শিরোনাম
◈ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিলে জো বাইডেনের সাক্ষর  ◈ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর ◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের  ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা  ◈ হিট স্ট্রোকে রাজধানীতে রিকশা চালকের মৃত্যু

প্রকাশিত : ২৬ মার্চ, ২০১৮, ০৫:০৩ সকাল
আপডেট : ২৬ মার্চ, ২০১৮, ০৫:০৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘ক্রাউড ফান্ডিং’ করে পড়াশোনা করছেন যে ছাত্রী

মো. কামাল হোসেন: ছোটবেলা থেকে নিজের নকশা করা গয়না পড়তে পছন্দ করতেন জোয়ান গার্নার, বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা যাকে জো বলেই ডাকেন। সেই সঙ্গে নিজের নকশা করা ছোটখাটো গয়না দিয়ে আত্মীয় ও বন্ধুদের মাঝেমধ্যেই চমকে দিতেন তিনি। পড়া লেখার পাশাপাশি এটাই তার একমাত্র শখ ছিলো। সে কারণে তিনি বিষয়টি নিয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে চেয়েছিলেন। সেই কারণে গয়না আর ধাতব পদার্থের ওপর মাস্টার্স করতে চেয়েছিলেন জো। কিন্তু তার নিজের সামর্থ্য ছিলনা, কোর্সের পুরো অর্থ সংগ্রহের। যে কারণে একদম অচেনা মানুষের কাছে তিনি চেয়েছিলেন অর্থ সাহায্য বা অনুদান বা জন বিনিয়োগ।

তিনি বলেন, আমি সব মিলে সাড়ে তিন হাজার পাউন্ড যোগাড় করার চেষ্টা করছিলাম, যা আমার কোর্স ফি’র অর্ধেক। আমার হাতে সময় ছিল মাত্র আট সপ্তাহ বা দুই মাসের মত। ঐ সময়ে আমার অবস্থা হয়েছিল কোন প্রতিষ্ঠানের পূর্ণকালীন গণসংযোগ কর্মকর্তার মত। টুইটারে পোষ্ট দেয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট দেয়া এবং তার ফিডব্যাক কি আসছে, তা খেয়াল রাখা—একহাতে সবকিছু সামলানো! আমি খুবই নার্ভাস ছিলাম। ২০১৫ সালে জো নিজের পড়াশোনার জন্য ক্রাউড ফান্ডিং বা জন বিনিয়োগের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের জন্য প্রচারণা শুরু করেন।

শুরুতে বিষয়টি নিয়ে জো খুবই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন, যে মানুষ ব্যাপারটিকে কিভাবে নেবে, আদৌ কেউ তার পড়াশোনার খরচ যোগাতে এগিয়ে আসবে কিনা। কিন্তু তার সমসাময়িক শিল্পীরা তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন এই বলে যে, ঐ সময়ে এটাই ছিল সবচেয়ে সঠিক পদক্ষেপ।
জোয়ান গার্নার বলছেন, আমার মা ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। আর বাবা ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত পেইন্ট ডেকোরেটর। ফলে তারা আমার পড়ার খরচ দেবার মত অবস্থায় ছিলেন না। আর আমিও পড়ার জন্য কোন লোন বা ঋণ একেবারেই নিতে চাইনি।

ফলে জো যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন, তখন দিনরাত কয়েকটি ভাগে কাজ করতে হয়েছে। কেন লোকে আপনার পড়াশোনার খরচ দেবে, সেটি খুব ভালোভাবে এবং বিশ্বাসযোগ্যভাবে ব্যাখ্যা করতে হয়েছে। যুক্তরাজ্যের মত একটি দেশে যেখানে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনার পরই লোকের কাজকর্ম করে খাওয়া-পড়ার সমস্যা হয়না, সেখানে জো কেন গয়না নকশা নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নিতে চান সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে। কিন্তু সাড়া দিতে তাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়নি।

আমি খুবই ভাগ্যবান যে প্রথম অনুদান খুব দ্রুতই আসতে শুরু করলো। আমাকে চীন থেকে, অ্যামেরিকা থেকে, নেদারল্যান্ডস---পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ অর্থ পাঠিয়েছে। মানুষের ভালোবাসা পেয়ে আমার এতো ভালো লেগেছে! এই দেশে উচ্চতর পড়াশোনার এত খরচ। জন বিনিয়োগ না পেলে আমার পড়াশোনাই হতো না।

জোকে যারাই অর্থ সাহায্য পাঠাতেন তারাই তার নিজের হাতে বানানো একটি করে শিল্পকর্ম উপহার পেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত জো সাড়ে চার হাজার পাউন্ড জোগাড় করেছিলেন। সেই সঙ্গে খন্ডকালীন চাকরি আর ছাত্রবৃত্তির পয়সায় কোর্স ফি এর বাকিটা উঠে গেছে। রয়াল কলেজ অব আর্টস থেকে গত সেপ্টেম্বরে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন জো।

লন্ডনে এখন নিজের একটি ল্যাব হয়েছে তার। সেখানে জো এখন ছোটছোট বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে নানান নকশার গয়না বানান। মেটাল বা ধাতব পদার্থ ব্যবহার করে নানা ধরণের যেসব গয়না তিনি বানাচ্ছেন, তার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে লোকের। এর মধ্যে শিল্প বোদ্ধা যেমন আছেন, তেমনি আছেন ছোট উদ্যোক্তাও। সূত্র: বিবিসি বাংলা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়