গত ১ মার্চ কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণে পরিপূর্ণ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির আইনজীবী অঙ্গসংগঠনের জনৈক ‘এ. কে.’ আদ্যাক্ষর সংবলিত ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের রাজধানী ভ্যান্কুভারে অনুষ্ঠিত শুনানিতে এমন রায়ই দিয়েছেন দেশটির ফেডারেল কোর্টের বিচারপতি রিচার্ড জে মোসলে। তাতে রাজনৈতিক আশ্রয় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদনকারীর আবেদনসহ তার সঙ্গী স্ত্রী ও কন্যার আবেদনদ্বয় ভিন্ন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার তদারকিতে দেওয়া হয়েছে।
অথচ এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ জুলাই কানাডায় আশ্রিত বিএনপি কর্মীর পরিচয়ধারী জনৈক মোহাম্মদ জুয়েল হোসেন গাজী স্বগতোক্তি অনুযায়ী তার চূড়ান্ত শুনানিতে ফেডারেল কোর্টের বিচারক তার আবেদনটি নাকচ করে দেন, যদিও ওই রায়ে বাংলাদেশের দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনে সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালনা করে থাকে বলে অভিমত ছিল।
তবে সর্বশেষ ‘বিএনপি সন্ত্রাসী দল কিনা’, এমন ইস্যুকে কেন্দ্র করে অর্থাৎ তদন্তকারী ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার ‘দ্য সোল ইস্যু ফর কন্সিডারেশন ইজ হোয়েদার দ্য ডিসিশন ইজ রিজোনাবল্’ এই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি সংক্রান্ত তদন্তকারী ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার ইন্টারনেটে প্রাপ্ত তথ্য অনুসন্ধান প্রক্রিয়াটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ, এমন অভিমত ব্যক্ত করেন ১৮ পৃষ্ঠা সংবলিত ওই রায়ে বিচারপতি রিচার্ড জি মোসলে। সেক্ষেত্রে সংবাদ সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি সংগঠন ও অন্যান্য সূত্র থেকে সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা একটি ধারণায় উপনীত হন, যেখানে অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টিতে বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মাঝে সংঘটিত সহিংসতার চিত্রটি দৃশ্যমান। এতে বলা হয়, তদন্ত কর্মকর্তা যে বিষয়টিতে সবিশেষ নজর দেন সেটি হচ্ছে, হরতাল। দক্ষিণ এশিয়ায় সেভাবেই তা পরিচিত।
জনমানুষ সম্পৃক্ত অসহযোগের এ কর্মসূচিটি মহাত্মা গান্ধীর ‘ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেনডেন্স মুভমেন্ট’ থেকে উদ্ভূত। তদন্ত কর্মকর্তা অনুসন্ধানে যেটা পেয়েছেন সেটা হলো- বিএনপি বা আওয়ামী লীগ যে দলই ক্ষমতার বাইরে থাকে তারা চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে হরতালকে ব্যবহার করে থাকে। একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে অর্থনৈতিক চাপ হিসেবে সরকারের বিরুদ্ধে কর্মসূচিটি ব্যবহৃত হয়। তাই হরতাল আহবান করা সন্ত্রাসবাদের আওতায় পড়ে না উল্লেখ করে বিচারক রিচার্ড জে মোসলে তার রায়ে বলেন, চলমান সংসদ ভেঙে দিতে কিংবা আগাম নির্বাচনের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে কোনো রাজনৈতিক দল আহূত ‘হরতাল’ কর্মসূচি সন্ত্রাস বিবেচিত হতে পারে না এবং সেক্ষেত্রে “এসেন্স অব হোয়াট দ্য ওয়ার্ল্ড আন্ডাস্ট্যান্ডস বাই ‘টেরোরিজম’”, অর্থাৎ বিশ্বের কাছে নির্যাস হিসেবে বিবেচিত ‘সন্ত্রাস’ বিষয়টি তার কাছে দুর্বোধ্য।
ই-মেইল : [email protected]
আপনার মতামত লিখুন :