হামিম আহসান : ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত অ্যাকশনধর্মী ছবির অভিনেতা স্টিভেন সিগ্যাল। ‘ট্রু জাস্টিস’ ছবির এই মার্কিন অভিনেতার বিরুদ্ধে দুই নারী যৌন হয়রানির আভিযোগ এনেছেন। এদিকে, সিগ্যালের নামে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ বিভাগে আইনজীবী লিসা ব্লুম একটি মামলাও করেছেন।
স্টিভেন সিগ্যালের নামে প্রথম যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে এ বছরের জানুয়ারিতে। রেজিনা সাইমনস ও ফেভায়োলা ডেডিস ‘র্যাপ’ নামের একটি সাময়িকীতে প্রথম সিগ্যালের যৌন নিপীড়নের ঘটনা প্রকাশ করেন। সম্প্রতি আইনজীবী লিসাসহ একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগী দুই নারী।
সেখানে রেজিনা বলেন, সিগ্যালের সঙ্গে যখন আমার পরিচয় হয়, তখন আমি সবে কৈশোর পেরিয়েছি। এটি ১৯৯৪ সালের ঘটনা। তার “অন ডেডলি গ্রাউন্ড” ছবির জন্য চুক্তিবদ্ধ হই। সিগ্যাল একদিন আমাকে তার বাড়ির পার্টিতে দাওয়াত করেন। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই কোনো পার্টি নেই। বাড়ি সম্পূর্ণ ফাঁকা।
এই অভিযোগকারী আরও বলেন, বাড়ির একটা ঘরে আমাকে নিয়ে যায় সিগ্যাল। মনে হচ্ছিল সেটা কারও শোয়ার ঘর। সিগ্যাল আমাকে রুমে ঢুকিয়ে দরজা আটকে দেয়। আর আমাকে চুমু খেতে খেতে আমার গায়ের পোশাক খুলতে থাকে।
রেজিনা বলেন, সিগ্যাল বয়স ও উচ্চতায় তার প্রায় দ্বিগুণ। সিগ্যালের এমন আচরণে ওই সময় আমি স্তব্ধ হয়ে যাই।
তাকে চুপ থাকার জন্য অর্থ দেওয়ার প্রস্তাবও দেন সিগ্যাল।
তিনি বলেন, আমি একেবারেই সক্রিয় ছিলাম না। মনে হচ্ছিল যেন অসাড় হয়ে গেছি।
আরেক অভিযোগকারী ফেভায়োলা ডেডিসের অভিজ্ঞতাও কম ভয়ংকর নয়। ২০০২ সালে সিগ্যাল একটি ছবির অডিশন দিতে গিয়েছিলেন ফেভায়োলা ডেডিস। একটি হোটেলে ব্যক্তিগত অডিশনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে স্টিভেন সিগ্যাল ও তার দেহরক্ষী ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
অডিশনে ডেডিসকে বিকিনি পরে হাঁটতে বলা হয়। ডেডিস এতে অস্বীকৃতি জানালে কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে সিগ্যাল তার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত বুলাতে থাকেন। ডেডিস সে সময় কাঁদতে কাঁদতে হোটেল ঘর থেকে বেরিয়ে যান। এরপর কয়েক বছর তিনি ট্রমায় ছিলেন। জঘন্য এ অভিজ্ঞতার কথা কিছুতেই মন থেকে মুছে ফেলতে পারছিলেন না।
যৌন হেনস্তার পর এত বছর তারা নিশ্চুপ ছিলেন। কারণ ক্ষমতাধর এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কোনো সাহস পাননি।
‘টাইমস আপ’ আন্দোলনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা বলেন, যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে তারকাদের সংহতিমূলক এই পদক্ষেপ তাদের সামনে আসতে সাহস জুগিয়েছে। অভিযোগকারীদের চাওয়া সিগ্যাল তার ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করুক।
এদিকে ৫৬ বছর বয়সী এ অভিনেতা ও প্রযোজক নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন।
তিনি বলেন, দুই নারী মিথ্যা বলছেন। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বলতে কেউ নিশ্চয়ই তাদের অর্থ দিয়েছে। এ জন্য তারা আমার বিরুদ্ধে এমন ভিত্তি-প্রমাণহীন অভিযোগ করছেন।
তিনি আরও বলেন, শুধু আমাকে নয় পৃথিবীজুড়ে এমন আরও অনেক নির্দোষ মানুষের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আনা হচ্ছে। এর ৪০ শতাংশই মিথ্যা।
সূত্র : প্রথম আলো
আপনার মতামত লিখুন :