শিরোনাম
◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল

প্রকাশিত : ২৭ মার্চ, ২০১৮, ০২:০০ রাত
আপডেট : ২৭ মার্চ, ২০১৮, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রামে স্কুলের ভেতর যুবলীগ কর্মীকে খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি পালনের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের ৩৮ নম্বর দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর এলাকার স্কুলের ভেতরে যুবলীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

সোমবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে তাঁকে কোপানো হয়। চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যাকা-ের জন্য স্থানীয় ইকবাল আলী ওরফে হাজি ইকবালকে দায়ী করেছেন নিহত মহিউদ্দিন ওরফে মহির (৩৭) আত্মীয় এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা।

নিহত যুবলীগ কর্মী মহিউদ্দিন স্থানীয় রাজনীতিতে প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। আজ ভোর থেকে স্থানীয় মেহের আফজাল স্কুলমাঠে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগ মহান স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি পালন করছিল। শুরু থেকেই মহিউদ্দিন ওই কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশ নেন। বেলা পৌনে দুইটার দিকে মহিউদ্দিন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। এ সময় ওই কক্ষে ঢুকে তাঁকে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়।

এদিকে মহিউদ্দিনকে হত্যার খবর পেয়ে দলীয় নেতা-কর্মী বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভিড় করেন। মহিউদ্দিনের মা, আত্মীয়স্বজন এবং কিছু দলীয় কর্মীদের আহাজারিতে হাসপাতাল এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।

গত বছরের ১৫ আগস্ট চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ‘শোক দিবস উদ্যাপন পরিষদ ২০১৭ চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা)’ ব্যানারে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। ওই কর্মসূচিতে ৫০ থেকে ৬০ জন লোক অংশ নিয়েছিলেন। তখন হাজি ইকবাল জিঞ্জির চাকু (ধারালো ছুরি ও ব্লেডের গুচ্ছ) দিয়ে নিজের শরীরে আঘাত করছিলেন, আর বলছিলেন ‘হায় মুজিব’, ‘হায় মুজিব’। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তাঁর এই মাতম চলে। এ সময় তাঁর আরও অনুসারীও শার্ট খুলে একই কা- ঘটান। বঙ্গবন্ধুর জন্য শোক প্রকাশের নামে এমন বিকৃত আচরণের ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হলে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত মহিউদ্দিনের ভাগনে মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ভোর থেকে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি নিয়ে তাঁর মামা (মহিউদ্দিন) ব্যস্ত ছিলেন। বেলা পৌনে দুইটার দিকে তাঁর মামা মেহের আফজাল স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ছিলেন। হঠাৎ হাজি ইকবালের নেতৃত্বে তাঁর ছেলে, ভাই, ভাগনেসহ ১৫-২০ জন অনুসারী প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঢোকেন। হাজি ইকবাল তাঁর মামাকে চেপে ধরেন। অন্য ব্যক্তিরা তাঁকে কিরিচ ও চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। গুরুতর অবস্থায় তাঁর মামাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

৩৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এম হাসান মুরাদ বলেন, ‘প্রতিটি জাতীয় দিবস ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে মহিউদ্দিন অংশ নিতেন। স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচিতেও ভোর থেকে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।’ তিনি বলেন, কর্মসূচির মাঝে কিছুক্ষণের জন্য আমি চলে যাই। কিন্তু মহিউদ্দিন স্কুলেই অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ খবর আসে, হাজি ইকবালের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা মহিউদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

নিহত মহিউদ্দিনের আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা জানান, একসময় হাজি ইকবালের সঙ্গে যৌথভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতেন মহিউদ্দিন। কিন্তু ইকবালের কর্মকা-ে বিরক্ত হয়ে মহিউদ্দিন সরে দাঁড়ান।

নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ বলেন, দেড় থেকে দুই বছর আগে হাজি ইকবাল থেকে দূরে সরে যান মহিউদ্দিন। এতে ইকবাল ক্ষুব্ধ হয়ে মহিউদ্দিনের গায়ে জামায়াত-শিবিরের তকমা লাগানোর চেষ্টা করেন। কিছুদিন আগে ফেসবুকে এ-সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন ইকবাল। মহিউদ্দিনও হাজি ইকবালের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় কর্মসূচি পালনের পুরোনো ছবিসহ পাল্টা পোস্ট দেন।

ফরিদ মাহমুদ আরও বলেন, ‘ইকবাল মানুষ হিসেবে খারাপ। দলকে ব্যবহার করে স্বার্থ হাসিল করা তাঁর উদ্দেশ্য। এ জন্য মহিউদ্দিন তাঁর কাছ থেকে দূরে সরে যায়। ফলে মহিউদ্দিনকে বারবার হুমকি দিয়েছিলেন ইকবাল। আরও একবার মহিউদ্দিনকে মারধরও করেছিলেন ইকবাল।’

চট্টগ্রামের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেছেন, এই খুনের ঘটনায় হাজি ইকবাল ও তাঁর অনুসারীরা জড়িত বলে তাঁরা সন্দেহ করছেন। তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়