নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মাদক ব্যবসায়ী স্বামীর নির্যাতনে নিহত রীমার (২২) বাবা ও মায়ের পরিচয় পেয়েছে পুলিশ। রীমা পাবনা জেলা সদরের পশ্চিম সাধুপাড়া গ্রামের রুতাব শেখের মেয়ে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ রীমার স্বামী ফতুল্লার কোতালেরবাগ এলাকার আছিল্লা সর্দারের ছেলে আল আমিনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেছে। ফতুল্লা মডেল থানায় এসে মামলাটি দায়ের করেন রীমার মা জোসনা বেগম।
জোসনা বেগমের অভিযোগ, স্বামী শাশুড়ি ও ননদ মিলে রীমাকে হত্যা করেছে। পুলিশ তাদের অভিযোগ শুনে রীমার স্বামী আল আমিনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা গ্রহণ করে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার রীমার ছোট বোনের বিয়ের কারণে পরিবারের লোকজনের আসতে বিলম্ব হয়।
রীমার মা জোসনা বেগম জানান, তার এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে বড় রীমা আক্তার। ১৪ বছর আগে তারা কোতোয়ালের বাগ এলাকায় মালেক মেম্বারের বাড়িতে বসবাস করতো। তিন বছর আগে একটি গার্মেন্টে কাজ করার সময়ে আল আমিনের সঙ্গে রীমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তাদের রীমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা রীমাকে স্বামীর বাড়ি রেখে স্বপাবনা গ্রামের বাড়ি চলে যায়।
তিনি জানান, বিয়ের পর থেকে রীমার ওপর অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে আল আমিন। রীমার শাশুড়ি জোবেদা বেগম ও ননদ বকুলিসহ স্বামী আল আমিন মিলে রীমাকে তিন মাস পূর্বে মারধরের পাশাপাশি চুল কেটে দেয়। এতে রীমা গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। ২০ দিন আগে আল আমিন তার বোন ও মা মিলে পাবনা গিয়ে ভুলের ক্ষমা চেয়ে রীমাকে নিয়ে আসে। তখন আল আমিন ২০ হাজার টাকা চেয়ে নিয়ে আসে।
জোসনা বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার ছিল আমার ছোট মেয়ের বিয়ে। ১০ দিন আগে আমি আল আমিন ও রীমাকে ফোন করে দাওয়াত করি। তখন রীমা জানান তায় স্বামীর হাতে টাকা নাই। ১০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। আমি সে টাকাও পাঠাই। কিন্তু বুধবার শুনছি রীমাকে হত্যা করা হয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহজালাল জানান, নিহতের পরিবার শুক্রবার রাতে এসেছে। তাদের অভিযোগ শুনে আল আমিনের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছি। যদি এ হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত থাকে তাদেরকেও গ্রেফতার করে আইনে আওতায় আনা হবে।
ঘটনার পর থেকে ওই আল আমিন তার মা ও বোন তিনজনই পলাতক রয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান। ফতুল্লার কোতালেরবাগ বৌবাজার এলাকায় স্ত্রী রিমাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশের পাশে দেড় বছরের শিশু সন্তান নাহিদকে রেখে পালিয়ে যায় আল আমিন। শিশুটি তিন দিন মৃত মায়ের আঙ্গুল চুষে পার করে দেয়। পরে ক্ষুধা ও দুর্গন্ধে শিশুটির চিৎকারে বুধবার বিকাল ৪টায় এলাকাবাসী ও পুলিশ তালা ভেঙে রীমা আক্তারের লাশ ও দেড় বছরের শিশু নাহিদকে উদ্ধার করে। পরে নাহিদকে তার চাচির জিম্মায় দেয় পুলিশ।
আপনার মতামত লিখুন :