শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ২৩ মার্চ, ২০১৮, ১২:৩৪ দুপুর
আপডেট : ২৩ মার্চ, ২০১৮, ১২:৩৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ব্যাংক খাতে সুদ ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা

আনোয়ার হোসেন: ব্যাংকিং খাতে সুদ ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা বিরাজ করছে। একেক ব্যাংক একেক রকমের সুদ নির্ধারণ করছে; যেখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বিশ্বব্যাপী সুদের হার নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ধরণের পদ্ধতি রয়েছে; যা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরণের কোনো পদ্ধতি নেই। এতে ব্যাংকগুলো ইচ্ছেমতো সুদ বাড়াচ্ছে এবং কমাচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রাহক।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে‘বেনিফিটস অ্যান্ড প্রটেনশিয়ালস অব ইন্টারেস্ট রেট হেইজিং : বাংলাদেশ পারেসপেক্টিভ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, সুদহার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংককে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করতে হবে। সুদসীমা নিয়ন্ত্রণে আমাদের তেমন কোনো রেগুলেটর গাইডলাইন নাই। এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ঠ গাইডলাইন হলে সুদসীমা নিয়ন্ত্রণে আসবে। সুদসীমা নির্ধারণে একটি স্বাধীন সংগঠন গঠনের আহবান জানান তারা।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা এবং সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, বর্তমানে ব্যাংকিং খাত বেশকিছু ঝুঁকি মোকাবেলা করছে। এসব ঝুঁকি ব্যবস্থাপা ব্যাংকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, সুদসীমা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আমাদের ব্যাংকিং খাতের অবকাঠামো ঠিক করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যেই আমরা উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছি।

কর্মশালায় ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা ঝুঁকির বিপরীতে প্রটোকল নিচ্ছি না। ঝুঁকি থেকে বাচঁতে আমরা কিছু করছি না। আমাদের জাতীয় চরিত্রের সমস্যার কারণেই আমরা কিছু করছি না। তিনি বলেন, বানের জলের মতো আমাদের কর্পোরেটরা (ব্যবসায়ীরা) বিদেশী ঋণ ব্যবহার করছে। এটা কমাতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী বলেন, সুদসীমা নিয়ন্ত্রণের আগে আমাদের খেলাপি ঋণ কমাতে হবে। ঋণের পুরো টাকাই যেখানে ফেরত আসে না সেখানে সুদসীমা পরের বিষয়। তিনি বলেন, সুদসীমা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এর চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা কী তা নিয়ে ভাবতে হবে।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমেদ চৌধূরী বলেন, ব্যাংকগুলোতে এখন প্রচুর পরিমাণে এলসি খোলা হচ্ছে। ব্যাপকহারে আমদানি বাড়ছে। ফলে বাড়ছে ডলারের চাহিদা। ব্যাংকগুলোতে দেখা দিয়েছে তারল্য সংকট। তাই অ-উৎপাদনশীল খাতে আমদানি বন্ধ করতে হবে।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের ডিরেক্টর জেনারেল শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীবের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এতে বলা হয়েছে, সুদ সংক্রান্ত ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে কিছু পণ্য প্রচলন করতে হবে। বাজারভিক্তিক সুদহার থাকা প্রয়োজন বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে পণ্য প্রচলনের জন্য যে পূর্বশর্ত দরকার তা এখন বাংলাদেশে নেই। যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন। এ প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সুদহার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশেষ কিছু পণ্যে প্রচলনের অনুমতি দিতে হবে।

শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীব বলেন, ব্যাংকিং খাতের সুদ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রণমূলক কিছু পণ্যের ব্যবহারের বিষয়টি ভাববার সময় এসেছে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণের সুদ ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। এজন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি ব্যাংকে সুদ ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য কিছু পণ্য ব্যবহারের অনুমোদন দিতে হবে। তবে দেশে সার্বিকভাবে বাংলাদেশী মুদ্রায় এ ধরণের পণ্য প্রচলন করার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে সুদ ঝুঁকি মোকাবেলায় পণ্য প্রচলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

এছাড়া কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী হোসেন প্রধানিয়া, ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক মহিউদ্দিন আহমেদ, বিআইবিএমের ফ্যাকাল্টি মেম্বার সৈয়দ মুহাম্মদ বারিকুল্লাহ , পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমেদ চৌধূরী প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়