ডেস্ক রিপোর্ট : ভারতের মাধ্যমিক পরীক্ষায় দুটি বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় প্রায় ২৮ লাখ শিক্ষার্থীকে আবারও পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। এনিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে থাকা সরকার অপরাধীদের খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে সমালোচনা অব্যাহত রেখেছে বিরোধীরা। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
ভারতে সম্প্রতি মাধ্যমিক পরীক্ষার গণিত ও অর্থনীতি বিষয়ের প্রশ্নপত্র হোয়াটআপসের মাধ্যমে ফাঁস হয়। ভারতের শিক্ষামন্ত্রী প্রকাশ জাভাদেকার বলেন, পরীক্ষার আগেই হোয়াটসআপের মাধ্যমে মাধ্যমিকের গণিত ও অর্থনীতি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে একটি তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘অপরাধীদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। আমি নিশ্চিত পুলিশ তাদের শীঘ্রই ধরে ফেলবে। আমরা এই ব্যবস্থার উন্নতি করে এটাকে নিশ্ছিদ্র করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
ভারতের আধার কার্ডের তথ্যভাণ্ডারে থাকা একশ কোটির বেশি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার পর এই ঘটনা সরকারকে আরও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ অ্যানালেটিকার মাধ্যমে ফেসবুক থেকে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংক্রান্ত কেলেঙ্কারি নিয়েও দেশটির সরকার ও বিরোধী দল একে অন্যকে দোষারোপ করছে। গত রবিবার ফরাসি নিরাপত্তা গবেষেক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত অ্যাপের ত্রুটির বিষয়ে জানালে এই ঘটনার সূত্রপাত্র হয়। সেখানে অভিযোগ করা হয়, অ্যাপটির ব্যবহারকারীদের তথ্য কোনও অনুমতি ছাড়াই শেয়ার করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় বিরোধীদের চাপের মুখে আছে দেশটির সরকার।
ভারতের প্রধান বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের মোদি প্রশাসনের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ’২৮ লাখ শিক্ষার্থীকে আবারও পরীক্ষা দিতে হবে! এটা কি কোনও উপহাস! এই নোংরামির জন্য কে দায়ী?
ভারতের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার জনগণের মধ্যে ব্যপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী জাভাদেকার বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কষ্ট, যন্ত্রণা ও হতাশা তিনি বুঝতে পারছেন।
প্রশ্ন ফাঁসের তদন্তের দায়িত্বে থাকা দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ ২৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশের বিশেষ কমিশনার আরপি উপাধ্যায় বলেন, ‘এখনকার জন্য আমরা এই ফাঁসের সূত্র বের করার চেষ্টা করছি। যাদের সঙ্গে কথা বলেছি তাদের বেশিরভাগই হোয়াটআপসের মাধ্যমে এটা পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।’
ভারতে পরীক্ষায় অসুদপায় অবলম্বন করার ঘটনা খুবই সাধারণ। এমনকি সেখানে বিভিন্ন উপায়ে নকল সরবরাহের জন্য ঘুষ পর্যন্ত দেওয়া হয়ে থাকে। ২০১৫ সালে পূর্ব বিহার রাজ্যে স্কুলের দেয়াল বেয়ে উঠে আত্মীয়দের নকলসহ অন্যান্য্য শিক্ষা উপকরণ সরবরাহের অভিযোগে কয়েকশ লোককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গত বছরের মে মাসে নকল ঠেকাতে এক ছাত্রীর অন্তর্বাস খুলতে বাধ্য করেছিল একটি স্কুল কর্তৃপক্ষ। সে ঘটনায় তখন বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছিল। সূত্র : বাংলাট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :