শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ২১ মার্চ, ২০১৮, ১০:১৪ দুপুর
আপডেট : ২১ মার্চ, ২০১৮, ১০:১৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বীমা করা ছিল ১০ কোটি ডলারের

ডেস্ক রিপোর্ট : উড়োজাহাজ, যাত্রীদের জান-মাল ও কেবিন ক্রুদের ব্যক্তিগত দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণের জন্য তিন ধরনের বীমাই করেছিল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। এই বীমার মোট অঙ্ক ১০ কোটি ডলার।

সেনা কল্যাণ ইনস্যুরেন্স কম্পানিতে এই বীমা করা হয়। দুর্ঘটনার পরপরই বীমা দাবি করে পরিশোধের আবেদন জানায় ইউএস-বাংলা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেনা কল্যাণ ইনস্যুরেন্স কম্পানি তাদের ‘আন্ডাররাইটার’ এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে লস অ্যাডজাস্টারদের অনুরোধ করে সমীক্ষা চালিয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। বর্তমানে সিঙ্গাপুর ও লন্ডনভিত্তিক দুটি আন্তর্জাতিক লস অ্যাডজাস্টার প্রতিষ্ঠান এই সমীক্ষার কাজ করছে। সমীক্ষা প্রতিবেদন হাতে পেলেই বীমা দাবি পরিশোধ করবে সেনা কল্যাণ ইনস্যুরেন্স কম্পানি লিমিটেড।

আগামী সপ্তাহের মধ্যে উড়োজাহাজের ক্ষয়ক্ষতির সমীক্ষা প্রতিবেদন হাতে পাবেন বলে আশা করছেন সেনা কল্যাণ ইনস্যুরেন্স কম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শফিক শামীম (অব.)। তবে যাত্রীদের জান-মালের ক্ষয়ক্ষতিসংক্রান্ত সমীক্ষা প্রতিবেদন পেতে আরো কিছুটা সময় লাগবে বলে জানান তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার শফিক শামীম বলেন, ‘ইউএস-বাংলা মোট ১০ কোটি ডলারের বীমা করেছিল। উড়োজাহাজ, যাত্রীদের জান-মাল ও কেবিন ক্রুদের ব্যক্তিগত ক্ষয়ক্ষতি—এই তিন ধরনের বীমাই করা হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী আমরা এই বীমার ৫০ শতাংশ সাধারণ বীমা করপোরেশনের কাছে পুনর্বীমা করেছিলাম। বাকি প্রায় ৫০ শতাংশ পুনর্বীমা করা হয়েছে আন্তর্জাতিক কয়েকটি লস অ্যাডজাস্টার প্রতিষ্ঠানের কাছে, যাতে সম্পূর্ণ ক্ষতিটা কাভার করা যায়। ’

বীমা দাবি পরিশোধের জন্য এরই মধ্যে সিঙ্গাপুর ও লন্ডনভিত্তিক লস অ্যাডজাস্টার প্রতিষ্ঠান দুটি দুর্ঘটনাস্থল ও হতাহত যাত্রীদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সমীক্ষা শুরু করেছে উল্লেখ করে শফিক শামীম আরো বলেন, ‘উড়োজাহাজের ক্ষয়ক্ষতির সমীক্ষা প্রতিবেদন আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে পাব। যাত্রীদের জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি এবং কেবিন ক্রুদের ক্ষয়ক্ষতির সমীক্ষা প্রতিবেদন হাতে পেতে কিছুটা সময় লাগবে। সমীক্ষা প্রতিবেদন পেলেই দাবি করা অর্থ পরিশোধ করা হবে। ’ সমীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যাত্রীদের ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নির্ধারণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

তবে ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলা হচ্ছে হতাহতদের পরিবার থেকে। একই পরিবারের একাধিক সদস্যের হতাহতের ক্ষেত্রে একই হারে ক্ষতিপূরণ পাবে কি না, নেপালসহ অন্যান্য দেশের যেসব যাত্রী এই উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারাও একই হারে ক্ষতিপূরণ পাবে কি না, উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের কারণ এবং এ বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে কি না এমন অনেক প্রশ্ন করছে তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সদস্য গোকুল চাঁদ দাস বলেন, ‘দুর্ঘটনায় কারো দোষ থাকুক বা না থাকুক, যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ অবশ্যই দিতে হবে। কারণ তারা যাত্রী হিসেবে ভ্রমণ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছে। তবে আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণ একরকম হয় না। তা ছাড়া বীমার আওতায় ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে বয়সও বড় একটি বিষয়। মালামালের পরিমাণও একেকজনের একেক রকম ছিল। এ কারণে কোন যাত্রীর পরিবার কত টাকা ক্ষতিপূরণ পাবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। সব কিছু নির্ভর করছে সেনা কল্যাণ ইনস্যুরেন্সের সঙ্গে ইউএস-বাংলার চুক্তির ওপর। ’

গত ১২ মার্চ কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে ৭১ আরোহীর মধ্যে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন ছিল বাংলাদেশি। নিহত ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ গত সোমবার দেশে আনা হয়েছে। আহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে সাতজনকে এরই মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুজনকে নেপাল থেকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য। আরেকজনকে চিকিৎসার জন্য ভারতের দিল্লিতে নেওয়া হয়েছে।

দুর্ঘটনার পর থেকে বীমার আওতায় হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।

ইউএস-বাংলা গ্রুপের ডিজিএম (মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) মো. কামরুল ইসলাম গতকাল বলেন, ‘বীমা দাবির অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা পাবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইনস্যুরেন্স কম্পানি কাজ করছে। আমাদের তরফ থেকে চাপ আছে যাতে তাড়াতাড়ি বীমা দাবি প্রদান করা হয়। অর্থের পরিমাণ কত হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সার্ভে টিমের তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হলে জানা যাবে। আমরা ঘটনার প্রথম দিনই সেনা কল্যাণ ইনস্যুরেন্স কম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং দ্বিতীয় দিনই তারা কাজ শুরু করেছে। ’

সাধারণ বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্রই আমরা সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় যোগাযোগ করেছি এবং প্রতিদিনই যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সার্ভে যত দ্রুত সম্ভব শেষ করে নিহতদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। ’

আইডিআরএ চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘সমীক্ষা প্রতিবেদন পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ’ এ সময় তিনি জানান, বীমা করা ১০ কোটি ডলারের মধ্যে উড়োজাহাজের জন্য কাভারেজ ৭০ লাখ ডলার। বাকিটা যাত্রীদের জান-মাল এবং পাইলট ও কেবিন ক্রুদের ব্যক্তিগত ক্ষয়ক্ষতির কাভারেজের জন্য। ইউএস-বাংলার ক্ষেত্রে পাইলটের দুই লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং যাত্রীদের দুই লাখ ডলারের বীমা সুবিধা রয়েছে বলেও জানান তিনি। সূত্র : কালের কণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়