ডেস্ক রিপোর্ট: চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতি পুরস্কার প্রাপ্ত সাংবাদিক মো. কামাল হোসেন তার ফেসবুক একাউন্ট Journalist Md Kamal Hossain-এ ‘কোটা বাতিল দাবিটাই ভুল’ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি লেখা হুবহু তুলে ধরা হলো:
কোটা বাতিল দাবিটাই ভুল
কোটা বাতিল আন্দোলনকারীদের দাবিটাই ভুল, তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, কোটাধারীরা মূর্খ নয়। তারাও অন্য সবার মতো পড়াশুনা করে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে সনদ পেয়েছে। বিষয়টা বুদ্ধিজীবীদের মাথায় নিতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে হুজুকে বাঙ্গালী হয়ে নাচলে হবে না।
বাস্তবতা হলো সরকারি চাকুরিজীবীরা তো কম মেধাবী বা স্বল্প শিক্ষিত (যেহেতু তারা কোনো মেধার পরীক্ষা দিয়ে উর্ত্তীর্ণ হয়নি) রাজনীতিবিদ তথা চেয়ারম্যান, মেম্বার, এমপি মন্ত্রীদের অধীনে চাকুরী করে তাদের মেধা খাটানোর সুযোগ পাবেন তো? তাই বলছি আগে মূলে ঠিক করেন। দেখবেন সমস্যা থাকবে না, কর্ম সময় বেড়ে দুই-তিন শিফট হবে, চাকুরির সুযোগ বাড়বে, সবাই চাকুরি পাবে।
যারা কোটা বাতিল আন্দোলন করতে এসেছেন, যদি কোটা বাতিল হয়, তাহলে তাদের কতজন চাকুরি পাবেন। এত পদ আছে তো বাংলাদেশে! যারা পাবেন না, তারা তো মেধাবী, তাদের কি হবে?
এবার সময় এসেছে দাবি করার, একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি-ঘর লুট হয়েছে, তারা স্বজন হারিয়েছেন, এমনকি অনেকে আহত হয়েছেন শুধুমাত্র ‘বাংলাদেশ’ নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য।
অথচ ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুইলক্ষ মা-বোনের তালিকা করা হয়নি, তাই সকল শহীদ পরিবার ও সম্ভ্রম হারানো মা-বোন ক্ষতিপূরণ পায়নি। এই লজ্জা রাষ্ট্রের, এই লজ্জা জাতির।তবে দুঃখজনক হলেও সত্য তথাকথিত মেধাবীরা স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠার স্বার্থে, রক্তের ঋণ পরিশোধের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানায়নি, আন্দোলন গড়ে তোলেন নি। তবু তারা মেধাবী তবে লজ্জাহীন। অকৃতজ্ঞ মেধাবী। তারা যে সনদে মেধাবী দাবি করেন, তা পরিপূর্ণভাবে কোনো স্কুল-কলেজে-পড়ায় না, পড়ানো হচ্ছে কোচিং সেন্টারে। দূর্বলতা হলো শিক্ষা ব্যবস্থায়, উচ্চমাধ্যমিক পাশ ছেলেকে এক বছর বিসিএস কোচিং করালে সেও পাশ করতে পারবে, সেই শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কেউ আন্দোলন করে না।
এমনকি নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধে কেউ আন্দোলন করে না, দেশে কোন সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করে না, মানুষের জীবন মূল্যহীন হয়ে পড়েছে, তার বিরুদ্ধেও না, সর্বস্তরে বাংলা ভাষার অবমাননা, তার সুরক্ষার জন্যও না, কেবল কোটা, কারণ কি? সর্ষের মধ্যে ভূত নয় তো?
মেধা থাকলে নিয়োগ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। খালি মেধায় তো আর চাকুরি হয় না, তাই না?
এবার সময় এসেছে দাবি করার, শ্রদ্ধেয় মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার জন্য যে যুদ্ধ করেছেন তার মানে হল সেনাবাহিনীর কাজ করেছেন, তাই তাদের বীরত্বগাঁথার জন্য বর্তমান সময়ে সেনাবাহিনীর একজন সদস্য যেভাবে পেনশনসহ সুযোগ সুবিধা পায় তা দিতে হবে।
সেই সাথে কোটা ব্যবস্থা করার পর থেকে বাংলাদেশে যে পরিমান চাকুরি হয়েছে, তার মধ্যে কোটায় যে পরিমান পাওয়ার কথা, তা পূরণ করে দিতে হবে। সাথে সাথে জেলা কোটা বৃদ্ধি করে জেলার মেধা তালিকা থেকে নিয়োগ দিতে হবে। যাতে সকল অঞ্চল সমান সুযোগ-সুবিধা পায়। বৈষম্য রোধ করে স্বাধীনতার সুফল সমানভাবে পৌঁছে দিতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধারা ভাগ্যবান তাই তারা নয় মাসের মধ্যে বিজয়ী হয়েছেন, সেখানে নয় বছর তো বটে তিন নয় সাতাশ বছরও লাগতে পারতো। তাই বলে মূল্যায়ন করতে ভুল করবেন না আশা করি।
আরো জানতে নিচে একটা লিংক দিলাম, আমি চ্যালেঞ্জ করছি, কেউ পারলে ভুল প্রমাণ করেন। যুক্তি খণ্ডন করেন।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=423448094759376&id=100012825679079
আপনার মতামত লিখুন :