আবু আহমদ আবদুল্লাহ : স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ২০২৪ সালে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক উত্তরণ ঘটবে।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের প্রোফাইলে বলা আছে, উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা এই মার্চেই অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য আয়, মানব সম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক তিন শর্ত পূরণ করতে হয়, যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পূরণ হয়েছে।
উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠলে নানা দরকষাকষিতে বাংলাদশের অবস্থান মজবুত হবে এবং বাণিজ্যিক নানা সুবিধা হারাতে হবে।উন্নয়নশীল দেশ হলে তো কোন বাড়তি সুবিধা নাই, কোন সুবিধা পাওয়ার দরকার-ই-বা কি ?
স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে যে সকল সুবিধা পাওয়া যায়, তার সাথে কোন সম্মান জড়িত থাকে না। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে করুণা পাওয়া যায়, কিংবা একটি অনুগ্রহের ব্যাপার থাকে। একটা দেশ যদি তার অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্ত হয়, তবে দাতা গোষ্ঠির পক্ষ থেকে কোন প্রকার সুবিধা না পেলেও কোন সমস্যা নেই।
অর্থনৈতিক ভিত্তি যদি শক্ত হয়, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো যদি কাজ করে, আইন ব্যবস্থা যদি কাজ করে, তাহলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কোন দরকার হয় না । তার বাইরে গিয়েই অনেক দেশ উন্নতি করতে পারে। অনেক দেশই উন্নতি করছে। এখন চিন্তার বিষয় হলো, শক্ত ভিত্তি টা কতোটা তৈরি করা যাচ্ছে। আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থা কাজ করছে না, আমাদের আইন ব্যবস্থা কাজ করছে না। আমাদের সম্পদ লুণ্ঠন হয়ে যাচ্ছে, পাচার হয়ে যাচ্ছে।
আমাদের উন্নয়ন প্রকল্প গুলোতে কোন অগ্রগতি নেই, উন্নয়ন প্রকল্প গুলোতে দুর্নীতি বাড়ছে এবং অপচয় হচ্ছে। আমাদের দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য তো দিনে দিনে বাড়ছে, গত দশ বছরে আরো বেড়েছে। জিডিপি একটি হিসেব। এটি অত্যন্ত সংকীর্ণ একটি হিসেব। এই হিসেব দিয়ে উন্নয়নের সব মাপকাঠি বোঝা যাবে না। এ হিসেব দিয়ে শুধুমাত্র জিডিপি কতটা বাড়লো, সেটা হিসেব করা হয়।
সেটার সাথে অন্যান্য যে সকল শর্ত সেগুলো যদি একসাথে না থাকে, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো আছে কি-না, বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা ঠিক মত কাজ করে কিনা, টান্সপারেন্সি ও জবাবদিহিতা আছে কি-না, এগুলো অনেক ধরনের শর্ত পুরণ হওয়ার সাথে সম্পর্কিত হচ্ছে ভিত্তিটা শক্ত কি-না সেটা দেখা। ভিত্তি শক্ত না থাকলে শুধু জিডিপি বাড়লে একটি দেশ বেশি দূর আগাতে পারে না।
পরিচিতি : ডিজি, বিআইডিএস/মতামত গ্রহণ : মাহবুবুল ইসলাম/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :