শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ২৭ মার্চ, ২০১৮, ০৮:৪৪ সকাল
আপডেট : ২৭ মার্চ, ২০১৮, ০৮:৪৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এক আসনে এমপি হতে চান ২২ জন

ডেস্ক রিপোর্ট : কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে ঝিনাইদহ-৩ সংসদীয় আসন। এ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে দলীয় কোন্দল চরমে। আওয়ামী লীগে শক্তিশালী ৩টি গ্রুপ সক্রিয়। বিএনপির ভেতরেও ৩টি গ্রুপ বিদ্যমান। গ্রুপগুলোর দলীয় কর্মসূচি আলাদাভাবে পালন করতে দেখা যায়। বিএনপির জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনটি ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হাতে চলে যায়। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নবী নেওয়াজ বিজয়ী হন। আওয়ামী লীগ চাইছে, এ আসনটি তারা আগামী নির্বাচনেও ধরে রাখতে। আর বিএনপির নেতাকর্মীদের আশা, নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয় তাহলে হারানো সিট তারা পুনোরম্নদ্ধার করতে পারবেন।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২০ হাজার ৫৫৮ জন। এর মধ্যে মহিলা ভোটার প্রায় ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭০ জন। পুরম্নষ ভোটার ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৮৮ জন। এ আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষে যারা প্রার্থী হিসেবে প্রচারণায় রয়েছেন তারা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শফিকুল আজম খান চঞ্চল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির বারবার নির্বাচিত নেতা অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও মহেশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাজ্জাতুজ জুম্মা চৌধুরী, জেলা কৃষক লীগের নেতা সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ময়েজ উদ্দিন হামিদ, মহেশপুরের প্রিটি গ্রুপের পরিচালক ও সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য পারভীন তালুকদার মায়া, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ-ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক এমএম জামান মিলস্নাত, কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শরিফুননেছা মিকি, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মইনুদ্দিন মিয়াজী ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আলী।

অন্যদিকে এ আসনে বিএনপির পক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিকবিষয়ক সহ-সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী মনির খান, কেন্দ্রীয় বিএনপির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সহ-সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, কোটচাঁদপুর উপজলো বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম এবং মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ লতিফুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুর রহমান মমিন, সাবেক এমপি শহিদুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে মেহেদী হাসান রনি, অ্যাড. শেলি সুলতানা জামান ও মহেশপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এমএ আজাদের নাম শোনা যাচ্ছে।

এ ছাড়া জামায়াতের সুরা সদস্য অধ্যাপক মতিয়ার রহমান প্রার্থী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) নাজমা খাতুন, আর জাতীয় পার্টি থেকে মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক আব্দুর রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে। গত ৫টি নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ১ লাখ ৪২ হাজার ৯ ভোটের মধ্যে বিএনপির শহিদুল ইসলাম মাস্টার পান ৬১ হাজার ৩৯১ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী জামায়াতে ইসলামীর এএসএম মোজাম্মেল পান ৪৪ হাজার ৮৬১ ভোট। আর আওয়ামী লীগের সাজ্জাতুজ জুম্মা পান ৩১ হাজার ৪১২ ভোট। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিএনপির শহিদুল ইসলাম মাস্টার পান ৬৫ হাজার ৭২৫ ভোট। তার নিকটতম জামায়াতে ইসলামীর এসএম মোজাম্মেল হক পান ৫৬ হাজার ৪৫ ভোট। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাজ্জাতুজ জুম্মা পান ৫০ হাজার ৮৮২ ভোট।

২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির শহিদুল ইসলাম মাস্টার পান ১ লাখ ২৭ হাজার ২৩ ভোট। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের সাজ্জাতুজ জুম্মা পান ৮৪ হাজার ২৮৯ ভোট। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শফিকুল আজম খান চঞ্চল পান ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৬১ ভোট। আর জামায়াতে ইসলামীর মো. মতিয়ার রহমান পান ৮১ হাজার ৭৩৯ ভোট। বিএনপির শহিদুল ইসলাম মাস্টার পান ৫৯ হাজার ১৫ ভোট। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নবী নেওয়াজ পান ৪৬ হাজার ১০৫ ভোট। আর নিকটতম প্রার্থী জাতীয় পার্টির কামরজ্জামান স্বাধীন পান ১ হাজার ৪৬৫ ভোট। এই আসন থেকে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে মরহুম শহিদুল ইসলাম মাস্টার (বিএনপি), ২০০৮ সালে শফিকুল ইসলাম চঞ্চল (আওয়ামী লীগ) ও ২০১৪ সালে নবী নেওয়াজ (আওয়ামী লীগ) এমপি নির্বাচত হন। ঝিনাইদহ ৩ আসনটি মূলত বিএনপি জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত। ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত্ম বিএনপির প্রার্থী শহীদুল ইসলাম মাস্টার ৩ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আর বিএনপির নিকটতম প্রার্থী হিসেবে জামায়াতের প্রার্থীই বেশি ভোট পান। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হয়ে যায়। আর ২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা অংশ নেয়নি।

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থকরা এবার তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল আজম চঞ্চল, বর্তমান সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ ও মায়া তালুকদারকে ঘিরে তিন গ্রম্নপ আবর্তিত হয়। প্রিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবেক সংরক্ষিত মহিলা এমপি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক পারভিন তালুকদার মায়া এখন আলোচনার শীর্ষে। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম শহিদুল ইসলাম মাস্টার মারা যাওয়ার পর মূলত এ আসনটিতে বিএনপি নেতা কণ্ঠশিল্পী মনির খানের একটি গ্রুপ এবং উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মমিনুর রহমান মমিনের একটি গ্রুপ আলাদা কর্মসূচি নিয়ে কোটচাঁদপুর ও মহেশপুরের বিএনপির নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। বিএনপির অন্য নেতাদের তেমন মাঠে নামতে দেখা যায়নি। ভোটাররা জানান, যদি বিএনপির মধ্যে দলীয় কোন্দল না মেটানো সম্ভব হয় তাহলে জামায়াতের পক্ষ থেকে স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থী দিলে ভোটের হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। সূত্র :  যায়যায়দিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়