ইসমাঈল হুসাইন ইমু : ‘প্রথমে প্যারাসিটামল দিলাম, না হলে আমাকে এন্টি ভাইরাস দিতে হবে’। রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী রিপনের হুমকী দিয়ে সেই ক্ষুদে বার্তার প্রমান মিলেছে। এ ব্যাপারে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেপ্রতিবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার এসআই প্রদীপ কু-ু বলেছেন, বিবাদী সেরা উদ্দিন রিপনের স্বাভাব চরিত্র ভালো নয়। সে একজন দুষ্টু প্রকৃতির লোক ও ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন লোকের ক্ষতি সাধন করে থাকে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তি পর্যায়ক্রমে কদমতলী থানায় একাধিক অভিযোগ জিডি ও মামলা করেছে। রিপনের বিভিন্ন আপত্তিকর কার্যকলাপ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে। বিবাদী অভিযোগকারীকে জীবনে মেরে ফেলাসহ বিভিন্ন হুমকী ও ভীতি প্রদর্শন করায় পেনাল কোডের ৫০৬ ধারা মতে অপরাধ করেছে। তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৫০৬ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় পেনাল কোডের ৫০৬ ধারা মতে প্রকাশ্য আদালতে বিচারের জন্য প্রসিকিউশন দাখিল করলাম।
এদিকে, জিডির তদন্তের খবর পাওয়ার পর আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে রিপন। বিভিন্ন মাধ্যমে সে সিনিয়র এক সাংবাদিককে ফাঁসানোর জন্য নানান ফন্দি ফিকির করছে। গতকালও ওই সাংবাদিকের এক পরিচিতজনকে ফোন তরে রিপন চার লাখ টাকা দিয়েছে বলে দাবি করেছে। ভুক্তভোগিরা জানায়, রিপন প্রথমে মানুষের সাথে ভাব জমিয়ে পরে হঠাৎ করে একদিন মোবাইলে কল করে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। সেই কথা মোবাইলে রেকর্ড করে রেখে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইলিং করে। ভুক্তভোগিদের ভাষ্য মতে, কল করে বা মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা দিয়ে টাকা দাবি করার পাশাপাশি সে জালিয়াতির মাধ্যমে স্ট্যাম্প তৈরী করে। সেখানে তার ঘনিষ্ঠজনদের স্বাক্ষর নিয়ে রাখে সাক্ষী হিসাবে। দনিয়া শরীফ টাওয়ারের মালিককে সে এভাবে কয়েকবার ব্ল্যাকমেইলিং করেছে।
রিপনের অত্যাচারে নির্যাতিত শফিক আহমেদ নামে এক ভুক্তভোগী প্রতিকার চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করেন। এতে উল্লেখ রয়েছে, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, প্রতারক সেরা উদ্দিন রিপনের অত্যাচার নির্যাতনে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। জোর করে মানুষের জায়গা জমি দখল করা, জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া দলিল তৈরি করে ফ্ল্যাট, দোকান, জমি দাবি করাই তার পেশা। প্রতিবাদকারীদের কখনো অস্ত্র ঠেকিয়ে আবার মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকে দেওয়া ছাড়াও ফেসবুকে সম্মানহানি করার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করাই তার কাজ। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে রিপন বর্ণমালা স্কুল রোডে ৪৩০নং নির্মাণাধীন শরীফ টাওয়ারে একটি ফ্ল্যাট দাবি করে। এজন্য শ্রমিকদের মারধর করে বন্ধ করে দেয় ওই ভবনের নির্মাণকাজ। একপর্যায়ে টাওয়ারটির একটি দোকানের জাল দলিল তৈরী করে সেটা নিজের দাবি করে তালা মেরে দেয়। ওয়ারী জোনের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে সেই জালিয়াতি ধরা পড়ে। পুলিশ তালা ভেঙে সেই দোকান খুলে দেয়।
আপনার মতামত লিখুন :