শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ সাভারে শো-রুমের স্টোররুমে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ২ ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ২৩ মার্চ, ২০১৮, ০৪:০৩ সকাল
আপডেট : ২৩ মার্চ, ২০১৮, ০৪:০৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গণমাধ্যমে ‘সাংবাদিক ও মানুষ’- দুটোই প্রয়োজন

প্রতীক ইজাজ : ভোট চাইতে গিয়ে থমকে গিয়েছি। মলিন মুখ। ফ্যাকাশে চোখ। বিবর্ণ চেহারা। কেমন আছেন, বলতেই ঝাঁপিয়ে পড়ল বুকে। ঘাড়ের ওপর থুতনি রেখে আস্তে করে বলল, ‘দীর্ঘদিন বেকার ছিলাম। সবে চাকরি পেয়েছি। তাও বেতন বকেয়া।’ আমার ভোট চাওয়া হলো না। বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠল। চোখ ছল ছল। শুকিয়ে এলো ঠোঁট। বললাম, দেখি, কি করা যায়।

পথে নামলাম। ব্যস্ত শহর। গাড়ির হর্ণ। লোকালয়ের শব্দ। বিচিত্র মানুষ। ধুলো। নিয়ন আলো। ঝলমল বিজ্ঞাপন। আমার চোখে কেবলই সেই প্রিয় সহকর্মীর মুখ। একহারা গড়ন। রুগ্ন শরীর। সামনে কম্পিউটারে অসমাপ্ত প্রতিবেদন। শব্দ সমাহার। আনন্দ নেই। উল্লাস নেই। কেউ একজন চেচিয়ে বলল, দেখা হবে, ভালো থাকিস। ভালো থাকা হলো না। যে স্বপ্ন নিয়ে একদিন উদ্দীপ্ত তারুণ্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সংবাদপত্রে; স্বপ্ন বুনেছিল ঝক্ঝকে রোদ্দুরের; আজ সেখানে মেঘ। ম্লান আকাশ। জারুলে রং ধরে, আমরা দেখি না। কাশবন আরও সাদা হয়, আমরা হাসি না। শুকনো নদীতে জোয়ার এলেও আমাদের স্বপ্নের নৌকোরা ভাসে না। রোদ ওঠে। চাঁদের জ্যোস্নায় ভেসে যায় ছাদ। কেউ একজন দূর থেকে গান ধরে ভাঙা গলায়। আমরা পাশ ফিরে শুই। কানে লাগে। রাজ্যের ঘুম নিয়ে চোখ তাকিয়ে থাকে কার্নিশে। ভাবি; সকালটা কবে হবে আমাদের।

যে ছেলেটি মাস শেষে বেতন পায় না; পেলেও সামান্য কটি টাকা খরচ হয়ে যায় বাসে, রুটিতে, লাল চায়ে; সে তো আমারই সহকর্মী। আমারই কানের সামনে যখন মুখ রেখে ফিসফিস করে বলে, চাকরিটা ছাড়তে হবে; অথবা পেশা; তখন আমারই দায় পড়ে ওকে বোঝানোর। পারি কই। কেনইবা পারা। নিশ্চয়তা যখন অনিশ্চিত পথে হাঁটে জীবন পুঁজির; সেখানে লেনিন, মার্ক্স বা চায়ের দোকানের সজল; সব তো একাকার হয়ে যায়। নিশ্চুপ মুখ পেছনে ঠেলে আমাদের। আমরা পিছুতে পিছুতে একতাল অন্ধকারে সাতার কাঁটছি এখন। অন্ধকার!

একটা গণমাধ্যমের স্বপ্ন ছিল আমাদের। এখনো দেখি। আনন্দ নিয়ে, সৃজনশীলতা নিয়ে, সম্মিলিত শক্তি নিয়ে কাজ করব আমরা। মাস শেষে বেতন পাব; ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী বেতন। সপ্তাহান্তে ডে-অফ। নিয়ম করে ক্যাজুয়াল লিভ, আর্ন লিভ। কর্ম পরিবেশ থাকবে। দল বেঁধে একে অন্যের হয়ে কাজ করব। ব্যবস্থাপনা হবে শোভন-শৃঙ্খল-স্বস্তিকর। কথায় কথায় চাকরি যাবে না। বেতন কাটা হবে না। অবদমনের কথা ভাববে না কেউ। বুদ্ধিতে-দীপ্তিতে আলোময় হয়ে উঠবে অফিসগুলো। আড্ডায় চলতে সভা-সেমিনারে লোকে সাংবাদিকদের কথা বলবে। ভয় পাবে না; সম্মান দেখাবে। সংকটে অসঙ্কোচে সমাধান নেবে। রাষ্ট্র সমাজ মানুষের প্রতিনিধি হবে গণমাধ্যম। সাংবাদিকরা হবেন মানুষের প্রতিভু। মানুষ মানে ভালো মানুষ। গণমাধ্যমে ‘সাংবাদিক ও মানুষ’ দুটোই প্রয়োজন।

লেখক : সাংবাদিক, কবি ও সংস্কৃতিকর্মী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়