আশিক রহমান : মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ২৩ মার্চ পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবসের পরিবর্তে ‘বিএলএফ’ ও ‘স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদে’র পক্ষ থেকে প্রতিরোধ দিবস পালিত হয় এবং সারা দেশের ঘরে ঘরে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলিত হয়। আমরা ছাত্ররা ভোরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির ছাদে, হাইকোর্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পতাকা উড়িয়ে দিই। দুপুরে জয় বাংলা বাহিনীর পক্ষে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর হাতে স্বাধীন বাংলার পতাকা তুলে দিই।
আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ২৩ মার্চ গভীর রাতে ‘নিউক্লিয়াস’ ও ‘বিএলএফ’ এর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে চার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। ২৪ মার্চ সকালে অনির্ধারিতভাবে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ইয়াহিয়ার বৈঠকের জন্য তৎকালীন গণভবনে বঙ্গবন্ধু রওনা হলেন। আমি গাড়ির একপাশে কালো পতাকা আর অন্য পাশে স্বাধীন বাংলার পতাকা বেঁধে দিই।
তিনি আরও বলেন, ২৩ মার্চ জয় বাংলা বাহিনীসহ সমস্ত বাহিনীগুলোকে পরিদর্শন করলেন বঙ্গবন্ধু। তারপর যখন তিনি মঞ্চে দাঁড়ালেন তখন আমি নীলডাউন হয়ে পতাকাটা উনার হাতে মেলে ধরলাম। ওখানে তিনি কোনো মন্তব্য করলেন না। জয় বাংলা বাহিনীর প্রশংসা ও আশীর্বাদ করে তিনি বক্তৃতা দিলেন। তারপর বললেন, সন্ধ্যার সময় তুমি আমার বাসায় আসো। সন্ধ্যায় আমি বাসায় গেলাম। বঙ্গবন্ধু তখন একটা বাক্যই বললেন, ‘রব, ইট ইজ টু আরলি।’ উনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, তোমরা একটু অ্যাডভান্স চলে যাচ্ছ।
ছাত্ররা তো অ্যাডভান্স যাবেই। তারা জাতিকে পথ দেখাবে, সামনের দিকে নিয়ে যাবে। আমার বাবার পক্ষে তখন যেটা করা সম্ভব ছিল না, আমার পক্ষে তা সম্ভব ছিল। কারণ আমার তো কোনো পিছুটান ছিল না। ছাত্র-যুবকদের তো কোনো পিছুটান থাকে না। তারা দুর্জয়-দুর্বার। সে সময় বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের চাপে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, সংশয়ে ছিলেন, আমরা (ছাত্র-যুব সমাজ) তাকে সেই সংশয় থেকে উদ্ধার করেছিলাম।
আপনার মতামত লিখুন :