এই অঞ্চলে একটি শক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতে সার্কের উদ্যোগ নিয়ে এগোনো আমাদের পক্ষে খুবই কঠিন।

সার্কের দরজা আপাতত বন্ধ করে দিয়ে ভারত যে বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে বিমস্টেক জোট কিংবা বাংলাদেশ-ভুটান-নেপালকে নিয়ে বিবিআইএনে-ই বেশি সম্ভাবনা দেখছে, সেটাও কোনও গোপন কথা নয়। তবে দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো জয়িতা ভট্টাচার্য মনে করেন, এগুলো ঠিক সার্কের বিকল্প নয় বরং পরিপূরক। তিনি বলেন, আমি মনে করি আমাদের ন্যারেটিভটা বদলানোর প্রয়োজন আছে। বিমস্টেক বা বিবিআইএন-কে সার্কের পরিপূরক হিসেবে দেখা দরকার আর সে রাস্তাতেই এখন এগোনো উচিত। তবে সার্ক এখন হচ্ছে না মানে আর কোনও দিনই হবে না এমনটা কিন্তু বলা যায় না। বড় জোর বলতে পারি সার্ক সাসপেনশনে আছে - কারণ জিওপলিটিক্স নিয়ত বদলাতে থাকে, একটা সহযোগিতা জোট চিরতরে পরিত্যক্ত বলাটা ঠিক নয়!

কিন্তু দুই বছর আগে পাকিস্তানে সার্ক সামিট বয়কটের প্রশ্নে যেভাবে বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কাও ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছিল- জোটের সদস্য দেশগুলোর সেই অবস্থান কি এখনও অক্ষুণ্ন থাকবে? এ বিষয়ে জয়িতা ভট্টাচার্য বলেন, সন্ত্রাসবাদের ভুক্তভোগী এই দেশগুলো সবাই। কাজেই প্রশ্নটা যেখানে সন্ত্রাসবাদের, আমার ধারণা ভারতের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। কারণ এটা এমন একটি ইস্যু, যা থেকে তাদের সরে আসার আমি কোনও কারণ দেখি না।

বিমস্টেক কিছুটা সফল হলেও তাতে সার্ক চিরতরে মুছে যাবে- এমনটা মনে করেন না রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও অধ্যাপক ইমনকল্যাণ লাহিড়ী। আমরা বলি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনও ফুলস্টপ হয় না- হয় শুধু কমা। সুতরাং সার্কের ক্ষেত্রেও সেটা সত্যি। মনে রাখতে হবে, পাকিস্তান দেশটা আমাদের পশ্চিম সীমান্তে থাকবেই। আর তাদের সঙ্গে আজ না-হয় কাল আলোচনাও চালাতে হবে। এই দুটো দেশের পররাষ্ট্র নীতিও একে অন্যকে ছাড়া সম্পূর্ণ হতে পারে না। সোজা কথায়, সার্ক নিয়ে ভারত নিরুত্সাহী হয়ে পড়লেও তার অন্য বিকল্পগুলোও যে দারুণ সাড়া ফেলতে পারছে তা মোটেও নয়। আর ঠিক এ কারণেই ভারতে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সার্ক এখনও মারা যায়নি- কিন্তু কোমায় আছে। সূত্র : ইত্তেফাক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়