খুশি কবির : চট্টগ্রামে জাতীয় পার্টির নেতার ছেলের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর ফলে চাপা পড়ে এক ভ্যান চালকের মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ কোন মামলা করেনি বা নেয়নি। বরং ভিক্টিমের হাতে মোটা অংকের টাকা ধরিয়ে দিয়ে অপমৃত্যু বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর উত্তরায় এক কিশোরের মৃত্যুকে মোটা অংকের জরিমানার বিনিময়ে অপমৃত্যু বলে চালিয়ে দিয়ে মিমাংসা করে দেয় পুলিশ। কিশোরের বাবা এটাকে হত্যা বলে দাবী করলেও তা আমলে না নিয়ে, পুলিশ এটাকে অপমৃত্যু বলে চালিয়ে দেয়।
এসব ঘটনা দেশে ঘটে যাচ্ছে ধারাবাহিক ভাবে। আইন তার নিজের গতিতে না চললে, আইনের শাসন না থাকলে দেশের মঙ্গল আসবে না। গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, মানুষের কাছে দায়বদ্ধতা থাকছে না। এখন একটি সংস্কৃতি হয়ে গেছে, সেটা হলো পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি। আমি যদি অর্থনৈতিকভাবে খুবই স্বচ্ছল হই, আমি যদি রাজনৈতিকভাবে খুবই ক্ষমতাবান হই, রাজনৈতিক দলের সাথে যদি আমি জড়িত থাকি, রাজনীতি কে ব্যবহার করার আমার ক্ষমতা থাকে, তাহলে আমি সবকিছুতেই পার পেয়ে যাব। এর প্রতিফল হচ্ছে, রাস্তা ঘাটে সব জায়গায় যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। ৭ই মার্চের মত একটি দিবস, আমরা যেটাকে গুরুত্বের সাথে দেখি, ৭ই মার্চের ভাষণ টা শোনার সময় যখন মেয়েদেরকে উত্ত্যক্ত করা হয়, তার মানে এরা কিন্তু ৭ই মার্চের ভাষণের মর্যাদাও বুঝে না, দিবসের মর্যাদাও বুঝে না ।
যে ব্যক্তিকে আমরা সম্মান করছি, তার মর্যাদা বুঝে না। দেশ টা কিসের জন্য স্বাধীন হয়েছিল, তার মর্যাদাও বুঝে না। সেখানে যখন পুলিশ এবং আশেপাশের লোকজন এগুলো তাকিয়ে দেখে, তার মানে পুরো ’৭১এ দেশ যে কারণে স্বাধীন হয়েছে এবং এর পুর্ববর্তী যে প্রেক্ষিতটা সৃষ্টি করে নিয়ে আসা হয়েছে, পুরো টা বৃথা ছিল। ’৯০ তে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য গণ আন্দোলন হয়েছিল, কতো ছাত্র এবং শ্রমিক জীবন বিসর্জন দিয়েছে। এ সকল বিসর্জন একেবারে বৃথা চলে যায়, যখন আমরা এ অবস্থাটা দেখি। আমি অনুরোধ করব, ক্ষমতাসীন হোক বা বিরোধীদল হোক, যে রাজনৈতিক দল গুলো, তারা জনগণের পক্ষে যেন তাদের রাজনীতি করে, সেটা যেন তারা মনে রাখে। তাদের ক্যাডারদের যেন তারা নিয়ন্ত্রণ করে ।
তাদের ক্যাডাররা কিংবা তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যেন এমন কার্যকলাপ চালাতে না পারে। পুলিশ যেন মনে রাখে, তারা জনগণের পক্ষে এবং জনগণ কে সেবা দেওয়ার জন্য একটি বাহিনী এটি। সেইভাবে তারা যেন ভুমিকা রাখে। মাননীয় আদালতের ব্যপারেও আমি একই কথাই বলব।
পরিচিতি : মানবাধিকার কর্মী/মতামত গ্রহণ : মাহবুবুল ইসলাম/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :