জান্নাতুল ফেরদৌসী: ময়নাতদন্ত কোনো মানুষের অস্বাভাবিক বা রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের পদ্ধতি। কিন্তু অত্যন্ত সংবেদনশীল এই কাজটি কিভাবে করা হচ্ছে দেশে। পুলিশের দেয়া তথ্য মতে শুরু হয় অনুসন্ধান। সহায়তা নেয়া হয় হিস্টোপ্যাথলজি পরীক্ষা। এক্ষেত্রে মরদেহ রাখা হয় মর্গে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ময়নাতদন্তের পদ্ধতি একেবারেই প্রাচীন। তাই ফলাফলের যথার্থতা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন।
ইংল্যান্ডের একটি মর্গ যেখানে মানুষের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা হয়। এখানে যেমন আছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি তেমনি ময়নাতদন্তের প্রতিটি ধাপ সুচারুভাবে সম্পন্ন করা হয় অত্যন্ত দক্ষভাবে। এধরনের উন্নত মর্গগুলোতে ময়নাতদন্তের জন্য থাকে অটপসি টেবিল। রয়েছে এক্সরে মেশিন ও টিস্যু। হিস্টোলজি পরীক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে। আর তাই মরদেহের সৌন্দর্য্য থাকে ঠিকঠাক। ফলাফলও আসে নিঁখুত।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগ সহকারি অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, দেশের বাইরে প্রথমে এক্সরে করে নেয়। এক্সরে করলে কাটা ছেড়া থাকলে বুঝা যায়। আমাদের দেশে এক্সরে ব্যবস্থা নেই, তাই একটা মরদেহ আমাদের কাছে আসলে পুরো শরীরটা কাটা হয়। আমাদের অবস্থা সাগরে যেভাবে হাতিয়ে বেড়ায়, সেভাবে হাতিয়ে বেড়াতে হয়।
বাংলাদেশের মর্গের চিত্র একেবারে বিপরীত। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে অটপসি টেবিল বলতে নেই কিছুই। রক্ত ও পানি চলাচলের ব্যবস্থাও একই রকম। এমনকি মরদেহ কাটাছেড়া করা হয় পুরনো হাতুড়ি ও ছুরি দিয়ে। নেই দক্ষ মেডিকেল সহকারী। তবে সম্পতি যোগ হয়েছে কয়েকটি রেফ্রিজারেটর।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগ সহকারি অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য একটি অটপসি টেবিল লাগে। বডির একটি অংশ কাটার জন্য একেকটা অস্ত্রো লাগে এগুলো নেই।
এছাড়া টিসু পরীক্ষার নিজস্ব ল্যাব ও এক্সরে মেশিন নেই ঢাকা মেডিকেল মর্গে। তাই ভিসেরা পরীক্ষার জন্য দারস্ত হতে হয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে।
সিআইডি ফরেনসিক ল্যাবের প্রধান রাসয়নিক পরীক্ষক দিলীপ কুমার সাহা বলেন, আমরা শুধু পয়জনটা পরীক্ষা করি। তাছাড়া মরদেহ যদি প্রথম দিকে পাঠায় তাহলে আরো সহজ হয়।
লোকবলের ঘাটতি নিয়েও ১৫ দিন থেকে ১ মাসেই পাওয়া যায় ভিসেরা পরীক্ষার ফলাফল। আর ঢাকা, চট্টগ্রামের পাশাপাশি রাজশাহী খুলনা ও বরিশালেও ফরেনসিক পরীক্ষাগার স্থাপনের কাজ চলছে। সূত্র: চ্যানেল টোয়েন্টিফোর টিভি
আপনার মতামত লিখুন :