কাজী বাবলা,পাবনা: প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ বছরেও পাবনা সুগার মিলস লি: লাভের মুখ দেখেনি। বরং প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা লোকাসান দিতে দিতে বর্তমানে লোকসানের বোঝা ৩৪৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কের দাশুড়িয়ায় পাবনা সুগার মিলের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৯৭-৯৮ সালে মিলটি বাণিজ্যিকভাবে আখ মাড়াই শুরু করে। মিলটি প্রতি মাড়াই মৌসুমে ১৫০০০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করতে সক্ষম এবং চিনি উৎপাদন ক্ষমতা ১৫০০০ হাজার মেট্রিক টন।
শুরু থেকেই লোকসান গোনে মিলটি। দীর্ঘ ২০ বছরে মিলটি লোকসান দিতে দিতে এখন লোকসানের পরিমান দাঁড়িয়েছে, ৩৪৫ কোটি টাকা। লোকসানের পর মিলের কর্মকর্তারা নানা অজুহাত সামনে আনেন।
তবে বিশ বছরেও এই সব অজুহাত নিরসন করে মিলটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে কার্যত: ব্যর্থ হয়েছেন তারা।
পাবনা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন লোকসানের কথা স্বীকার করলেও নিরসনে তেমন পদক্ষেপ নিতে পারছেন না বলে জানান।
দীর্ঘ ২০ বছরেও মিলটি লাভের মুখ দেখেনি কেন জানতে চাইলে তিনি মিলের হাতে আখ উৎপাদনের জন্য বিপুল পরিমান জমি নেই সহ বিভিন্ন অজুহাত তুলে ধরেন। তবে সুগার রিফাইন্ড করার প্লান্ট সহ বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে উল্লেখ করে তিনি জানান, লোকসান কমাতে এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এদিকে পাবনা সুগার রিসার্চ ইন্সিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সমজিৎ পাল জানিয়েছেন, পাবনা সুগার মিলের প্রতি বছর লোকসানের ঘটনা অস্বাবাভিক। এটাকে হালকা ভাবে দেখার কোন কারন নাই। পাবনায় যে আখ উৎপাদন হয় সেই আখের চিনির রসের পরিমান এবং বিদেশ থেকে আমাদানী করা চিনির চেয়ে মিষ্টি অনেকগুণ বেশী। তবে লাল আভা থাকায় অনেকে এই চিনি কিনতে চান না। তারা ব্রাজিল বা অন্যদেশের বিভিন্ন চিনিজাত কৃষি পণ্য থেকে উৎপাদিত চিনি কিনতে আগ্রহ দেখায় বেশী।
এটা লোকসানের একটা গৌণ কারন হতে পারে, তবে মুল কারন নয়। কিন্ত প্রতি বছর লোকসান কেন হচ্ছে সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি। তিনি বলেছেন, এটা তাদের বিষয় নয়। তিনি শুধু দেশী আখের গুণগত মান সম্পর্কেই ধারণা রাখেন।
এদিকে পাবনা সুগার মিল কর্তৃপক্ষ বলছেন, পাবনা অঞ্চলে উন্নতজাতের আখ চাষ হয় না। তবে সুগার রিসার্চ ইন্সটিটিউট এ কথা মানতে একেবারেই রাজী নয়। তারা বলছেন, গবেষণাজাত যে আখ বীজ উৎপাদিত হচ্ছে সেটি উচ্চ ফলনশীল।
অপর দিকে পাবনা সুগার মিলের একটি সুত্রের দাবী, মিলে সরষের মধ্যেও ভুত আছে। এই সব ভুত-প্রেত বিতারিত করে মিলকে লাভজনক অবস্থায় নিয়ে আসতে হবে। এই সূত্র মতে, সুগার রিফাইন প্লান্টের কথা কোটি কোটি টাকা লোকসান দেওয়ার পর কর্মকর্তাদের বুদ্ধিতে এসেছে। এই কাজটি অনেক আগেই করা প্রয়োজন ছিল।
আপনার মতামত লিখুন :