শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ সাভারে শো-রুমের স্টোররুমে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ২ ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ১০ এপ্রিল, ২০১৮, ০৭:৫৩ সকাল
আপডেট : ১০ এপ্রিল, ২০১৮, ০৭:৫৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাস্তবতার নিরিখে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার জরুরি

ড. আকবর আলি খান : সাধারণ ছাত্রসমাজ সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে বহুদিন ধরে, সেটি আশাব্যঞ্জক। অবশ্যই কোটা ব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। তবে কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ তুলে দেয়ার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে এখনো সৃষ্টি হয়নি। বিশ্বের কোথাও এত জটিল কোটা ব্যবস্থা নেই, এটি সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।

সংবিধানে সমাজের ‘অনগ্রসর’ অংশের উন্নয়ন সাধনের যে মহৎ উদ্দেশ্য এ কোটা পদ্ধতি চালুর পেছনে রয়েছে, বর্তমান কোটা ব্যবস্থা তা কোনোভাবে সংরক্ষণ করে না। সংবিধান চাকরিসহ নানা ক্ষেত্রে যে সমতার নীতি সমুন্নত করেছে, বর্তমান কোটা ব্যবস্থা তার লঙ্ঘনও বটে। সংবিধানে যে বিধান রয়েছে, সে অনুসারে ৫০ শতাংশের বেশি কোটা থাকা যুক্তিযুক্ত নয়।

বিশ্বের কোনো দেশেই সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা চিরস্থায়ী হয় না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর মূল্যায়ন করতে হয়। উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হয় কোটার মাধ্যমে। সেই সংরক্ষণটি চিরন্তন ব্যবস্থা নয়। নির্দিষ্ট সময় পর বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তেমনি সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও এটি করা উচিত। নির্দিষ্ট সময় পরপর দেশের যাবতীয় বিষয় ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অগ্রগতি বিবেচনায় নিয়ে চাকরি থেকে শুরু করে যাবতীয় কোটা ব্যবস্থা সংস্কার তথা মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক।

সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, কাউকে পুরস্কার দেয়ার জন্য কোটার কোনো বিধান বিশ্বের কোনো দেশে নেই। কোটা অনগ্রসর জনগণের জন্য করা হয়। বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা চালু করা হয়েছিল এজন্য যে, যুদ্ধে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীতে পরিণত হন। যতক্ষণ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন সরকার না করতে পারবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দেশে অনেক দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থাকবে। এরা সরকারের সহায়তা ও সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল। এ ধরনের পরিবারের জন্য কোটা রাখার যৌক্তিকতা রয়েছে। এর হার কত হবে, তা গবেষণা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে নির্ধারণ করা যুক্তিযুক্ত। কিন্তু যারা দুস্থ নয় এবং সরকারের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল নয়, তাদের সন্তানদের জন্য কোটা সংরক্ষণ বর্তমান সংবিধান অনুসারে যুক্তিসঙ্গত নয়। এটি করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।

কেউ যদি বৈষম্যের শিকার হন, সে বৈষম্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কোটা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়। কিন্তু কোটা নিজেই যদি বৈষম্য সৃষ্টি করে, তবে তা দুঃখজনক। কেউ যদি বৈষম্যের শিকার না হয় বা অনগ্রসর নয়, তার জন্য কোটা সংরক্ষণের কোনো বিধান বিশ্বের কোথাও নেই, বাংলাদেশেও থাকা উচিত নয়। এতে মেধার মূল্যায়ন বাধাগ্রস্ত হয়। সিভিল সমাজের প্রায় সবাই কোটা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দেশের শিক্ষার্থীরা এটি চায়। আমি আশা করব, সরকার তাদের দাবিগুলো সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করবে।

ড. আকবর আলি খান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়